অবৈধ সিগারেট, বিড়ি ও তামাকজাতীয় পণ্য নির্মূলে দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গত ৬ ফেব্রুয়ারি এনবিআর এক আদেশ জারি করে সার্কেল পর্যায়ে বিশেষ কমিটি গঠনের মাধ্যমে এ অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেয়।

জানা গেছে, এনবিআরের রাজস্বের প্রায় ২৫ শতাংশ আসে সিগারেট, বিড়ি ও তামাকজাতীয় পণ্য থেকে। অথচ অবৈধ পথে আসা দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডের সিগারেট, গুল, জর্দা ও অন্যান্য তামাকজাতীয় পণ্য বাজারে ছড়িয়ে পড়ছে, যা সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যও হুমকির মুখে পড়ছে। এ অবস্থায় অবৈধ তামাকপণ্যের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালাতে সব কমিশনারেটের অধীন সার্কেল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে ছয় সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ৫২টি অভিযান পরিচালিত হয়। এর মধ্যে ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা (পশ্চিম) ২৪টি, রাজশাহী ১৭টি, ঢাকা (পূর্ব) ৪টি, কুমিল্লা ২টি এবং রংপুর ১টি অভিযান পরিচালনা করে। ফেব্রুয়ারির প্রথম ১১ দিনেই ১০৭টি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। ১ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩০টি, ১০ ফেব্রুয়ারি ২৩টি এবং ১১ ফেব্রুয়ারি একদিনেই ৫৪টি অভিযান চালানো হয়। এর মধ্যে ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা (দক্ষিণ) ৪টি, ঢাকা (উত্তর) ১টি, ঢাকা (পশ্চিম) ১০টি, চট্টগ্রাম ১২টি, রাজশাহী ১২টি এবং কুমিল্লা ৩টি অভিযান পরিচালনা করে।

এনবিআর জানিয়েছে, এসব অভিযানের ফলে বাজারে অবৈধ সিগারেট ও তামাকপণ্যের সংখ্যা কমেছে, ফলে বৈধভাবে ভ্যাট পরিশোধিত পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। ধারাবাহিক অভিযানের মাধ্যমে সরকার রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আশাবাদী। অভিযানে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সিগারেট, বিড়ি ও তামাকপণ্য জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে এনবিআর সচেতন নাগরিক, সুশীল সমাজ, গোপন তথ্যদাতা এবং গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করেছে।

এনএফ/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অব ধ স গ র ট

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের

গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায্য মজুরি, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত ও শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। একই সঙ্গে তারা বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকনেতাদের মুক্তির দাবিও জানায়।

মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জুলফিকার আলী, আইনবিষয়ক সম্পাদক বিমল চন্দ্র সাহা, নির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন, নির্বাহী সদস্য ও বোম্বে সুইটস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রতন মিয়া প্রমুখ।

সমাবেশে নেতারা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে গার্মেন্টস উইংয়ের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ৭ জনকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে এবং রিকশা শ্রমিকদের রুটি–রুজির আন্দোলনে সংহতি জানানোর অপরাধে চট্টগ্রামে রিকশা সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি আল কাদেরি জয়, মিরাজ উদ্দিন ও রোকন উদ্দিনকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ সরকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তারা শ্রমক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়ন করবে।

এ সময় নেতারা শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, তা জানতে চান। তাঁরা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার চর্চায় বাধা দেওয়া বন্ধ না হলে, শ্রমিকের ওপর নিপীড়ন বন্ধ না হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র পরিচালনা বা বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি শ্রমজীবী মানুষের কাছে প্রতারণা হিসেবে পরিগণিত হবে।

মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে নেতারা আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শ্রম খাতের দুর্দশার যে ভয়ানক চিত্র ফুটে উঠেছে, তা প্রমাণ করে স্বাধীনতা–পরবতী প্রতিটি সরকার শ্রম শোষণকে তীব্র থেকে তীব্রতর করার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।

এ সময় গ্রেপ্তার সব শ্রমিকের মুক্তি, শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধ এবং মে দিবসের প্রকৃত চেতনায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ