Prothomalo:
2025-05-01@11:19:05 GMT

লোকবল নিয়োগ দিতে কেন গড়িমসি

Published: 18th, February 2025 GMT

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে আদৌ কোনো অভিভাবক আছে কি না, তা যে একটি বড়সড় প্রশ্ন, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি তার জলজ্যান্ত দৃষ্টান্ত। অবকাঠামো নির্মাণ ও চিকিৎসার সরঞ্জাম কেনা বাবদ কয়েক শ কোটি টাকা ব্যয় হওয়ার পরও সেটি চালু করা যায়নি। তার কারণ হলো, নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার ১৪ মাস পার হলেও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির লোকবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ফলে কুষ্টিয়া ও আশপাশের কয়েকটি জেলার মানুষ সুলভে চিকিৎসাসেবা পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আর মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা তাঁদের ক্লিনিক্যাল ক্লাস করতে গিয়ে অসুবিধায় পড়ছেন।

প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, ২০১১ সালে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১২-১৩ অর্থবছরে একনেকে অনুমোদন পাওয়ার পর কলেজ ক্যাম্পাস ও হাসপাতালের নির্মাণকাজ শুরু হয়। দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে কাজ বন্ধ থাকা এবং কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে এবং সেই সঙ্গে ব্যয় বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পুরো নির্মাণকাজ শেষ হয়। ২০২২ সালের এপ্রিলে মূল ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়। হাসপাতালটি চালু না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের তিন কিলোমিটার দূরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ক্লিনিক্যাল ক্লাস করতে যেতে হয়।

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাততলা ভবনে ৫০০ শয্যার পাশাপাশি ৮৮টি কেবিন, ২৩ শয্যার সিসিইউ ও ২০ শয্যার আইসিইউ রয়েছে। এ ছাড়া জরুরি সেবা দেওয়ার জন্য আলাদা আরও ১৩০ শয্যার ব্যবস্থা চালু আছে। হাসপাতালটি চালুর জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ৪১৪ জন জনবল নিয়োগ না দেওয়ায় হাসপাতালটির কার্যক্রম চালু করা যাচ্ছে না।

প্রায় ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে এমআরআই মেশিন, সিটি স্ক্যান, এক্স–রে মেশিন, আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন অস্ত্রোপচারকক্ষে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও আসবাব গুদামবন্দী করে রাখা হয়েছে। হাসপাতালটির পরিচালকের দাবি, যাঁরা এসব কিনেছেন এবং কেনাকাটা ও রিসিভ করার দায়িত্বে যে কমিটি ছিল, তারা এগুলো বুঝিয়ে দিচ্ছে না। অথচ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একজন চিকিৎসক যে অভিযোগ করেছেন, সেটা অত্যন্ত গুরুতর। এসব চিকিৎসা যন্ত্রপাতি নিয়ে দুই পক্ষের ঠেলাঠেলি চলায় কেউ বুঝিয়েও দিচ্ছে না, কেউ বুঝেও নিচ্ছে না। এই ঠেলাঠেলিতে একমাত্র যে লাভটা হচ্ছে তা হলো, প্যাকেটবন্দী যন্ত্রপাতিগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর থেকে বড় দায়হীনতার পরিচয় আর কী হতে পারে?

যে মেডিকেল কলেজে ২০১১ সালে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে, সেই মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চালু হতে কেন ১৫ বছর লেগে যাবে? কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি চালু করার জন্য কলেজের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দুই দফা আন্দোলন করতে হয়েছে। স্বাস্থ্যের নেতৃত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের বধিরতার চিকিৎসা কে করবে? দয়া করে লোকবল নিয়োগ দিয়ে হাসপাতালটি চালু করুন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চমেক শিক্ষার্থী আবিদুর হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত ১২ জনকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) শিক্ষার্থী আবিদুর রহমান আবিদকে ১৪ বছর আগে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে খালাস পাওয়া ১২ জনকে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে বাদীর করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে। তখন চমেকের ৫১তম ব্যাচের বিডিএস তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন আবিদুর রহমান। তাঁর বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উত্তর বড়ইতলী গ্রামে। আর আসামিরা চমেক ছাত্রলীগ (বর্তমানে নিষিদ্ধ) শাখার তৎকালীন নেতা-কর্মী ছিলেন।

মামলার এজাহারের ভাষ্য, ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর বেলা আড়াইটা, সন্ধ্যা ৭টা ও রাত ১০টায় তিন দফা পিটুনির পর চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে আবিদুর রহমানকে তাঁর বোনের বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে তাঁর চিকিৎসা করার ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে আসামিরা বাধা দেন। পরদিন তাঁকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১১ সালের ২১ অক্টোবর রাত সাড়ে আটটার দিকে মারা যান আবিদুর রহমান।

এ ঘটনায় আবিদুর রহমানের মামা নেয়ামত উল্লাহ বাদী হয়ে ছাত্রলীগের তৎকালীন ২২ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ২৩ অক্টোবর চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুলিশ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আর এজাহারভুক্ত অপর ১০ আসামিকে মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

আলোচিত এ হত্যা মামলার বিচার শেষে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই রায় দেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী। রায়ে আসামিদের খালাস দেওয়া হয়।

বিচারিক আদালতের রায়ে খালাসপ্রাপ্ত ১২ জন হলেন ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত ছাত্রসংসদের তৎকালীন সহসভাপতি (ভিপি) মফিজুর রহমান জুম্মা, চমেক ছাত্রলীগ শাখার তৎকালীন সভাপতি সোহেল পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক বিজয় সরকার, সহসাধারণ সম্পাদক হিমেল চাকমা, ফেরদৌস রাসেল, শান্ত দেবনাথ, মাহাফুজুর রহমান, ধীমান নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, দেবাশীষ চক্রবর্তী, মোস্তফা কামাল, রাশেদুর রেজা সানি ও সালমান মাহমুদ সিদ্দিকী ওরফে রাফসান।

খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে ২ হাজার ৪৭ দিন বিলম্ব মার্জনা চেয়ে চলতি মাসে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন মামলার বাদী।

আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. ওজিউল্লাহ, আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির, আজিমুদ্দিন পাটোয়ারী ও ইয়াছিন আলফাজ শুনানিতে ছিলেন।

পরে আবেদনকারীর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির প্রথম আলোকে বলেন, ১২ জনকে ৩০ দিনের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রুলে বিচারিক আদালতের দেওয়া রায় কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চমেক শিক্ষার্থী আবিদ হত্যা: ১২ আসামিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
  • চমেক শিক্ষার্থী আবিদ হত্যা ১২ আসামিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
  • চমেক শিক্ষার্থী আবিদুর হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত ১২ জনকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
  • তাইজুলকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে অবমূল্যায়িত বোলার’ বললেন তামিম