সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষায় সুপারিশ পাওয়া ৬ হাজার ৫৩১ জনের দ্রুত যোগদানের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করা হয়েছে।

আজ সোমবার বেলা ১টার দিকে এই অবরোধ করা হয়। অবরোধের ফলে শাহবাগ মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সুপারিশপ্রাপ্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষকবৃন্দ তৃতীয় ধাপ (ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ)-এর ব্যানারে আন্দোলনকারীরা সকাল থেকে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান করছিলেন। বেলা ১টার দিকে তাঁরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি তিনটি ধাপে দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে প্রহসন চলছে।

আরও পড়ুনপ্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে ৬ হাজার ৫৩১ পদে নিয়োগের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন০৬ জানুয়ারি ২০২৫

আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৩ সালের ১৪ জুন তৃতীয় ধাপের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০২৪ সালের ২৯ মার্চ। লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয় একই বছরের ২১ এপ্রিল। ১২ জুন ভাইভা সম্পন্ন হয়। আইন মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে ৩১ অক্টোবর ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে ৬ হাজার ৫৩১ জন চূড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়। সুপারিশপ্রাপ্ত হননি—এমন ৩১ জন হাইকোর্টে রিট করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম ৬ ফেব্রুয়ারি বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট।

আরও পড়ুনপ্রাথমিকের ৬৫০০ শিক্ষকের নিয়োগ বাতিলে হাইকোর্টের রায়০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পরও যোগদান করতে না পেরে ৬ হাজার ৫৩১টি পরিবার সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছে। সবাই একপ্রকার মানসিক বিপর্যয় ও মানবেতর জীবনযাপন করছে। আর কত ধৈর্য ধরতে হবে? এভাবে আর কত দিন মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে? এখন তাঁদের থাকার কথা নিজ নিজ কর্মস্থলে। অথচ তাঁরা এখন রাস্তায়। তাঁদের জীবনের দায়ভার কে নেবে? তাঁরা কার কাছে যথাযথ বিচার চাইবেন? এই মুহূর্তে তাঁদের দাবি, তাঁরা অনতিবিলম্বে কাজে যোগদান করতে চান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করল পাকিস্তান-সৌদি আরব

পাকিস্তানের ওপর কেউ হামলা চালালে সৌদি আরব তাদেরকে রক্ষায় এগিয়ে আসবে। আবার সৌদি আরবের ওপর কেউ আগ্রাসন চালালে পাকিস্তানও সৌদি আরবকে রক্ষায় এগিয়ে আসবে। ঠিক এমনই একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সৌদি আরব ও পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তান।

জিও নিউজের খবর অনুসারে, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সৌদি আরব সফরের সময় এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে শাহবাজের বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে এ চুক্তির কথা জানানো হয়।

আরো পড়ুন:

এক সপ্তাহে সৌদি আরবে ২০ হাজারের বেশি প্রবাসী গ্রেপ্তার

২০ বছর কোমায় থাকার পর মারা গেলেন সৌদির ‘ঘুমন্ত যুবরাজ’

চুক্তি স্বাক্ষরের পর উভয় দেশ একটি যৌথ বিবৃতিতে জানায় যে, ভ্রাতৃত্ব, ইসলামিক সংহতি ও অভিন্ন কৌশলগত স্বার্থের ভিত্তিতে এবং প্রায় আট দশকের দীর্ঘ অংশীদারত্বের ওপর দাঁড়িয়ে দুই পক্ষ কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

ক্রাউন প্রিন্সের আমন্ত্রণেই শরিফ সৌদি আরব সফরে গেছেন বলেও তাদের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সৌদি আরবের সঙ্গে হওয়া এই প্রতিরক্ষা চুক্তির ফলে এখন ‘এক দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসনকে উভয়ের বিরুদ্ধে আগ্রাসন’ বিবেচনা করা হবে।

বিশেষজ্ঞরা এই চুক্তিকে 'ঐতিহাসিক ও নজিরবিহীন অগ্রগতি' বলে অভিহিত করেছেন। তাদের মতে, এটি পাকিস্তান ও সৌদি আরবের সম্পর্ককে আনুষ্ঠানিক নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতিতে উন্নীত করেছে। তারা বলছেন যে, এই পদক্ষেপ কেবল পাকিস্তান-সৌদি সম্পর্ককে দৃঢ় করছে না, বরং দক্ষিণ এশিয়া এবং মুসলিম বিশ্বের জন্যও এর গুরুত্ব রয়েছে। এটি পাকিস্তানকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষার সবচেয়ে সক্ষম মুসলিম শক্তি হিসেবে তুলে ধরেছে।

বিশ্লেষকরা আরও বলছেন যে, সাম্প্রতিক আঞ্চলিক অস্থিরতা, ইসরায়েলের হামলা, দোহা সম্মেলন এবং আরব বিশ্বে সার্বভৌমত্ব নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এই চুক্তির তাৎপর্য অনেক বেশি। এটি প্রমাণ করে যে, বর্ধিত হুমকির সময়ে সৌদি আরব পাকিস্তানকে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে বিশ্বাস করছে। 

পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেখানো হয়, চুক্তি স্বাক্ষরের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে আলিঙ্গন করতে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির, যাকে দেশটির সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে দেখা হয়।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ