আ.লীগ পাচারকৃত টাকা দিয়ে গুজব সেল খুলেছে: সারজিস
Published: 25th, January 2025 GMT
পাচারকৃত টাকা দিয়ে আওয়ামী লীগ ‘গুজব সেল’ খুলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
সারজিস আলম বলেন, ‘‘ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসররা গুজব খুটির উপর দাঁড়িয়ে মানুষের মাঝে বিভ্রান্ত ও বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে। তারা পাচারকৃত টাকা দিয়ে বিভিন্ন গুজব সেল থেকে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। দেশের মানুষ বিবেকবান হওয়ায় এই গুজব শুধু বিনোদনের খোরাক জোগায়।’’
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে পঞ্চগড় মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ মাঠে মাসব্যাপী তারুণ্য উৎসবের স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইয়ুথ সামিট প্রোগ্রাম শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
সারজিস বলেন, ‘‘এ দেশের মানুষ তাদের পাত্তা দেয় না। আমরা আমাদের জায়গা থেকে মানুষের স্বপ্ন ও স্প্রিড সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা মনে করি, এই গুজবগুলো পাত্তা দিলে, আমাদের শুধু সময় নষ্ট ছাড়া কিছুই হবে না।’’
স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইয়ুথ সামিট প্রোগ্রাম অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক সাবেত আলী, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সী, সপ্ন পূরণ অর্গানাইজেশনের মখলেছার রহমান মুন্না বক্তব্য রাখেন। এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়ে বেলুন উড়িয়ে স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইয়ুথ সামিট প্রোগ্রামের উদ্বোধন করেন সারজিস।
প্রোগ্রামে সারজিস আলম বলেন, ‘‘নতুন বাংলাদেশ গড়ার গণঅভ্যুত্থানের সামনের সারিতে ছিল মেয়েরা। আগামীর বাংলাদেশ গড়ার সামনের সারিতেও থাকবে মেয়েরা এবং মেয়ে-ছেলে যাই বলি না কেন, দিন শেষে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, নিজের জায়গা থেকে নিজের যা কাজ, তা করা। তাই আগামীর বাংলাদেশ গড়তে সকলের পাশাপাশি তরুণদের নিয়ে কাজ করতে হবে।’’
এর আগে সকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম পঞ্চগড় রেলস্টেশনের সৌন্দর্য বর্ধনের কাজের উদ্বোধন করেন।
সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম এই সমন্বয়ক বলেন, ‘‘নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আলাদা সরকারের প্রয়োজন নেই। ড.
তিনি আরো বলেন, ‘‘অন্তর্বর্তী সরকার এখন পর্যন্ত তাদের জায়গা থেকে যে দায়িত্বশীল আচরণ করে আসছে। প্রত্যেকটি জাতীয় সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সকল রাজনৈতিক দলের মতামত নেওয়া হচ্ছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের স্বার্থকে সামনে রেখে সবসময় জাতীয় ঐক্যের চিন্তা করেন। আমরা মনে করি, তার হাত ধরেই নতুন করে গণতন্ত্রের দ্বার উন্মোচন হবে। যেটি হতে পারে একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের ভিত্তিতে, স্বচ্ছ নির্বাচন আমরা তার হাত ধরেই দেখতে পাবো।’’
এক এগারোর প্রশ্নে সারজিস বলেন, ‘‘এক এগারো কোনো স্বয়ংক্রিয় ঘটনা নয়। বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে একটা গোষ্ঠী সুযোগ নিয়ে একসময় এটা ঘটাতে বাধ্য করে। আমরা মনে করি, খুব স্বাভাবিকভাবেই রাজনীতির মাঠে পক্ষে-বিপক্ষে কথা থাকবে যেকোনো বিষয়ে। এটাই সৌন্দর্য। অন্তর্বর্তী সরকার এবং বর্তমান রাজনীতিতে যে ব্যক্তিরা রয়েছেন, তাদের মতের মধ্যে দ্বিমত থাকবে, বৈচিত্র্য থাকবে, আবারো যৌক্তিক বিষয়ে তারা ঐক্যবদ্ধ হবেন- এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা। কিন্তু আমরা যেন নতুন করে ফ্যাসিস্টদের সুযোগ না দেই। তারা তো চাইবে এই ঐক্যের ফাটল ধরাতে। আমরা বিভাজনে লিপ্ত হবো, তারা এই সুযোগ নিয়ে স্বার্থ হাসিল করবে।’’
এখানে জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার ছাড়াও পঞ্চগড় জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট আদম সুফি, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক মেয়র তৌহিদুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামির নেতা নাজিম উদ্দিন, পঞ্চগড়ের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নাঈম/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতার সমর্থকদের
চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ায় তাঁর বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকেরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী শহীদ মিনার এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান দেন। এ ছাড়া মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করার খবর পাওয়া গেছে। রাত সাড়ে আটটার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করে মিছিল করছিলেন বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা।
এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের নাম ঘোষণা করা হয়। বাদ পড়েন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী।
এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আসলাম চৌধুরীর কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে দেন। এ সময় তাঁরা ‘দুর্দিনের আসলাম ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’ ‘আসলাম ভাইয়ের ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ এমন স্লোগান দেওয়া হয়।
বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতা-কর্মীরা বলছেন, আসলাম চৌধুরী দলের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ করেছেন। তিনি দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের রোষানলে পড়ে কারাবন্দী হন। দীর্ঘ সময় তিনি জেল-জুলুম অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছেন। অথচ এখন সুসময়ে দল তাঁকে বঞ্চিত করছে। তাঁরা দলের এ সিদ্ধান্ত মানেন না। তাই প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছেন তাঁরা।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মো. মোরসালীন প্রথম আলোকে বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থী ঘোষণার পর বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। তাঁরা যে যাঁর জায়গা থেকে মহাসড়কে উঠে প্রতিবাদ শুরু করেন। তাঁরা অন্তত সীতাকুণ্ডের ৩০টি স্থানে মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
ঘোষিত প্রার্থী কাজী মুহাম্মদ সালাউদ্দিন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব কাজী মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের ছোট ভাই। একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম তাঁকে যোগ্য মনে করেছেন বিধায় তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করতে চান। এর আগে ২০১৪ সালে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন।
ফৌজদারহাট পুলিশ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কের মাথা, ফৌজদারহাট, জলিল গেইট, ভাটিয়ারী, মাদামবিবিরহাট, কদমরসুল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ রয়েছে। ফলে উভয় দিকে যান চলাচল বন্ধ। পুলিশ বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের সরাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।