মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন বলছে, ইসরায়েল এ বছরের মাঝামাঝি নাগাদ ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর আগাম হামলা চালাতে পারে।

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক গোয়েন্দা প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট এ খবর প্রকাশ করেছে।

ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, বাইডেন প্রশাসনের শেষ ও ট্রাম্প প্রশাসনের শুরুর একাধিক গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ ধরনের হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কয়েক সপ্তাহ বা মাসের জন্য পিছিয়ে দিতে পারে। এতে এই অঞ্চলের উত্তেজনা আরো বাড়বে এবং বড় ধরনের সংঘাতের ঝুঁকি তৈরি হবে।

আরো পড়ুন:

ট্রাম্পের বলপ্রয়োগের হুমকি ‘উদ্বেগজনক ও কাণ্ডজ্ঞানহীন’: ইরান

ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপ: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার ঘোষণা

রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে ওয়াশিংটন পোস্টের এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি। হোয়াইট হাউজ মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, ইসরায়েল সরকার, সিআইএ, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা এবং জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের কার্যালয় এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

তবে, হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র ব্রায়ান হিউজেস ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে দেবেন না’।

হিউজেস বলেন, “যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরান সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যাগুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য আলোচনায় বসতে ইচ্ছুক, তবে ইরান ইচ্ছুক না হলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হয়তো অপেক্ষা করবেন না।” 

ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, জানুয়ারির শুরুর দিকে বিস্তৃত গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল এবং এটি জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ ও গোয়েন্দা অধিদপ্তর তৈরি করেছিল।

এতে সতর্ক করা হয়েছে যে, ইরানের ফোরডো ও নাতানজ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার চেষ্টা করতে পারে ইসরায়েল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোয়েন্দা তথ্যের সঙ্গে জড়িত বর্তমান ও সাবেক মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসরায়েল অক্টোবরে বোমা হামলা চালিয়ে ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দিয়েছে এবং দেশটিতে পরবর্তী আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

তবে এসব কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করেনি ওয়াশিংটন পোস্ট।

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনার মধ্যে গত বছর ইরান ও ইসরায়েল পরস্পরের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়েছিল।

গত সোমবার ফক্স নিউজকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, তিনি ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র থেকে বিরত রাখতে একটি চুক্তিকে গুরুত্ব দেবেন। তিনি বিশ্বাস করেন, ইরান সশস্ত্র সংঘাতের পরিবর্তে চুক্তি করতে আগ্রহী হবে।

ট্রাম্প আরো বলেন, “সবাই মনে করে, আমাদের সাহায্য নিয়ে বা আমাদের অনুমোদনে ইসরায়েল তাদের ওপর বোমা হামলা চালাবে। কিন্তু আমি চাইব না এটা ঘটুক।”

প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় মিত্ররা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করতে একটি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছিল। কিন্তু ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর উৎসাহে ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। এরপর ২০১৮ সালে তেহরানের ওপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্দেশ দেন তিনি।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার মতে, ইরান তখন থেকে তার পারমাণবিক কর্মসূচি পুনরায় শুরু করেছে এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি জানুয়ারিতে ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভিতে বলেছিলেন, পারমাণবিক আলোচনা পুনরায় শুরুর উপায় খুঁজতে জেনেভায় ইরান, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি বৈঠক করেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল টন প স ট ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ