জেন্ডার সংবেদনশীল প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকখানি এগিয়েছে। কিন্তু অনলাইনে হয়রানি, সাইবার বুলিং ও জেন্ডার অসংবেদনশীল ভাষার ব্যবহারও হচ্ছে। অনলাইন সংবাদমাধ্যমগুলো অনেক ক্ষেত্রে জেন্ডার অসংবেদনশীল ভাষার ব্যবহার করছে, যা উদ্বেগজনক। অনেক ক্ষেত্রে গণমাধ্যমে ভুক্তভোগীদের দোষারোপ করার প্রবণতা দেখা যায়, যা বন্ধ হওয়া উচিত।

জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আজ সোমবার ‘গণমাধ্যমে জেন্ডার সংবেদনশীল ভাষা’ শীর্ষক মুক্ত আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

‘সমতায় তারুণ্য: ইয়ুথ ফর ইকুয়ালিটি’ প্রকল্পের আওতায় প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ আয়োজিত এই মুক্ত আলোচনায় শিক্ষাবিদ, গণমাধ্যমকর্মী, সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট নির্মাতা এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা অংশ নেন। তাঁরা জানান, সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রিন্ট ও অনলাইন সংস্করণের মধ্যে বিরাট পার্থক্য রয়েছে, যা কমিয়ে দুটো মাধ্যমকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করা প্রয়োজন।

আলোচনা পরিচালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.

মোহাম্মদ খোরশেদ আলম। তিনি বলেন, গণমাধ্যমে সামাজিক, রাজনৈতিক চাপ ও সেন্সরশিপ রয়েছে, যা কমানো উচিত। গণমাধ্যমে ভুক্তভোগীদের দোষারোপ করার প্রবণতা রয়েছে, সেটিও বন্ধ করা উচিত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সানজিদা আক্তার বলেন, গণমাধ্যমে নারীদের সম্পর্কে অনুমাননির্ভর সংবাদ প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে তা খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এবং মানুষের ধারণাকে প্রভাবিত করে। অনেক সময় পরে তা ভুল বলে প্রমাণিত হয়। কিন্তু ততক্ষণে ভুল বার্তা সবার কাছে পৌঁছে যায়।

ঢাকায় নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার (জেন্ডার ও সিভিল সোসাইটি) মাশফিকা জামান সাটিয়ার বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রত্যেক নারীই কোনো না কোনোভাবে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন। বাংলাদেশে দুজন নারী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বহু বছর, কিন্তু পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। মাঝে মাঝে গণমাধ্যমে নারীদের খুব তুচ্ছভাবে ও ছোট করে চিত্রায়ণ করা হয়, কিন্তু আমরা গণমাধ্যমের কনটেন্টে নারী-পুরুষের সমান চিত্রায়ণ দেখতে চাই।’

আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) সহযোগী অধ্যাপক (অস্থায়ী) মনিরা শরমিন, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের ডিরেক্টর (ইনফ্লুয়েন্সিং, ক্যাম্পেইন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস) নিশাত সুলতানা, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সালমা হাসনায়েন, ডেইলি স্টারের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জায়মা ইসলাম প্রমুখ।

আয়োজকেরা জানান, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে জেন্ডার সংবেদনশীল সাংবাদিকতার ওপর একটি পুস্তিকা ও তথ্যচিত্র তৈরি করবে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ। এতে তিন শতাধিক সাংবাদিককে এর ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

নেদারল্যান্ডস সরকারের অর্থায়নে চার বছর মেয়াদি সমতায় তারুণ্য প্রকল্পটি বাংলাদেশের আটটি বিভাগে যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট। বাংলাদেশের আটটি বিভাগে প্রকল্পের টার্গেটেড (লক্ষ্যিত) জনগোষ্ঠী মোট ১৩ হাজার ৫১৫ জন। তাদের মধ্যে স্থানীয় ২৫২টি যুব নেতৃত্বাধীন সংগঠনের যুব সদস্য, জাতীয় যুব কাউন্সিলের সদস্য, বাংলাদেশি গণমাধ্যমকর্মী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কনটেন্ট নির্মাতা রয়েছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ন ড র স ব দনশ ল স ব দনশ ল ভ ষ

এছাড়াও পড়ুন:

ডিএসইর পিই রেশিও বেড়েছে ১.৯৪ শতাংশ

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে (২৭ থেকে ৩১ জুলাই) পর্যন্ত সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) বেড়েছে। আলোচ্য এ সময়ে ডিএসইর পিই রেশিও বেড়েছে ১.৯৪ শতাংশ।

শনিবার (২ আগস্ট) ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য মতে, বিদায়ী সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ১০.৩১ পয়েন্টে। আর সপ্তাহ শেষে তা অবস্থান করছে ১০.৫১ পয়েন্টে। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর পিই রেশিও বেড়েছে ০.২০ পয়েন্ট বা ১.৯৪ শতাংশ।

এর আগের সপ্তাহের (২৪ থেকে ২৮ জুলাই) শুরুতে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ৯.৭১ পয়েন্টে। আর সপ্তাহ শেষে তা অবস্থান করছে ১০.৩১ পয়েন্টে। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর পিই রেশিও বেড়েছে ০.৬০ পয়েন্ট বা ৬.১৮ শতাংশ।

খাতভিত্তিক পিই রেশিওগুলোর মধ্যে- জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ৬.১০ পয়েন্টে, ব্যাংক খাতে ৭.১৯ পয়েন্টে, সেবা ও আবাসন খাতে ৯.৮৯ পয়েন্ট, টেক্সটাইল খাতে ১০.৭০ পয়েন্টে, ওষুধ ও রসায়ন খাতে ১১.০৮ পয়েন্টে, প্রকৌশল খাতে ১১.৩৫ পয়েন্টে, আর্থিক খাতে ১২.৬০ পয়েন্টে, সাধারণ বিমা খাতে ১২.৭৭ পয়েন্টে, সিমেন্ট খাতে ১৪.১০ পয়েন্টে, টেলিযোগাযোগ খাতে ১৪.৯৪ পয়েন্টে, আইটি খাতে ১৬.৩১ পয়েন্টে, বিবিধ খাতে ১৬.৬৫ পয়েন্টে, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ১৭.৯৬ পয়েন্ট, মিউচুয়াল ফান্ড খাতে ১৮.৪৩ পয়েন্টে, পেপার ও প্রিন্টিং খাতে ২১.৮১ পয়েন্টে, খাদ্য ও আনুসঙ্গিক খাতে ২১.৯৩ পয়েন্টে, পাট খাতে ২৬.১৯ পয়েন্টে, ট্যানারি খাতে ২৬.৭৭ পয়েন্টে,   এবং সিরামিক খাতে ৫৭.৪৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

ঢাকা/এনটি/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ