এনআইডির তথ্য যাচাই সেবায় পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত
Published: 17th, February 2025 GMT
নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস রোধে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্য যাচাই সেবায় পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলো আর আগের মতো এনআইডির নম্বর, জন্ম তারিখ দিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির এনআইডির সব তথ্য পাবে না। তারা কোনো ব্যক্তির তথ্য যাচাইয়ের জন্য নাম ও জন্ম তারিখ দিয়ে অনলাইনে ইসির কাছে আবেদন করবে। তথ্য সঠিক কি না, তা জানিয়ে দেবে ইসি।
আজ সোমবার দুপুরে ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এস এম হুমায়ুন কবীর সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। সরকারি বেসরকারি ১৮২টি চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান ইসির কাছ থেকে এনআইডির তথ্য যাচাই–সংক্রান্ত সেবা নিয়ে থাকে।
হুমায়ুন কবীর বলেন, আগে ব্যক্তির নাম ও জন্মতারিখ দেওয়ার পর চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এনআইডির তথ্যগুলো চলে যেত। প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরাই সে তথ্য যাচাই করত। এখন ইসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তথ্য যাচাইটি তারা করে দেবে। চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান নাম ও জন্মতারিখ দিয়ে ‘সিস্টেমে’ তথ্য যাচাইয়ের অনুরোধ করবে। ইসি কোনটি সঠিক কোনটি ভুল তা জানিয়ে দেবে। এক্ষেত্রে কিছু প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ছবি দেওয়ার সুপারিশ করেছে। এই ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে।
হুমায়ুন কবীর বলেন, বিশেষ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সঙ্গে ইসি এনআইডি সেবার চুক্তি বাতিল করে। পরে তাঁরা জানতে পারেন অনলাইনে বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তি এনআইডি নিয়ে কাজ করে। ইসির কারিগরি দল কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য ফাঁস হওয়ার বিষয় দেখতে পায়। সেগুলো বন্ধ করা হয়েছে। এনআইডির তথ্য ফাঁস ঠেকাতে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে তাঁরা আলোচনা করেছেন।
তথ্য ফাঁস রোধে সেবা গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নজরদারি করা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জানিয়ে হুমায়ুন কবীর বলেন, তাঁরা একটি দল গঠন করে দেবেন। এই দলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাও থাকবেন। এই দল যেকোনো সময় যেকোনো প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ‘সিস্টেম চেক’ করতে পারবে; যাতে সিস্টেমে কোনো ত্রুটি থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শেরপুর নির্বাচন অফিসে রোহিঙ্গা আটক
শেরপুর ভুয়া নাম-পরিচয় ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) করতে গিয়ে এক রোহিঙ্গা আটক হয়েছেন। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আটকের পর তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন জেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা।
আটক ব্যক্তির নাম মো. আমিন। তিনি কক্সবাজারের উখিয়ার টাংহালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। তার বাবার নাম জাহিদ হোসেন।
আরো পড়ুন:
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্থায়ী প্রত্যাবাসনে ‘বাস্তব পদক্ষেপ’ চায় ওআইসি
৪০ দেশের প্রতিনিধিদের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, আলম মিয়া নাম ব্যবহার করে উখিয়ার টাংহালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক ব্যক্তি এনআইডি করতে শেরপুর জেলা নির্বাচন অফিসে আবেদন করেন। সেখানে তিনি বাবার নাম আলী হোসেন উল্লেখ করেন এবং শেরপুর পৌরসভার কসবা মোল্লাপাড়া ও শিবুত্তর এলাকার বাসিন্দা হিসেবে দাবি করেন। কথাবার্তা ও নথিপত্র যাচাইয়ের সময় সন্দেহ হলে কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় ওই ব্যক্তি নিজেকে রোহিঙ্গা বলে স্বীকার করেন।
শেরপুরের অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “তার কাগজপত্র দেখে আমাদের সন্দেহ হয়। তার ভাষাগত বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি নিজেকে রোহিঙ্গা বলে স্বীকার করেন।”
আটক মো. আমিন বলেন, “আমি কক্সবাজারের উখিয়ার টাংহালি ক্যাম্পে থাকি। এ দেশের নাগরিক হওয়ার আশায় ভোটার আইডি কার্ড করতে শেরপুরে এসেছিলাম। কাজের জন্য পরিচয়পত্র পেলে সুবিধা হবে ভেবেই আলম নামে আবেদন করেছি।”
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, “রোহিঙ্গা ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার সঙ্গে স্থানীয় কেউ জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আইনগত ব্যবস্থা চলমান।”
ঢাকা/তারিকুল/মাসুদ