আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না
Published: 18th, February 2025 GMT
ঢালাওভাবে মামলার অভিযোগে কুমিল্লা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা অংশ নিচ্ছেন না। মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র কেনার শেষ দিন আওয়ামী লীগ সমর্থিত কোনো আইনজীবী মনোনয়ন ফরম না কেনায় নির্বাচনে তাদের অংশ না নেওয়ায় বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যায়। আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের অভিযোগ ‘তাদের নির্বাচন থেকে বিরত রাখতেই আগাম মামলা দেওয়া হয়।’
এদিকে বুধবার বিকাল ৫টার মধ্যে কেনা মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। যদিও আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা বলছেন ‘গঠনতন্ত্রে ফরম কেনা ও জমা দিতে ৩ দিনের সময় দেওয়ার বিধান থাকলেও এবার রাখা হয়েছে একদিন।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা অভিযোগ করেন, ৬ ফেব্রুয়ারি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা আদালত চত্বরে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন। একই দিন তারা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোস্তফিজুর রহমান লিটন ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ভূইয়ার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে ১২ ফেব্রুয়ারি বৈষম্যবিরোধ ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক মো.
আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোস্তফাফিজুর রহমান লিটন সমকালকে বলেন, এটা দেশের জেলা আইনজীবী সমিতির মধ্যে একটি রেকর্ড, যেখানে সভাপতি ও সেক্রেটারিসহ একসঙ্গে ৩২ জন আইনজীবীকে ৩ আগস্ট ছাত্রজনতার মিছিলে হামলার ঘটনায় আসামি করা হয়। তিনি বলেন, কৌশলে আমাদের নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে এবারের তফসিল ঘোষণা করা হয়। গঠনতন্ত্র অমান্য করে মনোনয়ন ফরম কেনা ও জমার তিনদিনের সময় দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয়েছে একদিন। নির্বাচনের সময়ও এগিয়ে আনা হয়েছে এক সপ্তাহ। ওই আইনজীবী নেতার ভাষ্য ‘আমরা আদালত চত্বরে যাওয়ার পরিবেশ পাইনি, সেখানে মহড়া দেওয়া হয়েছে। আমাদের নিরাপত্তা নিয়েও সংশয় ছিল। তাই আমাদের কেউ ফরম আনতে যায়নি।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট কাজী মফিজুল ইসলাম বলেন, এ মামলার সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক নাই। যারা টাকা জমা দিয়েছেন ও বৈধ ভোটার তারাই মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন। যারা ফরম নিয়েছেন তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কোনো আইনজীবী নেই। তারা (আওয়ামী লীগ) আসলে মনোনয়ন ফরম নিতে পারতেন। মামলার ভয়ে হয়তো আসেননি।
এর আগে, সোমবার নির্বাচনের তফসিল ঘোঘণা করা হয়। ঘোষিত তফসিল অনুসারে মঙ্গলবার ফরম বিক্রি করা হয়। জমা ১৯ ফেব্রুয়ারি এবং মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইও একই দিন বিকেলে। প্রত্যাহার ২৩ এবং চূড়ান্ত তালিকা ২৪ ফেব্রুয়ারি এবং ৬ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবার ভোটার রয়েছেন ১ হাজার ২১০ জন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ আইনজ ব ল গ সমর থ ত আইনজ ব র আওয় ম ফরম ন
এছাড়াও পড়ুন:
বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।
প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।
যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।
এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।
পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।
অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।
একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।