টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গোপালপুর পঞ্চপল্লী উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিজ্ঞ বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের বাদ দিয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষকদের দিয়ে ক্লাস নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। খণ্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে পাঠদানে বিদ্যালয়ে শিক্ষার মানের অবনমন ঘটছে। এ ছাড়া টিউশন বাণিজ্যসহ ভুয়া বিল-ভাউচার দিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মিল্টন তালুকদার তাঁর কয়েকজন স্বজনকে বিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এসব খণ্ডকালীন শিক্ষক শ্রেণির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের পাঠদান করেন। তারা টিউশন বাণিজ্যের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কোচিং করান। এ বছর এসএসসি কোচিংয়ের জন্য শিক্ষার্থীপ্রতি ৬ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। গত বছরে তাদের কোচিংয়ের পরও বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি।

অভিভাবক শ্যামল বিশ্বাস বলেন, ২০২৫ সালের এসএসসির ফরম পূরণে ৪ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে। এ ছাড়া কোচিং করানোর কথা বলে নেওয়া হয়েছে ৬ হাজার টাকা। কোচিংয়ে খণ্ডকালীন ও সাবজেক্ট-বহির্ভূত বিষয়ের শিক্ষকরা ক্লাস নিচ্ছেন। তাদের পাঠদানের কোনো যোগ্যতা নেই। গত বছর এসএসসিতে ১৬৪ জনের মধ্যে ৫০ জন  ফেল করেছে। প্রধান শিক্ষকের আশীর্বাদপুষ্ট খণ্ডকালীন শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রসিদ ছাড়া টাকা আদায় করেন। তাই এখানে শিক্ষার পরিবেশ দিন দিন নষ্ট হচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টি সর্বনাশের মুখে পড়ছে।
অপর এক অভিভাবক অবণী সেন বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মিল্টন তালুকদার অবৈধভাবে তাঁর ভাই সুজন তালুকদার, জ্ঞাতি ভাই অশোক সেন ও অশোক মণ্ডলকে খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। নিয়মিত শিক্ষক বসিয়ে রেখে গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস পছন্দের অযোগ্য শিক্ষক দিয়ে করান। তাদের প্রাইভেট বাণিজ্যের সুযোগ করে দেন। তাদের কাছে প্রাইভেট না পড়লে শিক্ষার্থীদের ফেল করান। এ কারণে স্কুলটির শিক্ষার মান দিন দিন নেমে যাচ্ছে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের ক্যাশবুকের আপডেট নেই বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

গত ৩০ জানুয়ারি ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষক মিলনায়তনে ক্লাস রুটিন পাওয়া যায়নি। জিজ্ঞেস করলে সিনিয়র শিক্ষক স্বপন রায় জানান, ক্লাস রুটিন প্রধান শিক্ষকের কাছে আছে। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মিল্টন তালুকদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ক্লাস রুটিন সংশোধন করা হচ্ছে। সংশোধিত কপি কম্পিউটারের মধ্যে রয়েছে। এখন বিদ্যুৎ নেই। তাই দেখানো যাচ্ছে না। বিদ্যুৎ এলে প্রতিবেদকের ম্যাসেঞ্জারে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেন। ১০ দিন অতিবাহিত হলেও তিনি এ প্রতিবেদকের ম্যাসেঞ্জারে ক্লাস রুটিন পাঠাননি।

স্কুলের অফিস সহকারী মনি মোহন সেনের ভাষ্য, আড়াই বছর ধরে বিদ্যালয়ের ক্যাশবুক আপডেট নেই।
বিদ্যালয়ের একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক সুজন তালুকদার জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাদের যেভাবে নির্দেশনা দেন, সেভাবেই তারা দায়িত্ব পালন করছেন।
চলতি বছরের ক্লাস রুটিনে এ সমস্যা থাকবে না।
ক্লাস রুটিনে খণ্ডকালীন শিক্ষকদের প্রাধান্য দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মিল্টন তালুকদার বলেন, চলতি বছরের ক্লাস রুটিনে এ সমস্যা থাকবে না। সাবজেক্ট-বহির্ভূত শিক্ষকদের আর প্রাধান্য দেওয়া হবে না। নিয়মিত শিক্ষকরা ক্লাস করবেন। এখন থেকে এসএসসির কোচিংয়ের ক্ষেত্রেও একই নীতি অনুসরণ করা হবে। বিদ্যালয়ের ক্যাশবুক দ্রুত আপডেটের উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র র এসএসস

এছাড়াও পড়ুন:

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি প্রোগ্রাম, জেএসসি ছাড়াও ভর্তি

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন স্কুল পরিচালিত এসএসসি প্রোগ্রামের মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞান শাখায় ২০২৬-২০২৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভর্তির যোগ্যতা জেএসসি পাস হতে হবে। জেএসসি ছাড়াদের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

ভর্তির দরকারি তারিখ—

১. অনলাইনে ভর্তি এবং আবেদনের তারিখ শেষ তারিখ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৬।

২. অষ্টম শ্রেণি বা সমমানের সনদবিহীন ভর্তি-ইচ্ছুকদের ভর্তি পরীক্ষা : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৬।

৩. ওরিয়েন্টেশন ও টিউটোরিয়াল ক্লাস শুরু : ১৫ মে ২০২৬।

ভর্তির যোগ্যতা—

১. জেএসসি বা জেডিসি বা অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের পরীক্ষায় পাস বা উত্তীর্ণ হতে হবে। (ভর্তির তারিখ ০২/১১/২০২৫ থেকে ৩১/০১/২০২৬)।

২. সরাসরি অনলাইন ভর্তির জন্য: osapsnew.bou.ac.bd

ভর্তির যোগ্যতা(জেএসসি ছাড়া) —

১. যেসব শিক্ষার্থীর জেএসসি বা জেডিসি বা অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের সনদপত্র নেই তারাও ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন, এ ক্ষেত্রে বয়স হতে হবে ন্যূনতম ১৪ বছর (৩১/১২/২০২৫ তারিখে)।

২. এসব আবেদনকারীকে যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য বাউবি কর্তৃক নির্ধারিত ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

৩. এ জন্য ভর্তির প্রাথমিক আবেদন ফরম ফি বাবদ ৩০০ টাকা দিতে হবে।

৪. ভর্তি পরীক্ষার বিষয়, মানবণ্টন, তারিখ ও পরীক্ষা কেন্দ্র এবং প্রক্রিয়ার বিস্তারিত তথ্য বাউবি’র ওয়েবসাইট, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্র এবং স্টাডি সেন্টার থেকে পাওয়া যাবে। (অনলাইনে আবেদনের তারিখ ০২/১১/২০২৫ থেকে ৩১/০১/২০২৬)।

প্রয়োজনীয় কাগজ যা লাগবে—

১. দুই কপি ছবি।

২. জেএসসি বা জেডিসি বা অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের পরীক্ষায় পাস বা উত্তীর্ণের সনদ।

৩. জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদের সত্যায়িত ফটোকপি।

ভর্তি ও অন্যান্য ফি—

অনলাইন আবেদন ফি: ১০০ টাকা,

রেজিস্ট্রেশন ফি : ১০০ টাকা,

কোর্স ফি (প্রতি কোর্স ৫২৫ টাকা): ৩৬৭৫ টাকা,

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আবশ্যিক) ব্যবহারিক ফি: ১০০ টাকা,

একাডেমিক ক্যালেন্ডার ফি:৫ টাকা,

ডিজিটাল আইডি কার্ড ফি: ২০০ টাকা,

পরীক্ষা ফি (প্রতি কোর্স ৫০ টাকা) : ৩৫০ টাকা,

প্রথম বর্ষ নম্বরপত্র ফি : ৭০ টাকা,

মোট আবেদন ফি: ৪৬৯৬ টাকা।

বিজ্ঞান শাখার জন্য দুটি ব্যবহারিক কোর্সের জন্য অতিরিক্ত ২০০ টাকা জমা দিতে হবে।

দরকারি তথ্য—

১. অষ্টম শ্রেণি বা সমমান পাসের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর নাম, পিতা ও মাতার নাম এবং জন্ম তারিখ ইত্যাদি প্রদত্ত সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী একই রকম হতে হবে।

২. জেএসসি বা জেডিসি পাসের ক্ষেত্রে জেএসসি বা জেডিসি সনদ অনুযায়ী হতে হবে। ২০২০ সাল কিংবা তার পরবর্তীতে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অষ্টম শ্রেণি পাশ সনদে বা প্রমাণকে বোর্ড কর্তৃক ইস্যুকৃত রেজিস্ট্রেশন নম্বর উল্লেখ থাকতে হবে। সনদবিহীনদের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ অনুযায়ী হতে হবে।

৩. তৃতীয় লিঙ্গের শিক্ষার্থীরা কোর্স ফির শতকরা ৬০ ভাগ ছাড় পাবেন।

# বিস্তারিত তথ্যের জন্য ওয়েবসাইট

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি প্রোগ্রাম, জেএসসি ছাড়াও ভর্তি