শ্রেণিকক্ষ সংকটসহ বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদে গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অফিস ও ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের দুটি ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। অবশ্য শিক্ষকদের আশ্বাসে দুপুর ২টার পরে তালা খুলে দেন শিক্ষার্থীরা।

ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, তাদের বিভাগের জন্য বরাদ্দ দেওয়া ভবনে চারটি বর্ষের পাঠদান চললেও শ্রেণিকক্ষ রয়েছে মাত্র তিনটি। শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে এতদিন কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ১১৯ নম্বর কক্ষে ক্লাস নেওয়া হতো; কিন্তু সম্প্রতি সেটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অজ্ঞাত কারণে। ফলে পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষের অভাবে স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। শ্রেণিকক্ষ ফাঁকা না থাকার কারণে ক্লাস না করে বসে থাকতে হয় শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য অনুষদের ডিন বরাবর লিখিত দাবি জানিয়েছেন তারা। তাদের দাবিগুলো হলো– দ্রুত নতুন শ্রেণিকক্ষ বরাদ্দ দিতে হবে, ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়ো ইনফরমেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংসহ তিন বিভাগের পরীক্ষা ভিন্ন সময়ে নিতে হবে, পর্যাপ্ত টেকনিশিয়ান, ল্যাব সরঞ্জাম ও শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সমস্যার কথা জানাতে গেলে বিভাগের প্রধান অনুষদের ডিনের কাছে পাঠান, আর ডিনের কাছে গেলে বিভাগের প্রধানের কাছে পাঠান। এভাবে ঘুরতে হয় শিক্ষার্থীদের; কিন্তু সমাধান মেলে না। দীর্ঘদিন এভাবে চলার কারণে ক্ষুদ্ধ হয়ে বুধবার সকালে দুটি ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। এরপর শিক্ষকরা সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়ায় দুপুরে তালা খুলে দেওয়া হয়েছে। 

ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড.

আব্দুল আলীম বলেন, ‘আমাদের ভবনে তিনটি শ্রেণিকক্ষ আছে, যেখানে তিনটি বর্ষের ক্লাস চলে। আরেকটি ছোট কক্ষে মাস্টার্সের ক্লাস হয়। কিন্তু এই বিভাগের মোট চারটি বর্ষ চলমান থাকায় শ্রেণিকক্ষের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।’ তাঁর ভাষ্য, এতদিন ১১৯ নম্বর কক্ষে ক্লাস হতো, সেটাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ১১৯ নম্বর কক্ষটি ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগে দিয়ে দিলে সমস্যার সমাধান হবে।

এ বিষয়ে কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জয়নাল আবেদীন জানান, শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম সংকটের বিষয়টি নিয়ে সব বিভাগের প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। সবার মতামত ও পরামর্শ নিয়ে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনে শিকারিদের হামলায় বন কর্মকর্তা আহত

সুন্দরবনে হরিণ শিকারীদের হামলায় পূর্ব বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেব আহত হয়েছেন। সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের ডিমেরচর এলাকায় হামলা করা হয়। পরবর্তীতে তিন শিকারিকে আটক করেছে বনরক্ষীরা। 

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল্লাহ জানান, হরিণ শিকারিদের আক্রমণে একজন বন কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। হামলাকারীদের তিনজনকে আটক করা হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

হরিণ শিকারের ফাঁদে আটকা পড়ল বানর

কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানে ৮ ফুট লম্বা অজগর অবমুক্ত

তিনি আরো জানান, বন বিভাগের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তারা অভিযোগ দিলে এবং আসামিদের হস্তান্তর করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আটকরা হলেন, বাগেরহাট সদর উপজেলার সুগন্ধি গ্রামের রাফি হাসান (২৬), রামপাল উপজেলার সোনাতুনিয়া গ্রামের শহিদ মল্লিক (২৮) ও একই উপজেলার ঝালবাড়ি গ্রামের আল আমিন আকুঞ্জি (২৭)।

আহত সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেব বলেন, ‘‘বন্যপ্রাণি রক্ষা ও হরিণ শিকাররোধে বনরক্ষীদের সঙ্গে নিয়ে ডিমেরচর এলাকায় বনের ভেতরে হেঁটে টহল দিচ্ছিলাম। বনের মধ্যে হরিণ ধরার জন্য পেতে রাখা একাধিক ফাঁদ দেখতে পাই। সেখানে চার থেকে পাঁচজন শিকারিকেও দেখতে পাই। আমি দৌড়ে গিয়ে একজনকে ধরে ফেললে বাকি শিকারিরা ফিরে এসে আমাকে মারধর করে ধৃত শিকারিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।’’

পরে বনরক্ষীরা ঘটনাস্থল থেকে ১৮টি হাঁটা ফাঁদ উদ্ধার করেন বলে জানান তিনি। 

আহত রানা দেবকে তাৎক্ষণিকভাবে দুবলারচরের অস্থায়ী স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। হামলার পরপরই বনরক্ষীরা অভিযান চালিয়ে তিন শিকারিকে আটক করে।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী ও শরণখোলা রেঞ্জের অন্যান্য কর্মকর্তারা রাস পূজার দায়িত্ব পালনের জন্য দুবলার চরে অবস্থান করায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

ঢাকা/শহিদুল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ