স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের প্রতারণা থেকে রক্ষা রাখতে সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। সংস্থাটি জানিয়েছে, সম্প্রতি প্রতারকেরা ফোনকল ও এসএমএসের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য ও অর্থ হাতিয়ে নিতে নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করছে। এ ধরনের প্রতারণা আগের তুলনায় আরও বাস্তবসম্মত হওয়ায় সহজেই ব্যবহারকারীরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন।

এফবিআইয়ের তথ্যমতে, প্রতারকেরা ‘স্পুফিং’ প্রযুক্তির মাধ্যমে সরকারি সংস্থা বা ব্যাংকের প্রাতিষ্ঠানিক নম্বর থেকে ফোনকল করছে। ফলে ফোনকলটি আসল ভেবে অনেকে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। কিছু ক্ষেত্রে প্রতারকেরা নিজেদের মার্কিন কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশনের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ভয়ভীতি দেখায়। তারা দাবি করে, ভুক্তভোগীর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে বা শুল্কসংক্রান্ত জটিলতা তৈরি হয়েছে। এরপর সমস্যা দ্রুত সমাধানের কথা বলে নির্দিষ্ট ফি বা জরিমানা পরিশোধের নির্দেশ দেয়। অনেক ক্ষেত্রে প্রতারকেরা ফোনে সফটওয়্যার বা অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলে, যা ইনস্টল করলেই স্মার্টফোনে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করে ব্যক্তিগত তথ্য চুরির ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এই প্রতারণার মাত্রা এতটাই বিস্তৃত যে প্রতারকেরা বিভিন্ন দেশের স্থানীয় পুলিশ বিভাগের সদস্য পরিচয়েও ফোনকল করে থাকে।

প্রতারণার আরেকটি কৌশল হলো ভুয়া টোল বিল পরিশোধের দাবি করে এসএমএস পাঠানো। এসব বার্তায় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধের কথা উল্লেখ থাকে এবং একটি লিংক দেওয়া হয়, যেখানে ক্লিক করে অর্থ পরিশোধ করতে বলা হয়। ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) জানিয়েছে, এসব বার্তার মাধ্যমে শুধু অর্থ হাতিয়ে নেওয়া নয়, ব্যক্তিগত তথ্যও চুরি করা হয়। তবে প্রতারকেরা লক্ষ্য নির্ধারণে ভুল করছে, যার ফলে এমন অনেক ব্যক্তি এসব বার্তা পাচ্ছেন, যাঁরা কখনো সংশ্লিষ্ট টোল সিস্টেম ব্যবহার করেননি বা ওই রাজ্যের সঙ্গে কোনো সংযোগ নেই।

এ ধরনের প্রতারণা থেকে নিরাপদ থাকতে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। অপরিচিত বা সন্দেহজনক নম্বর থেকে ফোন এলে ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করা যাবে না। যদি কেউ সরকারি সংস্থা বা ব্যাংকের পরিচয়ে ফোন করে, তাহলে নম্বরটি যাচাই করা জরুরি। সন্দেহ হলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার অফিশিয়াল নম্বরে ফোন করে নিশ্চিত হতে হবে। একইভাবে কোনো লিংক পাঠানো হলে সেটিতে ক্লিক করা যাবে না এবং ব্যাংক বা কার্ডের তথ্য দেওয়া উচিত নয়। প্রতারণার শিকার হলে দ্রুত স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাতে হবে।

সূত্র: ডেইলি মেইল

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র পর শ ধ

এছাড়াও পড়ুন:

শত্রুতার জেরে সাত গরুকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ, মারা গেছে ৩টি

গোপালগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিনটি গরু হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আরো চারটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে দুই কৃষক পরিবারের অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার (১ নভেম্বর) মধ্যরাতে সদর উপজেলার সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কীভাবে গরুগুলো মারা গেছে তা খতিয়ে দেখতে নমুনা সংগ্রহ করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। পুলিশ বলছে, তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

আরো পড়ুন:

‎নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত

গাইবান্ধায় ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা: মামলা দায়ের 

এলাকাসাসী জানান, সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামের দুই ভাই মো. রাসুল গাজী ও হাসিব গাজী কৃষি কাজ করে সংসার চালান। তারা খামার করে কয়েকটি গরু লালন-পালন করছেন। শনিবার মধ্যরাত সাড়ে ১২টার দিকে গরুর গোঙানির শব্দ শুনে পাশের বাড়ির এক আত্মীয় ছুটে গিয়ে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন দুই ভাইকে। তারা স্থানীয় পশু চিকিৎসককে খবর দেন। সকাল হওয়ার আগেই তিনটি গরু মারা যায়। একই গোয়াল ঘরে থাকা একটি বড় ষাঁড়, একটি বাছুর ও অপর গোয়ালে থাকা দুটি ষাঁড় এখনো অসুস্থ। 

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মো. রাসুল গাজী জানান, শত্রুতা করেই খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাদের গরুগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। রাতেই টের পেয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেও বাঁচানো যায়নি গরুগুলো। দুই ভাইয়ের আরো চারটি গরু অসুস্থ রয়েছে। এতে তাদের অন্তত ৫-৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

তিনি জানান, এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

কারা তাদের গরু হত্যা করেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাসুল গাজী বলেন, “ঘর থেকে বের হয়ে কয়েকজনকে দৌঁড়ে যেতে দেখেছি। তাদের চেহারা দেখতে পারিনি। ফলে কাউকে চিনতে পারিনি।” 

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হাসিব গাজী বলেন, ‍“কারো সঙ্গে আমাদের শত্রুতা থাকতেই পারে। এই অবলা পশুগুলো কার কী ক্ষতি করেছে। কোন অপরাধে এদের হত্যা করা হলো। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

এলাকাবাসী মো. ইমদাদ শেখ বলেন, “গত শনিবার রাতে বৃষ্টি হয়। এই সুযোগে গরুগুলোকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”

গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সর্দার বলেন, “সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে কয়েকটি গরুকে বিষ খাওয়ানো হয় এমন খবর পেয়ে সকালে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। তিনি অসুস্থ গরুগুলোকে চিকিৎসা দেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পয়জনজনিত কারণেই গরুগুলো মারা গেছে। মারা যাওয়া গরুর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই গরু তিনটির মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”

গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে তদন্ত শুরু করি। মারা যাওয়া গোরুগুলোর নমুনা সংগ্রহ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ