বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ৫ আগস্ট একজন খুনি এদেশ থেকে পালিয়ে গেছে। ভারত সরকার শুধু পলাতক স্বৈরাচারকে মনে রেখেছে, বাংলাদেশের জনগণকে নয়। তাই পানির জন্য জন্য দেশের মানুষকে আন্দোলন করতে হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, পানির ন্যায্য হিস্যা কারো করুণার বিষয় নয়। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এটা বাংলাদেশের মানুষের প্রাপ্য। ভারত ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনে অপ্রতিবেশিসুলভ আচরণ করেই চলছে।

মঙ্গলবার বিকেলে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ ব্যতিক্রমধর্মী আন্দোলনের টানা ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তিস্তা নদীর রক্ষা আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়কারী বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু সভাপতিত্ব করেন।

সমাবেশে তিনি আরো বলেন, পলাতক স্বৈরাচার বলেছিলেন ভারতকে যা দিয়েছি তা ভারত সারাজীবন মনে রাখবে। ক্ষমতায় থাকার জন্য পলাতক স্বৈরাচার ভারতকে যা দিয়েছে আর ভারত পলাতক স্বৈরাচারকে যা দিয়েছে তা কেবল তাকে আশ্রয় দেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। বাংলাদেশের মানুষ কিছুই পায়নি।

ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখার ক্ষেত্রে তিনি বলেন, সম্পর্ক রক্ষা করার ক্ষেত্রে নিজ দেশের স্বার্থকে প্রথম ও প্রধান অগ্রাধিকার দিতে হবে। বন্ধুত্বের দোহাই দিয়ে সীমান্তের কাঁটাতারে ঝুলন্ত ফেলানীর লাশ আর দেখতে চাই না, আর কোনো বাংলাদেশির রক্তাক্ত লাশ দেখতে চায় না এদেশের জনগণ। জনতার এই মহাসমাবেশে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক লোক উপস্থিত ছিল।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, কোনো হটকারী সিদ্ধান্তের কারণে যেন স্বৈরাচার ও খুনির দলের পুনর্বাসন না হয়। এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে অতীতের মতন। গণতান্ত্রিক দলগুলোর পক্ষ থেকে জাতীয় নির্বাচনের কথা শুনলে অন্তর্বর্তী সরকারের কেউ কেউ বিচলিত হয়ে ওঠেন।

তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একেক উপদেষ্টার একেক সময়ের বক্তব্য খুনি ও মাফিয়া চক্রকে দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা তৈরির পথ সুগম করে দেয়। এজন্য প্রতিটি গণতান্ত্রিক দল এই সরকারকে রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য বারবার আহ্বান জানিয়ে আসছে।

এদিকে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ আন্দোলনের টানা ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে পদযাত্রা, তিস্তা নদী হেঁটে পার হওয়া ও মঞ্চে ভাওয়াইয়া গান পরিবেশিত হয়। বেলা ১১টায় লালমনিরহাটের তিস্তা সড়ক সেতু হতে পদযাত্রা শুরু হয়ে তা কাউনিয়া পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। পরে পদযাত্রাটি ফিরে আসে লালমনিরহাট সেতু এলাকায়।

তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়কারী আসাদুল হাবিব দুলুর নেতৃত্বে এই পদযাত্রায় প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার লোক অংশগ্রহণ করেন। পরে বিকেল তিনটায় সেতু সংলগ্ন তিস্তা নদীতে হেঁটে পার হয় কয়েক হাজার মানুষ। এ সময় তারা বিভিন্ন প্লেকার্ড বহন করে।

তিস্তা নদীর রক্ষা আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়কারী আসাদুল হাবিব বলেন, তিস্তা নদীতে হেঁটে পার হয়ে আমরা বিশ্বকে প্রমাণ করে দিয়েছি নদীতে পানি নেই।

তিস্তা সড়ক সেতু ও রেলসেতুর মাঝামাঝি এলাকায় চরে দিনভর বিভিন্ন গ্রামীণ খেলায় মেতে ওঠেন এখানকার মানুষজন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ত র ক রহম ন পদয ত র ব এনপ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমির খসরু

কোনও মহামানবকে বাংলাদেশের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য দেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

সোমবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, কোনও মহামানব কোনও দেশের গণতন্ত্রের সমাধান দেবে তার জন্য দেশের জনগণকে অপেক্ষা করতে হবে, এটা বিশ্বাস করার কারণ নেই।

এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় ন্যাপ ভাসানীর সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত উপস্থিত ছিলেন।

পরে বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে আমজনতার দলের সঙ্গে বৈঠকে করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। আমজনতার দলের আহ্বায়ক কর্নেল অব. মিয়া মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে বাংলাদেশ পিপলস পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির নেতারা।

বিএনপির পক্ষে বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন।

আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু বলেন, মানুষ বলতে কারা? আমার বুঝতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি, যারা জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করছে। যারা রাজনৈতিক দল হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাস্তায় লড়াই করেছে, আমাদের সঙ্গে যারা রাস্তায় ছিল, ইতোমধ্যে প্রায় ৫০টি দল, পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করেছে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের জন্য।

তিনি আরও বলেন, সংস্কারের জন্য যে কথাগুলো বলা হয়, সংস্কারের ব্যাপারে যেখানে ঐকমত্য হবে- সেই সংস্কারগুলো দ্রুত করে নির্বাচন কমিশনকে বলা হোক, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে রোডম্যাপ দিয়ে ভোটের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। তো জনগণ বলতে কারা? 

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এখন জনগণ বলতে যদি কোনও একটি বিশেষ গোষ্ঠী, সুবিধাভোগী- যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়ে, জনগণের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে গিয়ে গণতন্ত্রকে সংস্কারের মুখোমুখি করছে! এটা তো কারও বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কারণ নেই। ১৬ বছরের যুদ্ধটা ছিল গণতন্ত্রের জন্য, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনার জন্য। যে সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে, তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। সেটা যে সরকারই হোক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মোদির যুদ্ধপ্রবণ মনোভাবের নিন্দা ইমরান খানের
  • ‘মানবিক করিডর’ প্রদানের বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন: জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
  • কোনো মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমীর খসরু
  • কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমীর খসরু
  • কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমির খসরু