ট্রাম্পের বিতর্কিত গাজা পরিকল্পনা রুখতে জরুরি বৈঠকে বসছে ওআইসি
Published: 12th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদের মার্কিন পরিকল্পনা মোকাবেলা করার লক্ষ্যে একটি জরুরি বৈঠকে বসছে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সংস্থার অন্যতম সদস্য দেশ মিশর।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) মিশর জানায়, গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের তাড়ানোর পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের একটি জরুরি বৈঠকের জন্য একটি প্রাথমিক ঐকমত্যে পৌঁছানো গেছে।
মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তি সৌদি আরব, পাকিস্তান, ইরান, জর্ডান ও গাম্বিয়াসহ ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাথে ফিলিস্তিন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
বিবৃতি অনুযায়ী, এই আলোচনার ফলে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি কায়রোতে আরব শীর্ষ সম্মেলনের পর ওআইসি মন্ত্রী পর্যায়ের জরুরি বৈঠক করার প্রাথমিক ঐকমত্য হয়েছে। তবে বৈঠকের জন্য কোনো নির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি।
মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে আরও জানিয়েছে, এই বৈঠকের লক্ষ্য ‘ফিলিস্তিনের স্বার্থে ফিলিস্তিনি, আরব ও ইসলামি দেশগুলোর দীর্ঘদিনের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করা এবং সেটা হল ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও নিজ মাতৃভূমিতে বসবাসের অবিচ্ছেদ্য অধিকার সমুন্নত রাখা।’
ইসরাইলের ১৫ মাসের সামরিক আগ্রাসনে সাজানো-গোছানো গাজা এখন কার্যত ধ্বংসস্তূপ। গত মাসে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে এক যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে সেই ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই ফিরছেন ফিলিস্তিনিরা। নিজেদের মাতৃভূমিকে নতুন করে গড়ার স্বপ্ন দেখছেন তারা।
কিন্তু ফিলিস্তিনিদের সেই স্বপ্নপূরণে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। অধিকৃত গাজাকে এবার পুরোপুরি দখলের পায়তারা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার কর্মকর্তারা বলছেন, গাজা দখল করে পুনর্নির্মাণ করবে যুক্তরাষ্ট্র। আর গাজাবাসীকে জর্ডান ও মিশরের মতো দেশগুলোতে পুনর্বাসন করা হবে।
জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর হোয়াইট হাউস সফরকালে গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু বাদশাহ তা মানতে রাজি হননি। বলেছেন, তার দেশ ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে সায় দেবে না। বরং ফিলিস্তিনিদের না সরিয়েই গাজাকে নতুন করে সাজানো যেতে পারে।
সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর ও আনাদোলু এজেন্সি
বিএইচ
.উৎস: SunBD 24
এছাড়াও পড়ুন:
উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে একমত হলেও বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট রূপরেখা চায় এনসিপি
সংসদের উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির (পিআর) বিষয়ে একমত পোষণ করলেও এটি বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট রূপরেখা চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ঐকমত্যের বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন, যার পদ্ধতি এখনো সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি। ফলে একটি অস্পষ্টতা থেকেই গেছে।’
আজ বৃহস্পতিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২৩তম দিনের বিরতিতে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন আখতার হোসেন।
উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতি কীভাবে বাস্তবায়িত হবে সেই রূপরেখা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনকে কার্যকর আলোচনা জন্য আহ্বান জানান আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এনসিপির পক্ষ থেকে উচ্চকক্ষে সংবিধান সংশোধনের জন্য ‘টু-থার্ডস মেজরিটি’ বাধ্যতামূলক করার দাবি জানানো হয়। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচিতরা নির্বাচিত প্রতিনিধি নন—এমন কথা বলা হলেও, বিশ্বজুড়ে এফপিটিপি (যিনি সবচেয়ে বেশি ভোট পান) ও পিআর উভয় পদ্ধতিতেই বৈধতা রয়েছে। পিআর পদ্ধতিতেও জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়।
কমিশনের প্রস্তাবিত বাস্তবায়ন সময়সীমাকে এনসিপি প্রত্যাখ্যান করেছে বলে জানান দলটির সদস্যসচিব। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, সিদ্ধান্তগুলো তৎক্ষণাৎ কার্যকর হোক।’ তিনি বলেন, ‘১ শতাংশ ভোট পেলেও যেন একটি দল একজন করে প্রতিনিধি উচ্চকক্ষে পাঠাতে পারে—এটি বহু মতের ও বহু দলের গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করবে। আইন পাসের আগে যদি উচ্চকক্ষে আলোচনা হয়, তাহলে ভুলত্রুটি ধরার সুযোগ তৈরি হবে এবং সংসদের বাইরে জনপরিসরেও আইন নিয়ে আলোচনা গড়ে উঠবে।’
‘বর্তমানে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে যেভাবে দলগুলো সংবিধান সংশোধন করে, সেটা যেন না হয়’ উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিত্ব থাকলে, সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রেও জনগণের বৃহত্তর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে।’
উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গে আখতার হোসেন বলেন, ‘অনেকে বলছেন, পিআর পদ্ধতিতে হলে তাঁরা উচ্চকক্ষ চান না। তাহলে প্রশ্ন ওঠে—তাঁরা আদৌ উচ্চকক্ষ চান কি না। আমরা বিশ্বাস করি, ১০০ আসনের এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে দেশ একদল বা দুই দলের কর্তৃত্ব থেকে বেরিয়ে বহু দলের অংশগ্রহণে পরিচালিত হবে। এতে গণতন্ত্রচর্চার নতুন সংস্কৃতি গড়ে উঠবে।’
আলোচনার সময় সরকারি কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং মহাহিসাব নিরীক্ষক নিয়োগ নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান আখতার হোসেন। যদিও কিছু দল ভিন্নমত পোষণ করেছে, তবে সার্বিকভাবে একটি ঐকমত্যের জায়গায় কমিশন পৌঁছেছে বলেও তিনি দাবি করেন।
আলোচনার শেষভাগে উচ্চকক্ষ গঠন নিয়ে কমিশনের প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়, ১০০ আসনের একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে, যেখানে প্রতিনিধিরা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচিত হবেন। এ কক্ষে নিম্নকক্ষ থেকে পাঠানো বিল সর্বোচ্চ দুই মাস আটকে রাখা যাবে এবং সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে ‘সিম্পল মেজরিটি’র কথা বলা হয়েছে।