অপরিকল্পিত খাল খননে ১২শ গাছ হুমকিতে
Published: 18th, February 2025 GMT
খুলনার ডুমুরিয়ায় সড়কের দুই পাশের ১২ শতাধিক নারকেল গাছ হুমকির মুখে পড়েছে। সড়কের পাশে অপরিকল্পিতভাবে খাল কাটায় গোড়ার মাটি ক্ষয়ে গিয়ে গাছগুলো হেলে পড়ছে। অনেক গাছ মরেও গেছে।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালে সরকারি অর্থায়নে উপজেলার থুকড়া-রংপুর ইউনিয়নের গফফার সড়কের দুই পাশ ঘেঁষে ৫ কিলোমিটারজুড়ে ১২ শতাধিক নারকেল গাছের চারা রোপণ করে এলজিইডি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তত্ত্বাবধানে এ সময় নারকেল গাছ পাহারার জন্য পাঁচজন নারী শ্রমিকের মজুরিসহ প্রকল্পটির বছরে ব্যয় ধরা হয় আড়াই লাখ টাকা। ২০০৪ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত গাছগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ওই নারী শ্রমিকদের নিয়োগ দেওয়া হয়।
২০১১ সাল থেকে নারকেল গাছগুলো পাহারায় কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ফলে এ সময়
থেকেই গাছগুলো অরক্ষিত হয়ে পড়ে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত মোট ৮ বছরে এ প্রকল্পের জন্য সরকারের ব্যয় দেখানো হয়েছে ২০ লাখ টাকা।
স্থানীয় গ্রামবাসীর ভাষ্য, সংশ্লিষ্ট বিভাগের অপরিকল্পনা, অনীহা ও স্থানীয় কিছু অবিবেচক মানুষের কারণে অনেক নারকেল গাছ নষ্ট হয়ে গেছে এবং বাকিগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। দৃষ্টিনন্দন এ গাছগুলো রক্ষার দাবি জানিয়েছেন তারা।
ডুমুরিয়া সদর ইউনিয়নের সাজিয়ারা গ্রামের অনিতা বিশ্বাস ও প্রমীলা রায় বলেন, ৫ কিলোমিটারজুড়ে নারকেল গাছগুলোয় প্রায় ৯ বছর আগে ফল ধরতে শুরু করে। আশপাশের গ্রামের মানুষ তাদের ইচ্ছেমতো ডাব ও গাছের পাতা কেটে নারকেল গাছগুলো উজাড় করছে।
ডুমুরিয়া এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বলছে, এ প্রকল্পের কোনো সুফলভোগী নেই। সরকারের পক্ষ থেকে নারকেল গাছগুলো রক্ষণাবেক্ষণের চেষ্টা করা হচ্ছে। স্থানীয় সুফলভোগীদের নিয়ে দল গঠনের বিষয়ে সরকারের কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবু সাঈদ সরদার রতন কুমার কুণ্ডু বলেন, কিছু লোক অপরিকল্পিতভাবে সড়কের দু’পাশ ঘেঁষে খাল কেটে মাছ চাষ করছেন। ফলে সড়কের পাশের মাটি ধসে যাচ্ছে। এ কারণে শিকড় ও গোড়া থেকে মাটি সরে গিয়ে গাছগুলো হেলে পড়ছে। ইতোমধ্যে অনেক গাছ মারা গেছে। মাটি ধসে যাওয়ায় জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কও ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।
ডুমুরিয়া সদর ইউনিয়নের আরাজী ডুমুরিয়া গ্রামের প্রাথমিকের শিক্ষক আব্দুল জব্বার বলেন, গফফার সড়কে অর্ধশতাধিক নারকেল গাছ খালের ভেতর ঝুঁকে পড়েছে। পরিবেশের ভারসাম্যের জন্য গাছগুলো রক্ষা করা জরুরি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইনছাদ ইবনে-আমিন বলেন, নারকেল ও তার গাছ বহুমুখী কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। থুকড়া-রংপুর গফফার সড়কে নারকেল গাছগুলো সত্যি দৃষ্টিনন্দন। গাছগুলো সবার উপকারে লাগে। তাই এগুলো রক্ষার দায়িত্বও সমাজের সব মানুষের।
উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, সরকারের রাজস্ব আদায়ে নারকেল গাছগুলো রক্ষায় পাহারার ব্যবস্থা করা হবে। প্রকল্পটিতে স্থানীয় গ্রামবাসীকে সম্পৃক্ত করে ইজারার আওতায় আনা হবে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রকল প সরক র র র জন য সড়ক র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন
প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।
শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।
আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেনরাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।
দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।
২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।
আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫