Samakal:
2025-09-18@09:01:39 GMT

ফয়জুল ইসলামের লেখার ভূগোল 

Published: 23rd, January 2025 GMT

ফয়জুল ইসলামের লেখার ভূগোল 

ইতোমধ্যে লেখা হয়ে গেছে তাঁর বেশ কয়েকটি বই। ফিকশন, প্রবন্ধ মিলিয়ে গোটা আট। তবু সরকারি দপ্তরের নিয়মমতো দায়িত্ব শেষ হলে তিনি বেশ গোছগাছ করে বসেছেন লিখবেন বলে। অনেক প্রস্তুতি। উপন্যাস-প্রবন্ধ অনেক কাজ। অফুরন্ত অবসর এবার। এবার কেবল লেখা আর লেখা। ঘর ভর্তি রেফারেন্স বই, লেখার টেবিল, আলাদা ঘর, ল্যাপটপ। ফয়জুল ইসলাম এতকাল সরকারি চাকরির বাধ্যবাধকতায় অনেক কিছুই লিখতে পারেননি। এবার শুধুই লেখা… 
লেখকই ছিলেন তিনি আদতে। জাত লেখক। বাকি আর যা কিছু, সব কেবল জীবনের বাহানা, জীবিকার প্রয়োজন। কথাসাহিত্যিক ফয়জুল ইসলাম। লিখছেন তিনি অনেকদিন। নিভৃতে, প্রকাশ্যে। খুব পাদপ্রদীপের আলোয় ছিলেন না। খুব চিনত না পাঠক। প্রাজ্ঞ পাঠকের কাছে খোয়াজ খিজিরের সিন্দুক দিয়ে তাঁর পরিচিতি। খোয়াজ খিজিরের কূয়া খোঁজা মিথকে আরবান পাঠকের সামনে ধরে চমকে দিলেন। কথাসাহিত্যিক ফয়জুল ইসলামকে আবিষ্কার করে পাঠক নড়েচড়ে বসল। 
বইটি পুরস্কৃত হলো পাঠকের আরও তৃষ্ণা আর অনুসন্ধান উস্কে দিয়ে। পাঠক খুঁজে বের করতে থাকল তাঁকে। তিনি অবশ্য পাঠ্য হতে থাকেন। পাঠকের কাছে অনিবার্য হয়ে উঠতে থাকেন। 
শহীদুল জহির ছিলেন তাঁর আরাধ্য। কিন্তু ফয়জুল ইসলামের সাহিত্য, ফয়জুল ইসলামের গদ্য, বিষয় এবং শৈলী একদম তাঁর নিজস্ব। শহীদুল জহিরকে অগ্রভাগে রেখে ফয়জুল ইসলাম সাহিত্যপথে হেঁটেছেন। এই পথটি একান্তই তাঁর নিজের তৈরি। কোনো গোষ্ঠীবদ্ধতা নয়, কোনো তৈরি প্যাটার্ন নয়, কোনো উচ্চাকাঙ্ক্ষা নয়; নিভৃত সাধকের মতো সাধনা তাঁর। 
অভিনব তাঁর বিষয়। খোয়াজ খিজিরের মিথ থেকে দেশভাগের যন্ত্রণা। পড়তে গিয়ে কোথাও আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, কোথাও মাহমুদুল হক এসে উঁকি দিয়ে যান। উঁকি দেন বটে, ফয়জুল ইসলামকে ঢেকে দিতে পারেন না। তাঁর আপন ভঙ্গি নিজস্ব, বিষয় বৈচিত্র্য সম্পূর্ণ তাঁর মতো। কেউ তাঁকে প্রভাবিত করতে পারেনি। অনুপ্রেরণা হয়েছেন হয়তোবা। সযত্নে এড়িয়েছেন অনুকরণের পথ। 
অথচ শহীদুল জহিরের মতো ঢাকায় জন্ম, বেড়ে ওঠা তাঁর। শহীদুল জহিরকে বিজ্ঞ পাঠকের বিস্ময়কর আবিষ্কারের ঝলকানি সামনে। তাঁর জন্য বরং স্বাভাবিক ছিল সেই নির্মিত পথেই হাঁটা। কী আশ্চর্য লেখক প্রতিভায় শব্দ-বাক্য আর বিষয়ের পাথর খুঁড়ে তৈরি করেছেন নিজের পছন্দের ভুবন। তাঁর ভাষা তাঁরই ভাষা। তাঁর গদ্য তাঁরই গদ্য। তাঁর অভিনব বিষয়ও একান্ত তাঁরই সম্পদ। অনেকের উত্তরাধিকার নিয়ে তিনি হয়ে উঠেছেন নিজস্ব, একদম নিজেই একজন ফয়জুল ইসলাম। 
সরল গদ্যে লিখেছেন, কোনো উপমা, অলংকার দিয়ে বাক্য গঠনে নিজস্বতা তৈরির কসরত নেই। শৈলী নিয়ে কারিকুরি নেই। নীলক্ষেত কেন যাই, নক্ষত্রের তৃষ্ণা, বয়েজ স্কুল ব্যান্ড, জমিন। সরকারি চাকরির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ঘাড়ে নিয়ে উল্লেখযোগ্য কাজগুলো তিনি করে গেছেন। খ্যাতি কিংবা প্রচারের পেছনে দৌড়াননি, বরং খ্যাতি আর প্রচার তাঁকে খুঁজে ফিরেছে। 
বিষয়ে খ্যাতিমান লেখক প্রবণতাকে বিনয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি। মোটেই তাঁকে অভিযুক্ত করা যাবে না, তিনি সাবঅল্টার্ন নিয়ে লেখেননি। সচেতনভাবেই লেখেননি এই অভিযোগও তাঁর প্রতি অমূলক হয়ে উঠে যখন দেশভাগ থেকে মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ থেকে পঁচাত্তর–পরবর্তী বাংলাদেশ প্রচলিত ন্যারেটিভ ভেঙে নতুন ডাইমেনশনে তাঁর গল্পবিষয় হয়ে ওঠে। আখ্যানে সমাজ আর বাস্তবতার বিশ্বস্ত ছবি আঁকেন তিনি, যে ছবিতে পশ্চিমবঙ্গের বারাসাতের গ্রাম পর্যন্ত খুব চেনা হয়ে ওঠে। আমরা নিজেরাও গল্পের চরিত্র হয়ে উঠি। এটা লেখক ফয়জুল ইসলামের ফয়জুলীয় ভঙ্গি। পড়ে যখন চোখ তুলে লেখকের দিকে তাকাই তখন মনে হয়, এই গল্পে তো তিনিও আছেন; বয়েজ স্কুলের একদল ছেলেমেয়ে, নক্ষত্রের ঘোড়া দৌড়ানোর বাসনায় তিনি আছেন। প্রবলভাবে আছেন। আবার পাঠককে চোখ তুলে সে লেখা বলছে– কী কেমন লিখলাম! সময়ের স্রোতে সমান্তরাল হেঁটেছেন অথচ তাঁর লেখার ভূগোল তাঁরই একান্ত।
শক্তিমান এই লেখক যা লিখেছেন তা ছিল প্রস্তুতি পর্ব, যার সবটুকুই বাংলা সাহিত্যের সম্পদ হয়ে উঠেছে। যখন পুরোদস্তুর প্রস্তুতি নিয়ে এলেন শুধু লিখবেন বলে তখন নির্দয় প্রকৃতির এ কী নির্দয় আচরণ! বড়ই বঞ্চিত হলো বাংলা সাহিত্য। বর্তমান কাল তো বটেই, ভাবি কালও। v
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফয়জ ল ইসল ম র

এছাড়াও পড়ুন:

বিনা মূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের সুযোগ, সারা দেশে ৮টি কেন্দ্রে

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ প্রশিক্ষণের মেয়াদ দুই মাস। প্রশিক্ষণটি আগামী ১২ অক্টোবর শুরু হবে, চলবে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রশিক্ষণ শেষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সরকারি সনদ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীদের ৯ অক্টোবরের মধ্যে ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে আবেদন করতে হবে।

প্রশিক্ষণের বিষয়

১. বেসিক কম্পিউটার,

২. অফিস অ্যাপ্লিকেশন ও ইউনিকোড বাংলা,

৩. ইন্টারনেট,

৪. গ্রাফিক ডিজাইন,

৫. ফ্রিল্যান্সিং,

৬. মার্কেটপ্লেস ও কনসালটিং।

আরও পড়ুনহার্ভার্ড এনভায়রনমেন্টাল ফেলোশিপ, দুই বছরে ১ লাখ ৮৫ হাজার ডলার১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫আবেদনের যোগ্যতা

১. ন্যূনতম দাখিল বা সমমানের পরীক্ষায় পাস হতে হবে,

২. হাফেজদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা হবে,

৩. উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে,

৪. প্রার্থীকে কম্পিউটার চালনায় বেসিক জ্ঞান থাকতে হবে,

৫. যাঁদের নিজস্ব কম্পিউটার আছে, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে।যে ৮টি কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে

১. ঢাকা,

২. চট্টগ্রাম,

৩. রাজশাহী,

৪. খুলনা,

৫. বরিশাল,

৬. সিলেট,

৭. দিনাজপুর,

৮. গোপালগঞ্জ।

আরও পড়ুনবিনা মূল্যে ২ লাখ টাকার প্রশিক্ষণ, নন-আইটি স্নাতক শিক্ষার্থীদের সুযোগ ৭ ঘণ্টা আগেদরকারি কাগজপত্র

১. শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদের সত্যায়িত ফটোকপি,

২. জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি,

৩. এক কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি জমা দিতে হবে,

৪. ইমামদের ক্ষেত্রে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অথবা ওয়ার্ড কমিশনারের কাছ থেকে নেওয়া ইমামতির প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে,

৫. মাদ্রাসাছাত্রদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছ থেকে ছাত্রত্ব প্রমাণের কপি জমা দিতে হবে।

নিবন্ধন ফি

মনোনীত প্রার্থীদের নিবন্ধন ফি হিসেবে ৫০০ টাকা দিতে হবে।

দেশের ৮টি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে

সম্পর্কিত নিবন্ধ