সব ধ্বংস করে শেখ হাসিনা ভারতের কোলে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন: মামুনুল হক
Published: 19th, February 2025 GMT
সব ধ্বংস করে শেখ হাসিনা তাঁর পরম প্রিয় ভারতের কোলে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। আজ বুধবার বিকেল ৫টার দিকে কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার টাউন হল মাঠে খেলাফত মজলিস কুমিল্লা জেলা ও মহানগর শাখা আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘শেখ হাসিনার মতো এমন কলঙ্কজনক অধ্যায় বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো শাসকের হয়নি। শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে করে পালিয়ে গিয়ে তাঁর পরম প্রিয় ভারতের কোলে আশ্রয় নিয়েছেন। যাওয়ার আগে যুবলীগকে হাতুড়ি লীগ বানিয়েছেন। ছাত্রলীগকে হেলমেট লীগ বানিয়ে তাদের হাতে পিস্তল, রিভলবার, বন্দুক তুলে দিয়ে আমার দেশের দামাল ছেলেদের বুকে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ধ্বংস করেছেন।’
বাংলাদেশে আবারও যাঁরা শেখ হাসিনা ও তাঁর ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করবেন, এ দেশের মানুষ তাঁদের ক্ষমা করবেন না বলে উল্লেখ করেন মামুনুল হক। তিনি বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের বিপ্লবে দুই হাজার দামাল সন্তানের রক্ত ঝরিয়েছে। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হতে হবে। বাংলাদেশ থেকে পাচার করা লাখ লাখ কোটি টাকা ফিরিয়ে এনে দেশ এবং জনগণের কল্যাণে ব্যয় করতে হবে। শেখ হাসিনা বিভাজনের রাজনীতি করতে গিয়ে দেশকে দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। এক ভাগ হলো রাজাকার, আরেক ভাগ হলো মুক্তিযোদ্ধা। কারা রাজাকার, কারা মুক্তিযোদ্ধা। যাঁরা শেখ হাসিনার আস্থাভাজন ছিলেন, তাঁরা মুক্তিযোদ্ধা। আর যাঁরা শেখ হাসিনার বিরাগভাজন, তাঁরাই রাজাকার। এই রাজাকার রাজাকার খেলতে গিয়ে দেশের চার কোটি ছাত্র-জনতাকে অপমান করেছিলেন হাসিনা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, আলিয়া মাদ্রাসা ও কাওমি মাদ্রাসার ছাত্র সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ল। স্লোগান তুলল “আমি কে, তুমি কে, রাজাকার রাকাজার”। তারা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে রাজপথে।’
মামুনুল হক আরও বলেন, একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হওয়ার পর শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানে বন্দিদশা থেকে মুক্তি লাভ করে গিয়েছিলেন লন্ডনে। লন্ডন থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে না এসে তিনি আগে গেলেন নয়াদিল্লিতে। সেখানে গেছেন ভারতের কাছে বোঝাপড়া করতে। সেখানে গিয়ে তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর প্রেসক্রিপশন নিয়ে আসলেন। ইন্দিরা গান্ধী তাঁকে বলে দিলেন, বাংলাদেশের সংবিধান ভারতের সংবিধানের মূলনীতির আলোকে রচনা করতে হবে। আর শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব সেটাই করলেন।
খেলাফত মজলিসের কুমিল্লা পূর্ব জেলার সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ওয়ালি উল্লাহর সভাপতিত্বে গণসমাবেশে বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আফজালুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমাদ প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ম ন ল হক
এছাড়াও পড়ুন:
আ.লীগের নামে কোনো দল রাজনীতি করতে পারবে না: ভিপি নুর
গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের নামে কোনো রাজনৈতিক দল রাজনীতি করতে পারবে না।
মঙ্গলবার বিকেলে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরের চেয়ারম্যান বাজারে আয়োজিত এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গণসমাবেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রসঙ্গে ভিপি নুর বলেন, এই সরকার সব রাজনৈতিক দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। এখানে বিরোধী দলের অবস্থান নেই, বরং সবাই মিলে রাষ্ট্র সংস্কার বাস্তবায়নে কাজ করছে। আমরা সরকারবিরোধী নই; বরং এই সরকারকে সহযোগিতা করছি।
আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা বারবার দাবি জানিয়ে আসছি— আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে সন্ত্রাসী ও গণহত্যাকারী সংগঠন হিসেবে অবিলম্বে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। ছাত্রলীগ ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ হয়েছে, আশা করি শিগগিরই আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নিষিদ্ধ হবে।
নুর বলেন, স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ও তার পরিবার, এমপি-মন্ত্রীরা উন্নয়নের বুলি শুনিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। সাধারণ নেতাকর্মীদের বিপদের মুখে ফেলে তাঁরা বিদেশে রাজকীয় জীবনযাপন করছে। দেশের মানুষ এখন এসব বুঝে ফেলেছে—তাদের আর বোকা বানানো যাবে না।
তিনি আরও বলেন, আগামী নির্বাচনে দেশের মানুষ গণঅধিকার পরিষদকে ভোট দেবে। আমরা তিনশ’ আসনে প্রার্থী দিব। শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া-সখিপুর) আসনে প্রার্থী হিসেবে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আখতারুজ্জামান সম্রাট মাঝিকে আমরা ঘোষণা করছি।
গণসমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, ফরিদপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমেদ মুন্সী, কেন্দ্রীয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আখতারুজ্জামান সম্রাট মাঝি, শরীয়তপুর জেলার সাবেক সদস্য সচিব ডা. শাহজালাল সাজু প্রমুখ।