অমর একুশে বইমেলার সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশ ও র‌্যাবসহ গোয়েন্দা সংস্থার কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর এলাকায় একজন নিরাপরাধ লোকের গায়েও আমার সহকর্মীরা আঘাত করবে না। তবে আইন ভঙ্গকারী ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স।

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একুশে বইমেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

বিতর্কিত ও উস্কানিমূলক বই এবার মেলায় আসার সুযোগ নেই জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, মেলায় যাতে বিতর্কিত বই না আসে; সেজন্য বাংলা একাডেমির সমন্বয় সভায় জানানো হয়েছে। এবার নতুন বই প্রকাশের আগে বাংলা একাডেমি সেই বই পুঙ্খানুপুঙ্খানভাবে দেখে তারপর স্টলে দিবে।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) নজরুল বলেন, আগামী অমর একুশে বইমেলায় কোনো বই প্রকাশের আগে বইয়ের পাণ্ডুলিপি বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে। কর্তৃপক্ষ সেটি দেখে সিদ্ধান্ত নিবেন বই প্রকাশের অনুমতি দিবেন কী না। 

তিনি বলেন, বইমেলা এলাকায় রাত দিন ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। এ সময় হকার্সদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মেলায় কোনো জিনিসের দাম অতিরিক্ত নেওয়া হলে পুলিশ ব্যবস্থা নিবেন। এছাড়া মেলা প্রাঙ্গণে কোনো ময়লা আবর্জনা রাখবেন না। পরিস্কার পরিচ্ছন্নের বিষয়ে সবাইকে অনুরোধ করি। 

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো.

সারওয়ার বলেন, টিএসসি এলাকায় এবার সব সময় ট্রাফিক ব্যবস্থা বন্ধ থাকবে। এছাড়া এই এলাকায় রিকশা ও ভ্যান পার্কিং করতে দেওয়া হবে না। এবার গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য পাঁচটি নির্ধারিত স্থান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, মহসিন হলের মাঠ, কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণ, ফুলরা রোডের এক লেন ও জিমনেসিয়াম মাঠে দর্শনার্থীরা গাড়ি পার্কিং করতে পারবেন। এছাড়া শাহবাগ ক্রসিং থেকে টিএসসি অভিমুখী গাড়িগুলো মেলায় আগত অতিথিদের বইমেলার টিএসসি প্রবেশ গেটের সামনে নামাবে। পরে গাড়ি রাজু ভাস্কর্য ইউটার্ন বা লেফটার্ন করে বইমেলা সংশ্লিষ্ট পার্কিংয়ে অবস্থান করবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড এমপ ব যবস থ এল ক য বইম ল ড এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে

জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।

বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।

এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ