ছিন্নমূল শিশু-কিশোরদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিষ্ঠান সুরভি ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে। শনিবার সকালে ধানমন্ডিতে সংস্থাটির কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু।

এছাড়া সুরভির অনেক শুভানুধ্যায়ী, অতিথিবৃন্দও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সুরভি স্কুলের বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্ররাও এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।

দেশাত্মবোধক গান, নৃত্য ও কবিতা আবৃত্তিসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রাক্তন ছাত্ররা সুরভি স্কুলে তাদের বিগত দিনের মধুর সময়ের স্মৃতিচারণ করেন। এছাড়াও অতিথিরা বক্তব্য প্রদান করেন।

সুরভির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন সৈয়দা ইকবাল মন্দ বানু অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থী, অভিভাবক, অতিথি এবং সুরভির কর্মীদের আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
 
অনুষ্ঠান শেষে র‌্যাফেল ড্র ও বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

উল্লেখ্য, সুরভি একটি শিশুকল্যাণমূলক সংস্থা যা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নিবেদিত। বিশিষ্ট সমাজসেবী সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু ১৯৭৯ সালে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত ও কর্মজীবী শিশুদের শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্য নিয়ে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী

কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।

কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।

একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’

কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।

এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ