জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুলিতে আহত আরো ছয়জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডের ব্যাংককে পাঠিয়েছে সরকার। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে তাদের ব্যাংককে রওনা হওয়ার তথ্য দিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন।

এদিন দুপুরে তিনি বলেন, ‘‘এবার যারা গেছেন, তাদের মধ্যে পাঁচজন জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। একজন ভর্তি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ)।’’

পঙ্গু হাসপাতাল থেকে যাওয়া পাঁচজন হলেন দুলাল হোসেন, মোস্তফা কামাল নূর, শহিদুল ইসলাম, হেদায়েতুল্লাহ ও মোহাম্মদ রায়হান। বিএসএমএমইউ থেকে গেছেন মোহাম্মদ রায়হানুল।

শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘‘থাইল্যান্ডের ভেজথানি হাসপাতালে তাদের ভর্তি হওয়ার কথা রয়েছে।’’

এর আগে, গেল রবিবার দীপঙ্কর বালা নামে একজনকে থাইল্যান্ডে পাঠানো হয়; যিনি পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

সেদিন বেলা সাড়ে ১১টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নিয়মিত ফ্লাইটে তাকে সেখানে পাঠানো হয়।

এর আগে গত শনিবার গুলিবিদ্ধ রবিউল হোসেন পলাশকে থাইল্যান্ডে পাঠায় সরকার।

গেল ২৯ জানুয়ারি রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) থেকে তিনজন ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আরো তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে পাঠায় সরকার।

এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে সরকারি উদ্যোগে ২২ জনকে ব্যাংককে পাঠানো হয়। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত আন্দোলন আহত ৩৬ জনকে ব্যাংককে পাঠানো হলো।

তবে আহত আরো অনেকেই উন্নত চিকিৎসার দাবি জানিয়ে আসছেন। দাবি নিয়ে একাধিকবার রাস্তায়ও নেমেছেন তারা।

সবশেষ গত ২ ফেব্রুয়ারি পঙ্গু হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করে রাখেন আহতরা। পরের দিন পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে তারা চলে যান প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে।

ঢাকা/আসাদ/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ