সব ধ্বংস করে শেখ হাসিনা তাঁর পরম প্রিয় ভারতের কোলে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। আজ বুধবার বিকেল ৫টার দিকে কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার টাউন হল মাঠে খেলাফত মজলিস কুমিল্লা জেলা ও মহানগর শাখা আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘শেখ হাসিনার মতো এমন কলঙ্কজনক অধ্যায় বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো শাসকের হয়নি। শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে করে পালিয়ে গিয়ে তাঁর পরম প্রিয় ভারতের কোলে আশ্রয় নিয়েছেন। যাওয়ার আগে যুবলীগকে হাতুড়ি লীগ বানিয়েছেন। ছাত্রলীগকে হেলমেট লীগ বানিয়ে তাদের হাতে পিস্তল, রিভলবার, বন্দুক তুলে দিয়ে আমার দেশের দামাল ছেলেদের বুকে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ধ্বংস করেছেন।’

বাংলাদেশে আবারও যাঁরা শেখ হাসিনা ও তাঁর ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করবেন, এ দেশের মানুষ তাঁদের ক্ষমা করবেন না বলে উল্লেখ করেন মামুনুল হক। তিনি বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের বিপ্লবে দুই হাজার দামাল সন্তানের রক্ত ঝরিয়েছে। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হতে হবে। বাংলাদেশ থেকে পাচার করা লাখ লাখ কোটি টাকা ফিরিয়ে এনে দেশ এবং জনগণের কল্যাণে ব্যয় করতে হবে। শেখ হাসিনা বিভাজনের রাজনীতি করতে গিয়ে দেশকে দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। এক ভাগ হলো রাজাকার, আরেক ভাগ হলো মুক্তিযোদ্ধা। কারা রাজাকার, কারা মুক্তিযোদ্ধা। যাঁরা শেখ হাসিনার আস্থাভাজন ছিলেন, তাঁরা মুক্তিযোদ্ধা। আর যাঁরা শেখ হাসিনার বিরাগভাজন, তাঁরাই রাজাকার। এই রাজাকার রাজাকার খেলতে গিয়ে দেশের চার কোটি ছাত্র-জনতাকে অপমান করেছিলেন হাসিনা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, আলিয়া মাদ্রাসা ও কাওমি মাদ্রাসার ছাত্র সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ল। স্লোগান তুলল “আমি কে, তুমি কে, রাজাকার রাকাজার”। তারা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে রাজপথে।’

মামুনুল হক আরও বলেন, একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হওয়ার পর শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানে বন্দিদশা থেকে মুক্তি লাভ করে গিয়েছিলেন লন্ডনে। লন্ডন থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে না এসে তিনি আগে গেলেন নয়াদিল্লিতে। সেখানে গেছেন ভারতের কাছে বোঝাপড়া করতে। সেখানে গিয়ে তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর প্রেসক্রিপশন নিয়ে আসলেন। ইন্দিরা গান্ধী তাঁকে বলে দিলেন, বাংলাদেশের সংবিধান ভারতের সংবিধানের মূলনীতির আলোকে রচনা করতে হবে। আর শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব সেটাই করলেন।

খেলাফত মজলিসের কুমিল্লা পূর্ব জেলার সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ওয়ালি উল্লাহর সভাপতিত্বে গণসমাবেশে বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আফজালুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমাদ প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ম ন ল হক

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের

ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে। 

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে  বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ