সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় খেয়াঘাট ইজারায় অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে দরপত্র গ্রহণ এবং সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচনে দরপত্র শিডিউলে টেম্পারিং করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দরপত্রে অংশ নেওয়া এক ব্যক্তি। ইজারার দরপত্র নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.

আবুল হাসেম।

জানা যায়, গত ১২ জানুয়ারি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বিভিন্ন নৌকাঘাট ইজারা সংক্রান্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। গত বৃহস্পতিবার নৌকাঘাটগুলোর দরপত্র জমা এবং খোলার তারিখ ছিল। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি দরপত্র জমা হয়। এ কারণে শিডিউল অনুযায়ী দেওয়া সময়সীমা বেলা ৩টার পরিবর্তে বিকেল ৫টায় টেন্ডার বাক্স খোলা হয়। এতে ফাজিলপুর নৌকাঘাটের বিপরীতে চারটি শিডিউল জমা হয়। দরপত্রের খাম খুলে চারটি দরপত্রের মধ্যে মো. জবা মিয়ার দরপত্রকে সর্বোচ্চ দরদাতা ঘোষণা করা হয়। তবে জবা মিয়ার শিডিউলে টেম্পারিং করে মূল্য বাড়ানোর অভিযোগ করেছেন আরেক দরদাতা সাগর মিয়া। এই মর্মে একটি লিখিত অভিযোগও করেছেন তিনি। 

সাগর মিয়ার অভিযোগ, জবা মিয়ার দরপত্রে তিন কোটি ৯৫ হাজার টাকা দরপত্র মূল্য লেখা ছিল। সেখানে টেম্পারিং করে বাড়িয়ে তিন কোটি ৯৫ লাখ টাকা করে সর্বোচ্চ দরদাতা ঘোষণা করা হয়েছে। 

শিডিউলে টেম্পারিংয়ের বিষয়টি অবশ্য অস্বীকার করেছেন জবা মিয়া। তিনি বলেন, ‘আমি সঠিক পন্থায় সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হয়েছি। এখনও খেয়াঘাটের দখলনামা পাইনি।’ 

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা মো. আবুল হাসেম বলেন, দরপত্রে অংকে তিন কোটি ৯৫ লাখ টাকা লেখা ছিল। কিন্তু সংখ্যায় লেখার সময় ভুলবশত তিন কোটি ৯৫ হাজার লেখা হয়েছে। এটা কোনো ত্রুটি নয়। 

এদিকে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে এ নিয়ে একটি রিট পিটিশন হয়েছে। ওই পিটিশনের আদেশ অনুযায়ী ফাজিলপুর নৌকাঘাটের ইজারা কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য উচ্চ আদালতের আরেকটি নির্দেশনা রয়েছে।  

রিটকারী সুনামগঞ্জ জেলা নৌযান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ফাজিলপুর নৌকাঘাটে কখনও মাল ওঠানামা হয় না। নৌকাঘাটটি ইজারা না দেওয়ার জন্য বহুবার প্রশাসনের কাছে তারা আবেদন-নিবেদন করে ব্যর্থ হয়েছেন। শেষে উচ্চ আদালতে রিট করেছেন। শুনানি শেষে উচ্চ আদালত নৌকাঘাটের ইজারা কার্যক্রমে ছয় মাসের স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। আদেশের অ্যাডভোকেট সার্টিফিকেট ৬ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে দাখিল করে প্রাপ্তি রসিদ সংগ্রহ করেছেন। উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে ফাজিলপুর নৌকাঘাটের শিডিউল গ্রহণ ও উন্মুক্ত করা হয় বলে দাবি করেন জাহাঙ্গীর আলম।  

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হাসেম এ প্রসঙ্গে বলেন, ফাজিলপুর নৌকাঘাট ইজারা কার্যক্রম বন্ধে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞার একটি অ্যাডভোকেট সার্টিফিকেট পেয়েছি। আপাতত কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। সর্বোচ্চ দরদাতা নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে। হাইকোর্টে রিটের বিষয়টি সুরাহা হলে সর্বোচ্চ দরদাতাকে ঘাটের দখলনামা বুঝিয়ে দেওয়া হবে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ চ চ দরদ ত র দরপত র কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

এলএনজি আমদানি: ব্যয় হবে ১৬২০ কোটি ৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা

দেশের জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে গত কয়েক বছর ধরে স্পট মার্কেট থেকে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে এলএনজি আমদানি করছে সরকার।

এরই অংশ হিসেবে পৃথক তিনটি কোটেশনের মাধ্যমে আগামী মে, জুন ও জুলাই মাসের জন্য এই তিন কার্গো এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। এতে মোট ব্যয় হবে এক হাজার ৬২০ কোটি ৫ লাখ ২৮ হাজার ৬৬৪ টাকা।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় প্রস্তাব তিনটিতে অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় কমিটির সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ল

নতুন বছরের আগ মুহূর্তে কেরোসিন-ডিজেলের দাম কমল

সভা সূত্রে জানা গেছে, ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট হতে ১ কার্গো (২২-২৩ মে ২০২৫ সময়ে ২০তম) এলএনজি আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদনের জন্য সভায় উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে।

সূত্র জানায়, পেট্রোবাংলার মে মাসের জন্য ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের  কাছ থেকে দরপ্রস্তব আহ্বান করা হলে ৫টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দাখিলকৃত ৫টি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুর ভিত্তিক আরামকো ট্রেডিং সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে প্রতি এই এক কার্গো এলএনজি সংগ্রহ করবে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১১.১৫ মার্কিন ডলার হিসেবে এক কার্গো সমান ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৫৩৪ কোটি ৭৬ লাখ ১১ হাজার ৩৬০ টাকা।

সূত্র জানায়, একই প্রক্রিয়ায় জুন মাসের অন্য এক কার্গো এলএনজির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে এবং প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে দরপ্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স গানভর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড এই ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করবে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১১.২৭ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৫৪০ কোটি ৫১ লাখ ৬৪ হাজার ১২৮ টাকা।

সভায় জুলাই মাসের জন্য ও এক কার্গো এলএনজি আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। পেট্রোবাংলা কর্তৃক ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের  কাছ থেকে দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে ৬টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দাখিলকৃত ৬টি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশের প্রেক্ষিতে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড নির্বাচিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এমবিটিইউ প্রতি এমবিবিইটএইউ ১১.৩৫৮৮ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে  ৫৪৪ কোটি ৭৭ লাখ ৫৩ হাজার ১৭৬ টাকা।

ঢাকা/হাসনাত/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সর্বোচ্চ দরদাতা ইজারা পাননি, গাবতলী হাটে খাস আদায় করছেন ‘পছন্দের’ ব্যক্তিরা
  • এবার আগেভাগেই বই ছাপার কাজ শুরু হচ্ছে, ২০২৭ সাল থেকে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমের চিন্তা
  • তিন প্রকল্প অনুমোদন, ব্যয় হবে ৩৯০ কোটি টাকা
  • বেজা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের দুই প্রস্তাব অন
  • অভিযোগের বিষয়ে এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি’র বক্তব্য 
  • এলএনজি আমদানি: ব্যয় হবে ১৬২০ কোটি ৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা
  • ‘নতুন শুরুর আশায়’ মাগুরা টেক্সটাইল মিলসের পুরোনা মেশিন বিক্রি
  • সোনাগাজীতে ইজারা চুক্তি না মেনে চলছে পশুর হাট