রাবিতে দুর্ঘটনায় বহিরাগত শিক্ষার্থীর মৃত্যু
Published: 24th, January 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মারা গেছেন বহিরাগত এক শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত শিমুল শিহাবের বাসা রাজশাহী নগরীর বুধপাড়া এলাকায়। তিনি রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মাথায় রক্তক্ষরণের কারণে মারা গেছেন শিমুল। তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন বা রক্তের দাগ পাওয়া যায়নি।
স্বজনদের অভিযোগ, মারধর করায় শিমুলের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দাবি করেছেন, মোটরসাইকেলে করে পালানোর সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন শিমুল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন নম্বর বিজ্ঞান ভবনের পিছনে একটি মেয়ের সঙ্গে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন শিমুল। এ সময় সেদিক দিকে প্রক্টরিয়াল বড়ির নিয়মিত টহল চলছিল। তার গাড়ি দেখে মোটরসাইকেলে করে পালাচ্ছিলেন শিমুল ও তার সঙ্গে থাকা মেয়েটি। তারা যেদিক দিয়ে পালাচ্ছিলেন, সেখানে রাস্তার কাজ চলছে। রাস্তায় লোহার রড বিছানো ছিল। এর মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনা ঘটে। শিমুলকে উদ্ধার করে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার গুরুতর অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল। পথেই মারা যান তিনি।
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, “আমরা কয়েকজন লাইব্রেরি থেকে রুমে যাওয়া সময় দেখি, আমাদের সামনে দিয়ে এক জন খুব জোরে বাইক নিয়ে যাচ্ছেন। বাইকের পেছনে এক জন মেয়েও ছিলেন। কিছু দূর যাওয়ার পর ছেলেটি রড বিছানো রাস্তায় পড়ে যান। ছেলেটি তখন অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন। এ সময় আশপাশে থাকা শিক্ষার্থীরা এসে মাথায় পানি দেন। পরে প্রক্টর সেখানে এসে মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। মেয়েটি জানান যে, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নন। পরে অ্যাম্বুলেন্স এসে ছেলেটিকে নিয়ে যায়।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, “রাত ১০টার দিয়ে আমি দুর্ঘটনার বিষয়ে জানতে পারি। আমাদের সহকারী প্রক্টর টহল দিচ্ছিলেন। তখন ছেলে-মেয়ে দুই জন তৃতীয় বিজ্ঞান ভবনের পিছনে ছিলেন। প্রক্টরের গাড়ি দেখে তারা বাইক নিয়ে পালাচ্ছিলেন৷ ওদিকে রাস্তার কাজ চলছিল। সেখানেই দুর্ঘটনা ঘটে। পরে আমাদের লোকজন তাকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে পাঠান। সেখান থেকে তাকে রামেকে নেওয়া হয়। ছেলেটির বাইক প্রক্টর দপ্তরে আছে। কিছুক্ষণ আগে জানতে পারলাম, ছেলেটি মারা গেছে।”
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাত ১১টার দিকে এক জনকে নিয়ে আসা হয়। আগেই তিনি মারা গিয়েছিলেন। তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে তিনি মারা গেছেন। শরীরে রক্তের দাগ পাওয়া যায়নি। সামান্য একটু র্যাশ টাইপ ছিল মাথার দিকে। লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
রাজশাহীর মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.
মামলা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এখনো মামলা হয়নি, তবে হতে পারে।”
ঢাকা/ফাহিম/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র ঘটন ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের কার্যক্রমে ‘অনিয়ম ও হয়রানি’ বন্ধের দাবিতে স্মারকলিপি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের কার্যক্রমে ‘অনিয়ম ও হয়রানির’ বিরুদ্ধে আট দফা দাবি উত্থাপন করে স্মারকলিপি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। বুধবার বিকেলে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) সায়মা হকের কাছে এই স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগে সংস্কার কার্যক্রম চললেও রেজিস্ট্রার ভবন এখনো পুরোনো ত্রুটিপূর্ণ প্রশাসনিক ধাঁচে পরিচালিত হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিমা, সনদ উত্তোলন, ডিজিটাল কার্যক্রম, কর্মচারীদের ব্যবহারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের হয়রানি, বিলম্ব ও দুর্নীতি অব্যাহত রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা যে আট দফা দাবি তুলে ধরেছেন, সেগুলো হলো স্বাস্থ্যবিমা–সংক্রান্ত হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং সময়মতো অর্থ দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে; মধ্যাহ্নভোজ ও বৈঠকের অজুহাতে সেবা বন্ধ না করে কার্যক্রম চালু রাখতে হবে; রেজিস্ট্রেশন ও অন্যান্য ফি পরিশোধসহ প্রশাসনিক কার্যক্রম ডিজিটাল করতে হবে; লালফিতার দৌরাত্ম৵ বন্ধ এবং অভিযোগ ব্যবস্থাপনা চালু করতে হবে; অবৈধ নিয়োগ তদন্ত করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে; ওয়েবসাইট হালনাগাদ এবং কেন্দ্রীয় অনলাইন সেবা পোর্টাল চালু করতে হবে; কর্মচারীদের আচরণ উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে; সনদ ও মার্কশিট উত্তোলনের প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে এবং অতিরিক্ত ফি বাতিল করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষে স্মারকলিপি দেন মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ, আবদুর রহমান আল-ফাহাদ, আশিক খান, রিয়াদুল ইসলাম, শামসুদ্দোহা শাকিল, শাহেদ ইমনসহ ১০ জন। এ সময় সহ–উপাচার্য সায়মা হক শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো শোনেন এবং দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।