Prothomalo:
2025-11-03@19:26:38 GMT

লোকবল নিয়োগ দিতে কেন গড়িমসি

Published: 18th, February 2025 GMT

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে আদৌ কোনো অভিভাবক আছে কি না, তা যে একটি বড়সড় প্রশ্ন, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি তার জলজ্যান্ত দৃষ্টান্ত। অবকাঠামো নির্মাণ ও চিকিৎসার সরঞ্জাম কেনা বাবদ কয়েক শ কোটি টাকা ব্যয় হওয়ার পরও সেটি চালু করা যায়নি। তার কারণ হলো, নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার ১৪ মাস পার হলেও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির লোকবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ফলে কুষ্টিয়া ও আশপাশের কয়েকটি জেলার মানুষ সুলভে চিকিৎসাসেবা পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আর মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা তাঁদের ক্লিনিক্যাল ক্লাস করতে গিয়ে অসুবিধায় পড়ছেন।

প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, ২০১১ সালে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১২-১৩ অর্থবছরে একনেকে অনুমোদন পাওয়ার পর কলেজ ক্যাম্পাস ও হাসপাতালের নির্মাণকাজ শুরু হয়। দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে কাজ বন্ধ থাকা এবং কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে এবং সেই সঙ্গে ব্যয় বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পুরো নির্মাণকাজ শেষ হয়। ২০২২ সালের এপ্রিলে মূল ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়। হাসপাতালটি চালু না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের তিন কিলোমিটার দূরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ক্লিনিক্যাল ক্লাস করতে যেতে হয়।

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাততলা ভবনে ৫০০ শয্যার পাশাপাশি ৮৮টি কেবিন, ২৩ শয্যার সিসিইউ ও ২০ শয্যার আইসিইউ রয়েছে। এ ছাড়া জরুরি সেবা দেওয়ার জন্য আলাদা আরও ১৩০ শয্যার ব্যবস্থা চালু আছে। হাসপাতালটি চালুর জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ৪১৪ জন জনবল নিয়োগ না দেওয়ায় হাসপাতালটির কার্যক্রম চালু করা যাচ্ছে না।

প্রায় ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে এমআরআই মেশিন, সিটি স্ক্যান, এক্স–রে মেশিন, আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন অস্ত্রোপচারকক্ষে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও আসবাব গুদামবন্দী করে রাখা হয়েছে। হাসপাতালটির পরিচালকের দাবি, যাঁরা এসব কিনেছেন এবং কেনাকাটা ও রিসিভ করার দায়িত্বে যে কমিটি ছিল, তারা এগুলো বুঝিয়ে দিচ্ছে না। অথচ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একজন চিকিৎসক যে অভিযোগ করেছেন, সেটা অত্যন্ত গুরুতর। এসব চিকিৎসা যন্ত্রপাতি নিয়ে দুই পক্ষের ঠেলাঠেলি চলায় কেউ বুঝিয়েও দিচ্ছে না, কেউ বুঝেও নিচ্ছে না। এই ঠেলাঠেলিতে একমাত্র যে লাভটা হচ্ছে তা হলো, প্যাকেটবন্দী যন্ত্রপাতিগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর থেকে বড় দায়হীনতার পরিচয় আর কী হতে পারে?

যে মেডিকেল কলেজে ২০১১ সালে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে, সেই মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চালু হতে কেন ১৫ বছর লেগে যাবে? কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি চালু করার জন্য কলেজের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দুই দফা আন্দোলন করতে হয়েছে। স্বাস্থ্যের নেতৃত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের বধিরতার চিকিৎসা কে করবে? দয়া করে লোকবল নিয়োগ দিয়ে হাসপাতালটি চালু করুন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

স্টিভ জবসের পথেই রয়েছেন টিম কুক

অ্যাপল কম্পিউটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসের পর ২০১১ সাল থেকে অ্যাপলকে বেশ ভালোভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টিম কুক। তাঁর নেতৃত্বেই অ্যাপল বর্তমানে প্রায় চার লাখ কোটি মার্কিন ডলারের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। প্রযুক্তি দুনিয়ার শীর্ষ তিন প্রতিষ্ঠানের একটি হিসেবে পরিচিত অ্যাপল নিত্যনতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনেও পিছিয়ে নেই।

টিম কুকের জন্ম ১৯৬০ সালের ১ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা অঙ্গরাজ্যের মোবাইল শহরে। অবার্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক এবং ডিউক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করার পর তিনি প্রযুক্তিশিল্পে কর্মজীবন শুরু করেন। অ্যাপলে যোগদানের আগে তিনি আইবিএমের পার্সোনাল কম্পিউটার ব্যবসায় ১২ বছর কাজ করেন। পরবর্তী সময়ে ইন্টেলিজেন্ট ইলেকট্রনিকস ও কম্প্যাকের মতো প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯৮ সালে স্টিভ জবসের আমন্ত্রণে অ্যাপলে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অব ওয়ার্ল্ডওয়াইড অপারেশনস পদে যোগ দেন টিম কুক। দ্রুতই অ্যাপলের সরবরাহ শৃঙ্খল ও  উৎপাদনব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি অ্যাপলের কারখানা বন্ধ করে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রযুক্তিপণ্য তৈরি শুরু করেন তিনি। ফলে অ্যাপলের উৎপাদন খরচও কমে আসে। ২০০৫ সালে তিনি অ্যাপলের চিফ অপারেটিং অফিসার পদে পদোন্নতি পান। স্টিভ জবসের অসুস্থতার সময় তিনি একাধিকবার অ্যাপলের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন টিম কুক।

জবসের মৃত্যুর কয়েক মাস আগে ২০১১ সালের আগস্ট মাসে টিম কুক আনুষ্ঠানিকভাবে অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর পর থেকেই স্টিভ জবসের উদ্ভাবনী জাদুকরের ভাবমূর্তি থেকে বেরিয়ে এসে টিম কুক অ্যাপলকে দক্ষভাবে পরিচালনা করছেন। তাঁর নেতৃত্বেই অ্যাপল বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়ন বা এক লাখ কোটি মার্কিন ডলারের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।

অ্যাপল ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করার জন্যও আলোচিত টিম কুক। তাঁর নেতৃত্বেই অ্যাপল ওয়াচ ও এয়ারপডসের মতো সফল পণ্য বাজারে আসে এবং ইন্টেলের পরিবর্তে নিজস্ব চিপ এম১ প্রসেসর ব্যবহার শুরু করে অ্যাপল, যা অ্যাপলের অন্যতম সাহসী ও সফল কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে ধরা হয়। বর্তমানে প্রযুক্তিশিল্পের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি পেলেও স্টিভ জবসের গড়ে তোলা আইফোন আর ম্যাকের মতো প্রযুক্তিপণ্যের উদ্ভাবনের ধারাকে অব্যাহত রেখেছেন টিম কুক।

সূত্র: অ্যাপল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • স্টিভ জবসের পথেই রয়েছেন টিম কুক