মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরো দুই থেকে তিন মাস অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। 

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।  

মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে আসতে আরো কতদিন লাগবে, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “মূল্যস্ফীতির দিকে আমাদের মূল মনোযোগ আছে। যতটুকু সম্ভব, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যেন মূল্যস্ফীতিটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারি। এখন আমরা যে উদ্যোগ নেব, সেটার প্রভাব বাজারে দেখতে পাবেন। জুন মাসের দিকে যদি মূল্যস্ফীতি আইডল ৬-৭ শতাংশে যেতে পারি, তাহলে আমাদের জন্য বেটার হয়।”

ঢাকা/হাসনাত/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

ভ্যাট আদায়ে বাড়তি জনবল চায় এনবিআর

এক দশকের বেশি সময় ধরে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এবারও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন প্রায় অনিশ্চিত। এমন বাস্তবতায় ভ্যাট আদায় বাড়াতে অতিরিক্ত জনবল চেয়েছে সংস্থাটি। একই সঙ্গে তারা কাস্টম হাউস, কমিশনারেটসহ বিশেষায়িত দপ্তর বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। 

এনবিআরের এমন প্রস্তাবে সায় দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগ। নতুনভাবে ৩৫৯৭টি পদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এর মধ্যে ক্যাডার ৩৭৩টি এবং অন্যান্য ৩২২৪টি পদ। এসব পদ সৃষ্টির প্রস্তাব আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠকে উঠতে যাচ্ছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদের সভাপতিত্বে এই বৈঠক হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

এর আগে ২০২২ সালের শুরুতে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) ১১ হাজার ৯২১টি পদ সৃষ্টির প্রস্তাব করেছিল। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই শেষে ৬ হাজার ১৯৬টি পদ সৃষ্টির অনুমোদন দেয়। এর পর অর্থ বিভাগ অনুমোদন দিয়েছে ৩ হাজার ৫৯৭টি পদ। সচিব কমিটির অনুমোদনের পর প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন পেলে পদ সৃষ্টির প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। এর পর জনবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। 

প্রস্তাবের যৌক্তিকতায় এনবিআর ও আইআরডি জানিয়েছে, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অনুবিভাগের কাঠামো ২০০৯-১০ অর্থবছরে অনুমোদিত। বর্তমানে সারাদেশে ৬টি কাস্টম হাউস, ১২টি ভ্যাট কমিশনারেট, দুটি বন্ড কমিশনারেট, চারটি আপিল কমিশনারেট, একটি এলটিইউ (মূসক), দুটি অধিদপ্তর, একটি পরিদপ্তর, একটি শুল্ক মূল্যায়ন ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিশনারেটের মাধ্যমে পরোক্ষ কর আহরণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ কাঠামো রাজস্ব আহরণের কাজের পরিধি হিসেবে খুবই অপ্রতুল। কারণ, বিগত প্রায় দুই দশকে রাজস্ব আহরণ ৭২৮ শতাংশ বাড়লেও নিবন্ধিত মূসক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২১৫ শতাংশ, মূসক রিটার্ন দাখিলকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫৬ শতাংশ, আমদানিকৃত পণ্যের পরিমাণ ৫ গুণ, রপ্তানি পণ্যের পরিমাণ দুই গুণের বেশি, বন্ডেড প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৬৬ শতাংশ, আগমন ও বহির্গমন যাত্রীর সংখ্যা ৬ গুণ বেড়েছে। 

জানতে চাইলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য কাজী মোস্তাফিজুর রহমান সমকালকে বলেন, এনবিআরে কাজের পরিধি অনেক বাড়লেও জনবল বাড়েনি। গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে ভ্যাট দেওয়ার উপযুক্ত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়লেও সেখানে ভ্যাট আদায়ের কোনো অফিস নেই। চট্টগ্রামেও অনেক প্রতিষ্ঠান বেড়েছে; কিন্তু জনবল বাড়েনি। এক্সাইজ ও ভ্যাট অনুবিভাগের জনবল বাড়লে সারাদেশে ভ্যাট আদায়ের পরিমাণ অনেক বাড়বে। 

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, এনবিআরের পদ সৃষ্টির অনুমোদন এখন সচিব কমিটির ওপর নির্ভর করছে। সচিব কমিটি অনুমোদন পেলে অন্যান্য কাজ দ্রুত হবে। এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ বলেন, আদায় প্রক্রিয়ার জটিলতা দূর করতে পারলেই বাড়বে ভ্যাটের পরিমাণ। ভ্যাট সরাসরি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। অনলাইনে ভ্যাট আদায়ে গুরুত্ব দিতে হবে। 

বাড়ছে কাস্টম হাউস ও কমিশনারেট 

বর্তমানে কাস্টম হাউস ছয়টি, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ১২টি, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট (আপিল) কমিশনারেট চারটি এবং বিশেষায়িত অফিস রয়েছে চারটি। নতুন করে কাস্টম হাউস চারটি, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট পাঁচটি এবং বিশেষায়িত অফিস পাঁচটি বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে কার, জিপ, মাইক্রোবাস, মিনিবাস, বাসসহ বিভিন্ন ধাপের ৩ হাজার ৫৮৭টি পরিবহন কেনা হচ্ছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ