ঐক্যবদ্ধ থাকলেই সমাজ পরিবর্তন সম্ভব: ঢাবি উপাচার্য
Published: 11th, February 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেছেন, “সবার মধ্যে ঐক্য থাকলেই সমাজ পরিবর্তন সম্ভব। দেশকে ঘিরে অনেকবার ষড়যন্ত্র হয়েছে। তারুণ্যের শক্তিকে ব্যবহার করে প্রতিবারই এ দেশের মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছে।"
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে তিন দিনব্যাপী ‘তারুণ্যের উৎসব’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “দেশের ডাকে সাড়া দিয়ে তারুণ্যের সর্বজনীন শক্তি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জাতিকে নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে। আমাদের আর পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। দেশের স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এখনই সময়।”
তিনি আরো বলেন, “তারুণ্য শুধু বয়সের বিষয় নয়। এটি একটি মানসিক অবস্থান। সকল বয়সের মানুষকেই তারুণ্য ধারণ করতে হবে। তারুণ্যের একটি সর্বজনীন রূপ আছে। তারুণ্যের শক্তি সবার মধ্যে মেলবন্ধন সৃষ্টি করে। তরুণ ছাত্র সমাজের সঙ্গে এদেশের তরুণ রিক্সাচালক, কৃষক, সবজি বিক্রেতাসহ সব শ্রেণিপেশার তরুণ ঐক্যবদ্ধভাবে জুলাই আন্দোলনে শামিল হয়। সর্বস্তরের মানুষ তাদের পাশে দাঁড়ায়। ফলে একটি সফল গণঅভ্যুত্থান সম্ভব হয়। তারুণ্যের এ উৎসব জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে সম্মান জানানোর একটি উপলক্ষ হিসেবে আমরা দেখতে পারি।”
উপাচার্য বলেন, “দীর্ঘদিনের দলান্ধ, হিংস্র ও বিভাজনের রাজনীতি এ দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। এতে দেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে। সামাজিক বিভেদ দূর করে মানুষের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টিতে এ ধরনের উৎসব সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছি।”
‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ প্রতিপাদ্যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এ উৎসবের আয়োজন করেছে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসবের উদ্বোধন করেন।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থান দীর্ঘদিনের ফ্যাসিবাদী শোষণ থেকে এ দেশের মানুষকে মুক্ত করেছে। যে তরুণদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা এ মুক্তি পেয়েছি, তাদের শক্তিকে জাগ্রত রাখতে দেশব্যাপী তারুণ্যের উৎসব আয়োজন করা হচ্ছে। প্রতিটি জেলা, উপজেলাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আয়োজিত এ উৎসবে তরুণ সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিচ্ছে।”
তিনি বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এদেশের তরুণ সমাজ মানুষকে নতুন স্বপ্ন দেখানোর একটি প্রেক্ষাপট সৃষ্টি করেছে। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও দেশ পুনর্গঠনে তরুণ সমাজ অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছি।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ঘোষিত তারুণ্যের উৎসব গত ৩০ ডিসেম্বর দেশব্যাপী উদযাপিত হচ্ছে। এর অংশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দিনব্যাপী এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। তারুণ্যের শক্তি, আবেগ ও উদ্যোগী চেতনা ধারণ করে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা, পারস্পরিক সহযোগিতার মানসিকতা গড়ে তোলা এবং বাংলাদেশের বৈচিত্র্য ও সংস্কৃতির সৌন্দর্যকে তুলে ধরার লক্ষ্যে উদযাপিত হচ্ছে এ উৎসব। উৎসব উপলক্ষ্যে তরুণ উদ্যোক্তাদের স্টল নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে মেলা।
এছাড়া চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, ক্লিন ক্যাম্পেইন, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, কেস কম্পিটিশন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং জনপ্রিয় ব্যান্ড দলের অংশগ্রহণে মেগা কনসার্ট নিয়ে সাজানো হয়েছে এ উৎসব।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এ উৎসব র উৎসব
এছাড়াও পড়ুন:
কাহালুর জামাই মেলায় মানুষের ঢল
বগুড়ার কাহালু উপজেলায় দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী জামাই মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার পৌর এলাকার পাল্লাপাড়া গ্রাম উন্নয়ন কমিটির আয়োজনে কাহালু সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ আয়োজন করা হয়। মেলার প্রধান আকর্ষণ ছিল ঐতিহ্যবাহী লাঠি ও পাতা খেলা। শিশু-কিশোরদের জন্য ছিল নাগরদোলা ও নৌকাদোল।
মেলা উপলক্ষে নতুন জামাই ও আত্মীয়দের নিমন্ত্রণ জানানো হয় আশপাশের কয়েকটি গ্রামে। বাড়িতে বাড়িতে অতিথি আপ্যায়নের ধুম পড়ে। এলাকার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বেড়াতে আসেন মেয়েজামাই। তারা একসঙ্গে কেনাকেটা করেন। বাঁশ, মাটি ও প্লাস্টিকের তৈরি খেলনার পসরা সাজিয়ে বসেন বিক্রেতা। ছিল নারীদের প্রসাধনীর দোকানও।
এদিন অতিথি আপ্যায়নে মিষ্টির দোকানগুলোয় ক্রেতার উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। হরেক রকমের মিষ্টি তৈরি করে বিক্রি করছেন দোকানি। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, তালের শাঁসসহ বিভিন্ন ফল বিক্রি করতে দেখা যায়। চটপটি, বারোভাজা ও ফুসকার দোকানেও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
এ মেলা ঘিরে আশপাশের এলাকায় উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। শিশু-কিশোরদের বাজানো বাঁশির শব্দ ছিল পুরো এলাকায়। মেলায় কথা হয় পাল্লাপাড়া গ্রামের জামাই মোরশেদ আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, এক বছর আগে বিয়ে করেছেন এলাকায়। কয়েকদিন আগে ঈদের দাওয়াতে এসেছিলেন শ্বশুরবাড়ি। এদিন আসেন জামাই মেলা উপলক্ষে।
মেলায় সকালে মাছ ও মাংসের দোকান বসে। বিকেলে ভ্যাপসা গরম উপেক্ষা করেই মানুষের ঢল নামে। শিশু-কিশোরদের হাত ধরে মেলায় ঘুরতে আসেন অভিভাবকসহ স্বজনরা। শিশুদের বায়না মেটাতে হিমশিম খেতে হয় অনেককে।
আয়োজকদের অন্যতম সাবেক কাউন্সিলর মোজাম্মেল হক বলেন, ৩৫ বছর থেকে এ মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। এলাকার জামাইদের দাওয়াত করা হয় বলে এটি ‘জামাই মেলা’ হিসেবে পরিচিত। এ মেলা এখন এলাকার ঐতিহ্য।