গত ৩০ ডিসেম্বর শুরু হওয়া বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ১১তম আসরের উত্তেজনা চট্টগ্রাম পর্ব শেষ করে আবার ঢাকায় ফিরেছে। এবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে লিগ পর্বের বাকি ১০টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে আগামী রোববার থেকে শনিবার পর্যন্ত।  

এবারের বিপিএলে সাতটি দল অংশ নিচ্ছে। লিগ পর্বের ৪২ ম্যাচের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩২টি ম্যাচ সম্পন্ন হয়েছে। চট্টগ্রাম পর্ব শেষে সব দলই অন্তত ৮টি করে ম্যাচ খেলেছে। এর মধ্যে দুর্বার রাজশাহী ও ঢাকা ক্যাপিটালস ১০টি ম্যাচ শেষ করেছে। খুলনা টাইগার্স, চিটাগং কিংস, এবং সিলেট স্ট্রাইকার্স খেলেছে ৯টি করে ম্যাচ। একমাত্র ফরচুন বরিশাল ৮টি ম্যাচ খেলেছে।  

চট্টগ্রাম পর্ব শেষে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে রয়েছে রংপুর রাইডার্স। নুরুল হাসান সোহানের নেতৃত্বাধীন দলটি ৯ ম্যাচে ৮ জয় ও ১ হারে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল ৮ ম্যাচে ৬ জয় নিয়ে ১২ পয়েন্ট অর্জন করেছে।

তৃতীয় স্থানে রয়েছে চিটাগং কিংস, যারা ৯ ম্যাচে ৫ জয় ও ৪ হারে সংগ্রহ করেছে ১০ পয়েন্ট। সমান সংখ্যক ম্যাচ খেলে ৪ জয় ও ৫ হারে ৮ পয়েন্ট নিয়ে খুলনা টাইগার্স রয়েছে চতুর্থ স্থানে।  

রাজশাহী দল ১০ ম্যাচে ৬ হার ও ৪ জয়ে সমান ৮ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে। ঢাকা ক্যাপিটালস ১০ ম্যাচে ৩ জয় ও ৭ হারে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ছয় নম্বরে। ৯ ম্যাচে মাত্র ২ জয় ও ৭ হারে ৪ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তলানিতে রয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। 

চট্টগ্রাম পর্ব শেষে রান সংগ্রাহক এবং উইকেট শিকারীর তালিকায় বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের আধিপত্য চোখে পড়ছে। বোলিংয়ের শীর্ষ পাঁচে জায়গা করে নিয়েছেন ৩ জন বাংলাদেশি, আর শীর্ষ দশে রয়েছেন ৭ জন। অন্যদিকে ব্যাটিংয়ের শীর্ষ পাঁচে ৪ জনই বাংলাদেশের। শীর্ষ দশের তালিকায় ৭ জন বাংলাদেশি খেলোয়াড়ের উপস্থিতি দেশীয় ক্রিকেটের শক্তিমত্তার প্রমাণ দিচ্ছে।

ব্যাটিংয়ের শীর্ষ ৫ এ রয়েছেন যারা:

তানজিদ হাসান তামিম (ঢাকা ক্যাপিটালস), ১০ ম্যাচ ৪২০ রান, সর্বোচ্চ ১০৮ রান।

এনামুল হক বিজয় (দুর্বার রাজশাহী), ১০ ম্যাচ ৩৭৯ রান, সর্বোচ্চ অপরাজিত ১০০ রান।

লিটন দাস (ঢাকা ক্যাপিটালস), ৯ ম্যাচ ৩৪৮ রান, সর্বোচ্চ অপরাজিত ১২৫ রান।

জাকির হাসান (সিলেট স্ট্রাইকার্স), ৯ ম্যাচ ৩৪২ রান, সর্বোচ্চ অপরাজিত ৭৫ রান।

গ্রাহাম ক্লার্ক (চিটাগং কিংস), ৮ ম্যাচ ৩৩৫ রান, সর্বোচ্চ ১০১ রান।

বোলিংয়ের শীর্ষ ৫ এ রয়েছেন যারা

তাসকিন আহমেদ (দুর্বার রাজশাহী), ১০ ম্যাচ ২২ উইকেট, সেরা বোলিং ৭/১৯।

আকিফ জাভেদ (রংপুর রাইডার্স), ৭ ম্যাচ ১৫ উইকেট, সেরা বোলিং ৪/৩২।

আবু হায়দার রনি (খুলনা টাইগার্স), ৮ ম্যাচ ১৫ উইকেট, সেরা বোলিং ৪/৪৪।

খুশদিল শাহ (রংপুর রাইডার্স), ৯ ম্যাচ ১৪ উইকেট, সেরা বোলিং ৩/১৮।

আলিস আল ইসলাম (চিটাগাং কিংস), ৮ ম্যাচ ১২ উইকেট, সেরা বোলিং ৩/১৭।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল ক য প ট লস ১০ ম য চ উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা

রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।

এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।

রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।

এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।

সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।

এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।

রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।

আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ