আল মাহমুদ বলেছিলেন, ‘আমি একজন কবি ছাড়া এক সুতোও ওপরে কিছু নই’
Published: 15th, February 2025 GMT
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সাল। আল মাহমুদ মারা গেলেন। আমি তখন ঢাকায়। চোখ রাখলাম পত্রিকার পাতায়, কে কী লিখলেন এবং কে কী শোকবার্তা দিলেন। না, কেউ তেমন কিছু করলেন না। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি—কারও কোনো বাণী দেখলাম না।
তখন ঢাকায় একুশের বইমেলা চলছিল। বইমেলায় গেলাম। সেখানেও আনুষ্ঠানিকভাবে আল মাহমুদের জন্য তেমনভাবে কোনো শোক প্রকাশ চোখে পড়ল না। একটা জায়গায় প্যান্ডেল টানিয়ে সভা হচ্ছে। গিয়ে দেখলাম, একজন রাজনৈতিক নেতার জীবনদর্শন নিয়ে কেউ একটা বই লিখেছেন, তারই মহরত। আল মাহমুদের একটা ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা সংকলন’ কিনে ফিরে এলাম। ভাবলাম, আমি আর কী করতে পারি? রাতে বাড়িতে এসে আনাড়ি হাতে একটা কবিতা লিখলাম। তারপর আল মাহমুদের ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’ সংকলন খুলে বসলাম। একজন কবিকে শ্রদ্ধাতে তাঁর কবিতা পড়া ছাড়া উপায় কী!
আল মাহমুদ মনে করতেন, কবিতাঙ্গনে তাঁর কাজের জন্য তিনি যথেষ্ট স্বীকৃতি পাননি। তিনি তাঁর কবিতাতেই এ নিয়ে অভিযোগ করে গেছেন:
‘ধৈর্য ধরে থেকেছি বহুকাল
খাতির ধাপে উঠল বুঝি পা,
ভিতর থেকে বিমুখ মহাকাল
বলল, নারে, এখনো নয়, না।’
—‘ধৈর্য’: আল মাহমুদ
আল মাহমুদের কবিতার সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় হয় সমকাল–এর সাহিত্য পত্রিকার মাধ্যমে। তখন আমি ঢাকা কলেজে পড়ি। নিয়মমাফিক যেতাম নিউমার্কেটের নলেজ হোম নামের বইয়ের দোকানে বইয়ের চেয়ে পত্র–পত্রিকার আকর্ষণে। ছোট– বড় সব পত্রিকাই রাখতেন এ দোকানের স্বত্বাধিকারী মজলিশ সাহেব। যাঁরা তাঁর দোকানে যেতেন, কেনাকাটার চেয়ে ঘাঁটাঘাঁটিই করতেন বেশি, কেউ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ পড়তেন, যেন এদিনের ‘ব্যারনস অ্যান্ড নোবলেস’। মজলিশ সাহেব কখনো বাধা দিতেন না, পুনরায় ম্যাগাজিনগুলো ঠিকঠাক করে রাখতেন।
আল মাহমুদ বেঁচে থাকতেই বাংলাদেশে হাজারবার প্রশ্ন উঠেছে, ‘সোনালি কাবিন’–এর এই কবি কি রাজনীতি করতেন? তিনি কি জাসদের বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করতেন? তিনি কি ইসলামিক রাজনীতির সপক্ষে কাজ করেছিলেন? তিনি কি টাকা নিয়ে ফরমায়েশি লেখা লিখতেন? এসব প্রশ্ন যাঁরা করতেন, তাঁদের বলা যায়, আপনারা কি কখনো এ প্রশ্নও করেছিলেন, আল মাহমুদ অনেক ভালো কবিতা লিখতেন কি না?আমার বড় আকর্ষণ ছিল সিকান্দর আবু জাফরের সম্পাদনায় সাহিত্য পত্রিকা সমকাল। তখন প্রতি মাসেই নিয়মিত বের হতো, ঝকঝকে প্রচ্ছদ, তিন পাশে আধা ইঞ্চি বাড়তি মলাট ভেতরের লেখাগুলোর লজ্জা ঢেকে রাখত, খুললেই নতুন কাগজের গন্ধ অদ্ভুত অনুভূতি জাগাত। পত্রিকাটি একজন কবির অনেকগুলো কবিতা একই সংখ্যায় প্রকাশ করে কবিকে নিবিড়ভাবে পাঠকের সঙ্গে পরিচয় করে দিত। সিকান্দর আবু জাফরের কথা বলতে গেলে আমি খুব আবেগপ্রবণ হয়ে যাই। তাই তাঁকে নিয়ে আলোচনা অন্য সময়ের জন্য সরিয়ে রাখলাম। তো সেদিন সমকাল খুলে আল মাহমুদের কবিতাগুলো পড়লাম, একবার–দুইবার নয়, অনেকবার। পরিচয় হলো আমার অপরিচিত এক কবির সঙ্গে। সেই থেকে আল মাহমুদ হয়ে গেলেন আমার প্রিয় কবি এবং আরও অনেকের প্রিয় কবি। বাংলাদেশের শীর্ষ এক কবি।
কবিতা ও প্রেমের মধ্যে কোনো পার্থক্য দেখেননি তিনি।
‘আধুনিক কবিতা বলতে আপনি কী বোঝেন?
আমি বলি, সে তো লালমাটিয়া মহিলা কলেজে
এখন মেয়েদের বাংলা পড়ায় আর পরীক্ষার খাতা দেখে
নিজের নৈসঙ্গ যাপন করছে।’
—‘আধুনিক কবিতা’: আল মাহমুদ
কবি আল মাহমুদ.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: করত ন
এছাড়াও পড়ুন:
যমুনা ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন
যমুনা ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের সভায় ব্যাংকের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মো. বেলাল হোসেন সর্বসম্মতিক্রমে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি দেশের একজন সফল উদ্যোক্তা। খবর বিজ্ঞপ্তি
যমুনা ব্যাংকের ওয়েবসাইটের তথ্যানুসারে, মো. বেলাল হোসেন ১৯৫৬ সালে নওগাঁ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ব্যবসা-বাণিজ্যের জগতে তাঁর পরিবারের দেশ-বিদেশে সুনাম আছে। পরিবারের মালিকানাধীন বৃহৎ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ছাড়াও আছে নানা ধরনের ক্ষুদ্র ও বৃহৎ খাদ্যশস্য শিল্প। তিনি একজন বিশিষ্ট আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক। বর্তমানে তিনি বেলকন কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড, বিএইচ হাইটেক ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড, নাদিয়া ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড ও বিএইচ স্পেশালাইজড কোল্ডস্টোরেজ প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বেলাল হোসেন নওগাঁ, দিনাজপুর ও হিলি অঞ্চলের বিভিন্ন ক্রীড়া ও ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। ২০০৪ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে অতীশ দীপঙ্কর গবেষণা পরিষদের এডিজিপি ফেলো মেম্বারশিপ সম্মাননা লাভ করেন। ২০০৫ সালে এফএনএস বিজনেস অ্যাওয়ার্ডে সেরা কৃষিভিত্তিক শিল্প উদ্যোক্তা হিসেবে স্বীকৃতি পান।
বেলাল হোসেন নওগাঁ রাইস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, নওগাঁ এবং বাংলাদেশ অটো মেজর ও হাসকিং মিল মালিক সমিতি, ঢাকার কার্যনির্বাহী সদস্য।