লিবিয়ায় নির্যাতনের শিকার হৃদয় ইতালির পথে মারা যান
Published: 13th, February 2025 GMT
সম্প্রতি মানব পাচার চক্রের ফাঁদে পড়ে অবৈধ পথে ইতালি যাওয়ার পথে মারা যান মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বাসিন্দা হৃদয় হাওলাদার। পাচারের ঘটনায় স্বজনের করা মামলায় মঙ্গলবার রাজধানীর ভাটারা ও ঢাকার দোহার থেকে মানব পাচার চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
তারা হলেন লিপন মাতুব্বর ও আনোয়ার ওরফে আনো মাতুব্বর। লিপন রাজৈর থানায় মিন্টু হাওলাদারের করা মামলার ও আনো মাতুব্বর ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানায় নাজমিন বেগমের করা মামলার প্রধান আসামি। আজ বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে তোলা হবে।
এ বিষয়ে গতকাল বুধবার ঢাকার কেরানীগঞ্জ র্যাব-১০ এর সদরদপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করেন অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, লিপনের ভাই তপন ওরফে মাসুদ মাতুব্বর লিবিয়া প্রবাসী। ভাইয়ের মাধ্যমে লিপন অবৈধ পথে লিবিয়া হয়ে ইতালিতে লোক পাঠাতেন। সে জনপ্রতি ১৬ লাখ টাকা নিতেন। তাঁর কাজ ছিল ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে আরেকটি চক্রের কাছে ভুক্তভোগীদের পৌঁছে দেওয়া। লিবিয়ায় আটক রেখে অমানবিক নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে মুক্তিপণ আদায় করা হতো। টাকা পাওয়ার পর তাদের ভূমধ্যসাগরে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় তুলে দিতেন লিবিয়ায় থাকা লিপনের সহযোগীরা। লিপন গত ৩ থেকে ৪ মাসে ৬-৭ জনকে ইতালি পাঠানোর উদ্দেশে লিবিয়াতে পাঠিয়েছেন।
র্যাব জানায়, হৃদয় হাওলাদার (মৃত্যু হয়েছে) ও আনো মাতুব্বর একই এলাকার বাসিন্দা। হৃদয়কে উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে তিনি সাড়ে ১৬ লাখ টাকা চুক্তিতে গত বছরের ২৭ নভেম্বর ইতালিতে পাঠানোর কথা বলে লিবিয়ায় পাঠান।
হৃদয়কে লিবিয়ায় আটকে রেখে নির্যাতন করে ১৫ লাখ টাকা আদায় করেন আনো মাতুব্বর। এর পর চক্রটি আরও ১০ লাখ টাকা নেয়। মৃত্যুর আগে হৃদয় পরিবারকে জানান, তাঁকে ইতালি পাঠানোর উদ্দেশে লিবিয়ার সাগরপারে নেওয়া হয়েছে। পরে হৃদয়ের লাশের ছবি শনাক্ত করেন স্বজনরা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম ত ব বর
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতের হাই অ্যালার্ট
পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের সাথে চলমান উত্তেজনার মধ্যে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তে হাই অ্যালার্ট জারি করেছে ভারত। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এ তথ্য জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি দাবি করেছে, “ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের কর্মকাণ্ড এবং সেখানে পাকিস্তানের আইএসআই ও পাকিস্তানি সামরিক কর্মকর্তাদের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সীমান্তে সংস্থাগুলোকে অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পাকিস্তান তার বাংলাদেশি প্রতিপক্ষদের সাথে সাথে সেখানকার উগ্র ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলির সাথে সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা করছে। দুই দেশের মধ্যে শত্রুতা শুরু হলে ভারতের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পাকিস্তান সম্ভবত বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতীয় এলাকায় সমর্থনকারী এই উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলোকে ব্যবহার করতে পারে।”
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের প্রতি বৈরী মনোভাব প্রকাশ করছে ভারত। দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো বাংলাদেশ নিয়ে নিয়মিতভাবে ভুয়া নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশন করছে। এর পাশাপাশি ভারতে ক্ষমতাসীন উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির নেতারা বাংলাদেশের ব্যাপারে বিভিন্ন সময় হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছেন।
ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলাকালে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে দাঙ্গার পর ভারতীয় সংস্থাগুলো বাংলাদেশ সীমান্তের পরিস্থিতি সক্রিয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মুর্শিদাবাদ জেলায় সহিংসতায় তিনজন নিহত এবং শত শত আহত হয়।
প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল ভারত অধিকৃত কাশ্মিরে সন্ত্রাসী হামলায় ২২ জন নিহত হন। এ ঘটনার জন্য কোনো প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করেছে ভারত। গত কয়েক দিন ধরেই দুই দেশের সীমান্তে গুলি বিনিময় হচ্ছে। বুধবার পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে যে, ভারত আগামী ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে আক্রমণ করতে পারে।
ঢাকা/শাহেদ