আন্তর্জাতিক বিপর্যয় ও সংকটে সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সুপরিচিত একটি কর্মসূচি বড় ধরনের আর কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে কাজে লাগানো হবে না।

বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা দেওয়ার অন্যতম প্রধান মাধ্যম মার্কিন বৈদেশিক সহায়তা সংস্থা (ইউএসএআইডি) প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ভেঙে দেওয়ার কারণে ওই কর্মসূচি আর কাজ করবে না। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছে এমন নয়টি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে।

দ্য ডিজাস্টার অ্যাসিস্ট্যান্স রেসপন্স টিম বা ডিএআরটিএস নামে পরিচিত কর্মসূচিতে উচ্চ প্রশিক্ষিত কর্মীরা কাজ করে থাকেন। কোনো বিপর্যয় বা গুরুতর সংকটকালে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মানবিক সহায়তায় নেতৃত্ব দিতে এসব কর্মীকে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মোতায়েন করা হতো।

দ্য ডিজাস্টার অ্যাসিস্ট্যান্স রেসপন্স টিম বা ডিএআরটিএস নামে পরিচিত কর্মসূচিতে উচ্চ প্রশিক্ষিত কর্মীরা কাজ করে থাকেন। কোনো বিপর্যয় বা গুরুতর সংকটকালে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মানবিক সহায়তায় নেতৃত্ব দিতে এসব কর্মীকে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মোতায়েন করা হতো।

সাম্প্রতিকতম ইতিহাসে ডিএআরটিএসের কর্মীদের যেখানে মোতায়েন করা হয়েছে, সেগুলোর একটি হাইতি। ২০১০ সালে প্রলয়ঙ্করী এক ভূমিকম্পে দেশটিতে প্রায় ৩ লাখ মানুষ মারা যান। এ ছাড়া ২০১১ সালে জাপানে তীব্র ভূমিকম্প ও সুনামির আঘাত ছাড়াও ইরাক ও সিরিয়া যুদ্ধে এ দলকে মোতায়েন করা হয়েছিল। জাপানে ওই ভূমিকম্পে ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও তেজস্ক্রিয় উপকরণ ছড়িয়ে পড়ে।

শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউএসএআইডির সাত কর্মী রয়টার্সকে বলেছেন, বর্তমানে আফগানিস্তান, গাজা, সুদান ও ইউক্রেনে ডিএআরটিএসের কার্যক্রম চলছে। কিন্তু সম্প্রতি ইউএসএআইডিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তহবিলের জোগান বন্ধ করে দেওয়ায় এ চার স্থানে আর স্বাভাবিক কাজ চালাতে পারবে না ডিএআরটিএস।

ডিএআরটিএসের কিছু কর্মীকে ইতিমধ্যে ওয়াশিংটনে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্য কর্মীরা তাঁদের অফিশিয়াল ই–মেইল বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক ব্যবস্থায় প্রবেশ করতে পারছেন না। কিছু সূত্র বলছে, ক্ষেত্রবিশেষে এক–একটি ডিএআরটিএস–এর সদস্য সংখ্যা ১০ থেকে ৫০ জনের বেশি হয়ে থাকে।

নতুন প্রশাসন (ট্রাম্প প্রশাসন) আমাদের অনন্য বেসামরিক সক্ষমতার শক্তি ছেঁটে ফেলছে। জীবন বাঁচাতে ও মানুষকে সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে সহায়তা করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের খুবই দৃশ্যমান, কার্যকর প্রতিফলন হলো ডিএআরটিএস।মার্সিয়া ওং, ইউএসএআইডির ব্যুরো ফর হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাসিস্ট্যান্সের সাবেক উপপ্রধান

ইউএসএআইডির একজন কর্মী বলেন, ‘আমাদের কাজ করার উপকরণগুলো শেষ করে দেওয়া হয়েছে।’

সূত্রগুলো বলছে, বিদেশে প্রতিটি ডিএআরটিএসকে সহায়তা দিতে ওয়াশিংটনভিত্তিক দল থাকে। মাঠপর্যায়ের দলের কাছ থেকে গোপন তথ্য পেতে ওয়াশিংটনের সহায়তা দলকে অবশ্যই ইউএসএআইডির সদর দপ্তরে কাজ করতে হবে। কিন্তু বর্তমানে সংস্থাটির কর্মীদের ওয়াশিংটনের সদর দপ্তরে প্রবেশ নিষিদ্ধ। এর অর্থ, নতুন কোনো ডিএআরটিএস মোতায়েন করা যাবে না।

ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, ইউএসএআইডিকে পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে একীভূত করা ও সংস্থাটির অধিকাংশ কর্মীকে বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে তারা। এ পরিকল্পনার জেরে ডিএআরটিএসের ভবিষ্যৎও অন্ধকারে পড়েছে।

এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

বিএইচএ’র ১ হাজার ৩০০ কর্মীর কতজনকে ছাঁটাই করা হবে সেটি তাদের জানানো হয়নি। তবে গত সপ্তাহে ইউএসএআইডির কর্মীদের এক নোটিশে জানানো হয়, এ সংস্থার ১০ হাজার কর্মীর মধ্যে অপরিহার্য ৬০০ জনকে চাকরিতে রাখা হবে। অবশ্য কাদের রাখা হবে, তা বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়নি।

ডিএআরটি কর্মসূচির দেখভাল করে থাকে ইউএসএআইডির ব্যুরো ফর হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাসিস্ট্যান্স (বিএইচএ)। এ ব্যুরোর সাবেক উপপ্রধান মার্সিয়া ওং বলেন, ‘নতুন প্রশাসন (ট্রাম্প প্রশাসন) আমাদের অনন্য বেসামরিক সক্ষমতার শক্তি ছেঁটে ফেলছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জীবন বাঁচাতে ও মানুষকে সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে সহায়তা করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের খুবই দৃশ্যমান, কার্যকর প্রতিফলন হলো ডিএআরটিএস।’

সূত্রগুলো বলেছে, বিএইচএ’র ১ হাজার ৩০০ কর্মীর কতজনকে ছাঁটাই করা হবে সেটি তাদের জানানো হয়নি। তবে গত সপ্তাহে ইউএসএআইডির কর্মীদের এক নোটিশে জানানো হয়, এ সংস্থার ১০ হাজার কর্মীর মধ্যে অপরিহার্য ৬০০ জনকে চাকরিতে রাখা হবে। অবশ্য কাদের রাখা হবে, তা বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউএসএআইড র ম ত য় ন কর র কর ম দ র ক জ কর কর ম ক কর ম র ত কর ম

এছাড়াও পড়ুন:

মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস

আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেও বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর বিপক্ষে টাইব্রেকারে কিংসের জয়ের নায়ক ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। শুনেছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়

সমকাল: দু’দিনের ফাইনালের অভিজ্ঞতাটা কেমন হলো?
শ্রাবণ: (হাসি) না, এটা খুব কঠিন ছিল। আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছি এক দিন ফাইনাল খেলব, জিতব এবং উদযাপন করব। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণে খেলা অনেকক্ষণ বন্ধ ছিল। বাকি ১৫ মিনিট আরেক দিন। এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা। একই চাপ দু’বার নিতে হলো।

সমকাল: এই মাঠের সমস্যার কারণেই কি এমনটা হয়েছে?
শ্রাবণ: অবশ্যই। এত বড় একটা টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা যে মাঠে, সেখানে ফ্লাডলাইট নেই। যদি ফ্লাডলাইটের সুবিধা থাকত, ওই দিনই খেলাটা শেষ করা যেত। আমার মনে হয়, দেশের ফুটবলের কিছু পরিবর্তন করা উচিত। বিশেষ করে আমরা যখন জাতীয় দলের হয়ে বিদেশে খেলতে যাই, তখন দেখি অন্যান্য দেশের মাঠ খুব গতিশীল। আমাদের দেশের মাঠগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের না। প্রায় সময়ই সমস্যা হয়। আমরা স্লো মাঠে খেলি। বিদেশে গতিশীল মাঠে খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের লিগটা যদি আন্তর্জাতিক মানের মাঠে হতো।

সমকাল: পেনাল্টি শুটআউটের সময় কী পরিকল্পনা ছিল আপনার?
শ্রাবণ: আমি আগেও বলেছি যে অনুশীলনের সময় আগের ম্যাচের টাইব্রেকার নিয়ে কাজ করেছি। কে কোন দিকে মারে, সেগুলো ট্রেনিংয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন কোচ। কোচের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি এবং সফল হয়েছি।

সমকাল: এমেকার শট ঠেকানোর পর মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছেন। এটি কি আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল?
শ্রাবণ: না, সেভ দেওয়ার পর মাথায় এলো। তাই এমি মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছি। বলতে পারেন, এটি কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তৎক্ষণাৎ মাথায় এলো।

সমকাল: জাতীয় দল আর ক্লাব– দুটোর অভিজ্ঞতা যদি একটু বলতেন।
শ্রাবণ: ক্লাব আর জাতীয় দল– দুটো ভিন্ন বিষয়। ক্লাব হচ্ছে শুধু একটা ক্লাবকে প্রতিনিধিত্ব করা। আর জাতীয় দল তো পুরো বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা। যারা ক্লাবে ভালো পারফরম্যান্স করে, তাদেরই জাতীয় দলে ডাকে। আর জাতীয় দলে ডাক পাওয়াটা একজন প্লেয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন।

সমকাল: আপনি একটি সেভ করেছেন। কিন্তু আবাহনীর মিতুল মারমা পারেননি। জাতীয় দলে বেস্ট ইলেভেনে থাকতে পারবেন?
শ্রাবণ: না না, ব্যাপারটা এমন না। ও (মিতুল) সেভ করতে পারেনি আর আমি পারছি– এটি কিন্তু বড় বিষয় না। ও কিন্তু সেমিফাইনালে সেভ করে দলকে ফাইনালে এনেছে। বরং অনুশীলনে কোচ যাঁকে ভালো মনে করেন, তাঁকেই শুরুর একাদশে রাখেন।

সমকাল: একজন গোলরক্ষক হিসেবে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
শ্রাবণ: আমি চাই দেশসেরা গোলরক্ষক হতে। আমার স্বপ্ন আছে, বিদেশে লিগে খেলব।    

সম্পর্কিত নিবন্ধ