নতুন সংবিধানেই মানুষের মুক্তি মিলবে: নাসীরুদ্দীন
Published: 15th, February 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, বাংলাদেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ও জনগণের ঐক্যের জায়গা দিন দিন বিনষ্ট হচ্ছে। নতুন সংবিধানের মাধ্যমেই বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি মিলতে পারে।
আজ শনিবার সন্ধ্যার পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে বেরিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। বেলা তিনটার কিছু পরে দেশের ২৭টি রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিদের নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের এই বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা বলেছি টেস্ট ম্যাচের মাধ্যমে যেতে হবে, যেখানে ধৈর্য ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে আমাদের বাংলাদেশের ৫৩ বছরের অসমাপ্ত কাজগুলো রয়েছে, সেগুলো সংস্কার কমিশনের মাধ্যমে সমাপ্ত করতে পারব।’ মানুষের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সরকার ও সংস্কার কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানান তিনি।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, জুলাই চার্টারকে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে, যাতে পরে সরকারে যারা আসবে, তারাও যাতে বাধ্যবাধকতার মাধ্যমে সংস্কার বিষয়ে শেষ কর্মদিবস পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যান—সে বিষয়টি তাঁরা বৈঠকে বলেছেন। আওয়ামী লীগের বিচার নিয়েও বৈঠকে কথা বলেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণের সামনে আওয়ামী লীগের দৃশ্যমান বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে তাঁরা কথা বলেছেন।
নতুন দলের বিষয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক বলেন, নতুন রাজনৈতিক লাইন কী হবে, তা সবার সামনে তুলে ধরেছেন তাঁরা। তাঁদের লাইন হবে নতুন সংবিধান রচনার জন্য লড়াই। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করেছি। ফ্যাসিবাদের কফিনে শেষ পেরেক মারার জন্য বাংলাদেশে নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং গণপরিষদ নির্বাচনের লড়াই আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেছি। সরকার সংস্কারের লড়াই শুরু করেছে, আমরা নতুন সংবিধান তৈরির লড়াই শুরু করেছি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন স র দ দ ন প টওয় র বল ছ ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে: জাপা মহাসচিব
কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তবে কারা, সেটা স্পষ্ট করেননি তিনি।
আজ শনিবার বিকেলে রংপুর নগরের সেন্ট্রাল রোডে জাপা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শামীম হায়দার পাটোয়ারী এ মন্তব্য করেন।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু দল ইতিমধ্যে ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে বা স্বাক্ষর করে একধরনের ফাঁদে পড়ে গেছে। কিছু রাজনৈতিক দল বলছে, ঐকমত্য কমিশন প্রতারণা করেছে। এখানে প্রতারক ও প্রতারণা শব্দটি উচ্চারিত হচ্ছে। কিন্তু আমরা তো এ রকম সংস্কার চাইনি।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ঐকমত্য তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে জাপা মহাসচিব বলেন, কমিশন ৫৬টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি দলকে বাদ দিয়েছে। যে দলগুলো সেখানে গেছে, তাদের মধ্যে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে মতবিরোধ আছে। এক ভাগকে ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ অংশগ্রহণ করেছে। অন্য আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে পরে সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করেছে।
বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামো বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির বলে দাবি করেছেন শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। কারণ, নির্বাচিত সরকার সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট করেছে ও নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে। এই মুহূর্তে দেশে যে প্রশাসনিক কাঠামো আছে, তার ব্যাপারে তথ্য উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন, তাঁরা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কথামতো প্রশাসন সাজিয়েছে, তার সঙ্গে এনসিপি আছে। এই তিন দলের বাইরে অন্য কোনো দল যদি ভোটে আসে, এই প্রশাসনিক কাঠামো সেই দলকে সুষ্ঠু ভোট হতে দেবে না।
গণভোটের দাবি নজিরবিহীন উল্লেখ করে শামামী হায়দার পাটোয়ারী বলেন, সংবিধানে এই মুহূর্তে গণভোট কোনো প্রভিশনে নেই। বর্তমানে গণভোটের যে দাবি উঠেছে, সংসদে পাস হওয়ার আগে এই দাবি বাস্তবায়ন হলে ঐকমত্য কমিশনকে সংসদের মর্যাদা দেওয়া হবে। ঐকমত্য কমিশন সার্বভৌম নয়, নির্বাচিত নয় ও সংসদ নয়। সংসদকে এড়িয়ে গিয়ে কোনো আইন পাস করা হলে তা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে।
এ সময় জাপার কো–চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসির, রংপুর জেলার আহ্বায়ক আজমল হোসেন, সদস্যসচিব হাজী আবদুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামানসহ জাপা ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।