সেই ইকবালকে নিয়ে গিয়াস উদ্দিনের মিছিল, তীব্র ক্ষোভ
Published: 2nd, February 2025 GMT
দলীয় সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে বহিষ্কৃত সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি'র সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও নাসিকের সাবেক কাউন্সলর ইকবাল হোসেনকে নিয়ে মিছিল করেছে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। আর এদিকে বহিষ্কৃত ইকবাল হোসেনকে নিয়ে কর্মসূচি পালন করায় বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
জানাগেছে, আওয়ামীলীগ ঘোষিত ফেব্রুয়ারির কর্মসূচির প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ব্যানারে সাইনবোর্ড এলাকায় পাসপোর্ট অফিসের সামনে গিয়াস উদ্দিন বিক্ষোভ মিছিল করেছে। সেখানে থানা বিএনপির নেতৃবৃন্দদের পাশাপাশি ইকবাল হোসেনকেও দাঁড়াতে দেখা যায়।
কিন্তু ইকবাল হলেন বহিষ্কৃত। আর বহিষ্কৃত লোককে নিয়ে কোন কর্মসূচি বা দলীয় কর্মকাণ্ডে দলীয় কোন নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেনা। এমনকি তার সাথে কোন প্রকার যোগাযোগও রাখতে পারবেনা।
কিন্তু গিয়াস উদ্দিন দলীয় সেই সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বহিষ্কৃত ইকবালকে নিয়ে কর্মসূচি পালন করছে আর এই নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
দলীয় সূত্রমতে, গত ১৩ ডিসেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সাংবাদিক মিনহাজ আমানকে মারধর ও লাঞ্ছিত করায় ইকবালকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান রিজভী।
আসিয়ান পরিবহনের একটি বাসে চালকের সাথে কথা কাটাকাটি হয় ইকবালের। পরবর্তীতে বাসটি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকায় আসলে ইকবাল ও তার ক্যাডার বাহিনী বাস চালককে মারধর ও বাসে ভাংচুর চালায়।
এসময় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের একজন সাংবাদিক মিনহাজ আমান বাস ভাঙার প্রতিবাদ করলে তাকে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করেন ইকবালের অনুসারীরা।
এদিকে ইকবালকে প্রেরিত বহিষ্কারাদেশের চিঠিতে বলা হয়েছে, মিনহাজ আমান নামে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের একজন সাংবাদিককে প্রকাশ্যে আপনি আপনার দলবল নিয়ে শারীরিকভাবে আঘাত এবং লাঞ্ছিত করেছেন- যা সম্পূর্ণরূপে দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী ঘৃন্য অপরাধ।
এ ধরনের গুরুত্ব কর্মকাণ্ডের জন্য আপনাকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে নির্দেশক্রমে সামরিক বহিষ্কার করা হলো।
অপরদিকে ইকাবালের বহিষ্কারের খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা জানান, ৫ আগষ্টে হাসিনা সরকারের পতনের পর ইকবাল মুর্তিমান আতংকে রূপ নেয়। তার বিরুদ্ধে কেউ মূখ খুলতে সাহস পেত না। ইকবাল ও তার ভগ্নিপতি এবং স্বজনদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠে এলাকাবাসী।
বিশেষ করে নাসিক ২ নং ওয়ার্ডে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, ভূমি দস্যুতা, দখল বানিজ্য একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে ইকবাল ও তার স্বজনরা। তার এসব অপরাধ কর্মকান্ড পরিচালনা করতে গিয়ে তিনি এলাকায় বেশ কয়েকটি কিশোরগ্যাং থেকে শুরু সন্ত্রাসী বহিনী গড়ে তুলেন।
এসব নিয়ে এলাকায় একাধিক হামলার ঘটনা ঘটলেও ইকবাল ও তার লোকদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিতে কেউ কোনো সাহস পায়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ আওয়ামী লীগের শাসনামলেও ইকবাল সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজি ইয়াছিন মিয়ার ছত্রছায়ায় এসব অনৈতিক ও অবৈধ কর্মকান্ডে মেতে ছিলেন। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ও নাসিকের সাবেক মেয়র ডা : সেলিনা হায়াত আইভীর সাথে সখ্যতা রেখে পরপর দুই বার কাউন্সিল নির্বাচিত হয়। আইভীর ছত্রছায়ায় থাকার কারণে তাকে আওয়ামী লীগের রোষানলে তেমন একটা পড়তে হয়নি।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ইকব ল ও ত র স দ ধ রগঞ জ ব এনপ র এল ক য় আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার
আড়াইহাজার উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল ও তার সহযোগী ফজলুল হক ওরফে ফজুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার দাউদকান্দি ব্রিজের টোল-প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল (৩৮) আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র। অপরদিকে ফজলুল হক ওরফে ফজু (৩০) একই এলাকার আউয়ালের পুত্র।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয়সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর বিরুদ্ধে নারয়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী ও মাদক, অপহরণ, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে।
এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফজলুল হক ফজু এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, অপহরণ, ছিনতাইসহ ৪-৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে র্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল বিগত ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে।
পরবর্তীতে সে অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এক সময় সে এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পায়। তখন থেকে সবাই ফেন্সি সোহেল হিসাবে ডাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তার পুরো পরিবার মাদকের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ফজলুল হক ফজু এই শীর্ষ সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসায়ী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর একান্ত সহযোগী। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত। যারাই তাদের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে তাদেরকেই সোহেল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে।