পুলিশের বাড়িতে ডাকাতি, রাত নামলেই আতঙ্ক
Published: 1st, February 2025 GMT
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সম্প্রতি একটি বাড়ির কেয়ারটেকারকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ডাকাতির জের না কাটতেই এক পুলিশ সদস্যের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের ফাজিলপুর গ্রামে আসাদুল ইসলাম নামের এক পুলিশ সদস্যের বাড়িতে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার দিকে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় তাঁর মা ও চার শিশু-কিশোরকে ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। পরে সবাইকে রশি দিয়ে বেঁধে পুরো বাড়িতে তাণ্ডব চালায় ডাকাত দল। আসাদুল গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে কর্মরত আছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি পাশের গ্রাম আলেখারকান্দায় ফাঁকা বাড়িতে এক কেয়ারটেকারকে নৃশংসভাবে হত্যার রেশ না কাটতেই পুলিশ সদস্যের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটল। পুরো উপজেলায় চুরি-ডাকাতির ঘটনা বাড়ছে। পুলিশের বাড়িতে ডাকাতির আগে ওই রাতেই আশপাশের কয়েকজনের বাড়িতে গ্রিল কেটে বসতঘরে ঢোকার চেষ্টা চালায় ডাকাতরা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা প্রকাশ করে তারা বলেন, ডাকাত আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের।
সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, রাত তখন ৩টা ২০ মিনিট। হঠাৎ অস্ত্র নিয়ে কয়েকজন মুখোশধারী বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করছে। এ সময় একজন দেয়াল বেয়ে উঠে সিসিটিভির তার ছিঁড়ে ফেলে। অন্য আরেকটি ফুটেজে দেখা যায়, বাড়ির মূল ফটক দিয়ে অস্ত্র নিয়ে ঢুকছে তিনজন মুখোশধারী। কিছুক্ষণ পর একজন লোহার পাইপ হাতে নিয়ে দরজার সামনে থাকা সিসিটিভিও ভেঙে ফেলে। এরপর ঘরে ঢোকে ডাকাতরা।
পরিবারের সদস্যরা জানান, ঘরের আলমারিতে রাখা নগদ সোয়া ২ লাখ টাকা ও প্রায় ১২ ভরি স্বর্ণ লুট করে পালিয়ে যায় ডাকাত দল।
আসাদুলের স্ত্রী সায়লা ইসলাম সমকালকে জানান, গত রাতে ডাকাতির ঘটনার পর তাঁর পরিবারের সদস্যরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। হঠাৎ এমন ঘটনা তারা মানতে পারছেন না। শিশু-কিশোরদের ভয় ও আতঙ্ক এখনও কাটেনি।
থানার ওসি মোকছেদুর রহমান সমকালকে জানান, এক পুলিশ সদস্যের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ কয়েকটি সিসিটিভির ফুটেজসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। পুলিশের তদন্ত চলছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প ল শ সদস য র ব ড় ত ড ক ত র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে
ফরিদপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা।গত মঙ্গলবার এনসিপির সদস্যসচিব আক্তার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ওই চিঠিতে ফরিদপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক করা হয়েছে মো. আব্দিুর রহমানকে এবং সংগঠক করা হয়েছে মো. রাকিব হোসেনকে।
এছাড়া ফরিদপুর অঞ্চলের পাঁচটি জেলা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী জেলার দু’জন করে ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফরিদপুর জেলার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে যে দু’জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের একজন হলেন সৈয়দা নীলিমা দোলা। তিনি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে এবং জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ নাসিরের ভাগনি। দোলার বাবা সৈয়দ গোলাম দস্তগীর পেশায় ব্যবসায়ী।
সৈয়দা নীলিমা ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগীত বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি কিছুদিন একটি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে চাকরি করেন। বর্তমানে ‘সিনে কার্টেল’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী।
এ বিষয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্যদের আওয়ামী রাজনীতি করা সংক্রান্ত কিছু পোস্ট আপনাদের সামনে আসতে পারে। আমি নিজে এর একটা ব্যাখ্যা রাজপথের সহযোদ্ধাদের দিয়ে রাখতে চাই। আমি ১০ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করছি। নো মেট্রো অন ডিইউ মুভমেন্ট, রামপাল বিরোধী আন্দোলন, ডিএসএ বাতিলের আন্দোলন, সুফিয়া কামাল হলকে ছাত্রলীগ মুক্ত করাসহ অন্যান্য সকল আন্দোলনে আমি পরিচিত মুখ। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমার লেখালেখিও পুরনো। ২০১২ সালে পরিবার ছাড়ার পর রাজপথই আমার আসল পরিবার। জুলাইয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্যতম মামলা তাহির জামান প্রিয় হত্যা মামলার একজন প্রত্যক্ষদর্শী আমি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরাসরি ছাত্রলীগ করে অনেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। আমি কখনও ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না, তাই আমার নাগরিক কমিটির সদস্য হতে বাধা কোথায়? এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেনে-বুঝে এবং আমি ‘লিটমাস’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ নেত্রীর মেয়ে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলার এনসিপি কমিটি গঠনে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব সোহেল রানা বলেন, ‘তার (সৈয়দা নীলিমা) পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড আওয়ামী লীগ। আমরা দেখেছি, গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তার মামা গোলাম নাসির কিভাবে আমাদের ওপর নির্বিচার গুলি ছুড়েছিল। তার মায়ের কর্মকাণ্ডও আমাদের অজানা নয়।’
সৈয়দা নীলিমা দোলার সঙ্গে আমাদের পরিচয় পর্যন্ত নেই মন্তব্য করে সোহেল রানা বলেন, ‘আসলে দায়িত্ব দেওয়ার আগে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে নেওয়া হলে ভাল হতো। যাচাই-বাছাই করা হলে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’