নওগাঁর মান্দা উপজেলায় বিলে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে চাচার লাঠির আঘাতে ভাতিজা নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের চকমানিক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তাঁর চাচাতো ভাইকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত ব্যক্তির নাম জামিরুল ইসলাম ওরফে জামু (৪৫)। তিনি চকমানিক গ্রামের হাসান আলী মণ্ডলের ছেলে। অভিযুক্তরা হলেন একই গ্রামের বাসিন্দা আবুল কাসেম মণ্ডল (৬৫) ও তাঁর ছেলে আবদুল মতিন (৩৩)। আবুল কাসেম জামিরুলের চাচা।

ঘটনার প্রসঙ্গে চকমানিক গ্রামের বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শী আলমগীর হোসেন জানান, আবুল কাসেম মণ্ডলের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে তাঁর ভাই হাসান আলী মণ্ডলের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। আজ সকালে স্থানীয় একটি বিলের বিবাদমান জমিতে মাছ ধরার প্রস্তুতি নেন আবুল কাসেম। এ নিয়ে জামিরুলের সঙ্গে চাচা আবুল কাসেমের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এর একপর্যায়ে জামিরুলের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন আবুল কাসেম। এতে ঘটনাস্থলেই জামিরুলের মৃত্যু হয়।

মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর রহমান বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে জামিরুলের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানার মামলার প্রস্তুতি চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ