গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের এক মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় আরও দুই মাস বাড়ানো হয়েছে। আগামী ২০ এপ্রিল সময় নির্ধারণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

পাশাপাশি মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেক মামলায় সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ৪৫ জন মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, আমলার বিষয়েও তদন্ত প্রতিবেদনের সময় বাড়িয়ে ২০ এপ্রিল করা হয়েছে। ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সোলাইমান সেলিমকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ছেলে। সোলাইমান সেলিম এখন অন্য মামলায় গ্রেপ্তার আছেন। তিনিও ৪৫ আসামির একজন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো.

গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আজ সোমবার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

আজকে ট্রাইব্যুনালের কাছে সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনের কাজ শেষ পর্যায়ে আছে। দুই মাস সময় চাইলেও তার আগেই প্রতিবেদন দাখিল করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।

ট্রাইব্যুনাল বলেন, সময় লাগলে সময় নেন। তবে অপূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবেন না। পরে দুই মাস সময় মঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল।

আদালতে সব আসামির পক্ষে ওকালতনামা জমা দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না। আদালতকে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর মৃত্যুর ভুল খবর ছড়িয়েছে।

শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরসহ এই ৪৬ জনের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় এ নিয়ে তিন দফা বাড়ানো হলো। এর আগে প্রথম দফায় এক মাস ও দ্বিতীয় দফায় দুই মাস সময় বাড়ানো হয়।

ট্রাইব্যুনালে শুনানির সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেক মামলার ১৬ জন আসামিকে হাজির করা হয়। তাঁরা হলেন সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, মো. আব্দুর রাজ্জাক, কামরুল ইসলাম, মুহাম্মদ ফারুক খান, দীপু মনি, গোলাম দস্তগীর গাজী, শাজাহান খান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ, কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক সচিব মো. জাহাংগীর আলম ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সময় ব ড় মন ত র র সময় সদস য অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

হাদিকে গুলির ঘটনা আ.লীগের নির্বাচনবিরোধী ছকের অংশ: নাহিদ

ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনা কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নির্বাচনবিরোধী ছকের অংশ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এই মন্তব্য করেন তিনি।

আরো পড়ুন:

জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাতের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান

দুর্নীতি-সন্ত্রাসের অভিযোগ পেলে প্রার্থিতা বাতিল: নাহিদ 

নাহিদ ইসলাম বলেন, “হাদির ওপর হামলা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, আওয়ামী লীগের নির্বাচনবিরোধী ছকের অংশ।”

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগকে নরমালাইজ করার চেষ্টা চলছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা দেখছি।”

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় সব জায়গায় আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করা, প্রশাসনিকভাবে প্রতিহত করা এবং ভারতের হস্তক্ষেপ বন্ধ করার কথা বলেছি।”

পতিতরা নির্বাচন ঠেকাতে চাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সবাইকে দায়িত্ব নিয়ে নির্বাচনি পরিবেশ ফেরাতে হবে।”

নাহিদ বলেন, “আমরা সর্বাত্মকভাবে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখব বলেছি। হামলাকারী ও পরিকল্পনাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছি।”

এর আগে সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে করেছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বৈঠকে তিনটি দলের দুজন করে প্রতিনিধি অংশ নেন।

বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন-দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দলে ছিলেন-দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।

এছাড়া এনসিপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন- দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ।

ঢাকা/রায়হান/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ