Samakal:
2025-08-02@06:34:05 GMT

ভাইরালদেরও সময়

Published: 20th, February 2025 GMT

ভাইরালদেরও সময়

নিয়মিত লেখকদের বই বিক্রি হচ্ছে বেশি। তবে নতুনভাবে হাইপে থাকা লেখক বা ভাইরাল লেখকদেরও বই প্রকাশ হচ্ছে। এটাকে আমি ভালো দিক হিসেবে দেখছি। কেননা মুদ্রণের সময় তাদের লেখাগুলো আরও পরিশীলিতভাবে প্রকাশিত হয় বই রূপে। তখন মানের দিক থেকে সেগুলো আরও উন্নত হয়। যে পাঠক তার পকেটের টাকা খরচ করে সেই বইটা কিনছে, এটাও বড় একটা মাত্রা যুক্ত করে। আর ব্যবসায়িক দিক থেকেও এই লেখকরা আমাদের কাছে অনেক বেশি ইতিবাচক।

অমর একুশে বইমেলায় গতকাল বুধবার অন্যধারা প্রকাশনীর নির্বাহী পরিচালক ফারুক হোসেন এভাবেই বর্তমান সময়ের ভাইরাল বা হাইপে থাকা লেখকদের সম্পর্কে নিজের অভিমত ব্যক্ত করেন। মেলা ঘুরে অন্যান্য প্রকাশনী থেকেও জানা গেছে, খ্যাতনামাদের পাশাপাশি এবারও প্রচুর তরুণ লেখকের বই প্রকাশ হয়েছে। এর মধ্যে অনেক বই-ই সাহিত্য মানসম্পন্ন। পরিণত পাঠক খুঁজে খুঁজে এসব লেখকের বই সংগ্রহ করছেন।

গতকাল অন্যধারা প্রকাশনীর স্টলে গিয়ে দেখা যায়, সাদাত হোসাইনের বই অনেক বেশি বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া গত বছর প্রকাশিত ইলমা বেহরোজের ‘পদ্মজা’ বইটির বিক্রি বেশ ভালো। স্টলটিতে কয়েকজন তরুণ-তরুণীকে পদ্মজা বইটির দুই খণ্ড কিনতে দেখা যায়। বইটি সম্পর্কে তারা বলেন, খুব সহজেই এর কাহিনি সংক্ষেপের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরেছি, তাই কিনছি। তা ছাড়া বইটির অনেক উক্তি ফেসবুকেও ভাইরাল হওয়ায় পড়ার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে।

তাম্রলিপি প্রকাশনীতে মেলার শুরুর দিন থেকেই কার্টুনিস্ট অন্তিক মাহমুদের বই ও কমিকস কিনতে ভিড় করছেন তরুণরা। গতকাল ওই স্টলে আসা একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষার্থী জিনিয়া বলেন, অন্তিক মাহমুদের অ্যানিমেশনগুলো খুব বেশি ভালো লাগে। আলাদা একটা স্টাইলে কাজ করেন তিনি। তাই তাঁর বই কিনতে আসা। 

শব্দশৈলীর প্রকাশক ইফতেখার আমিন বলেন, আসলে লেখক ভাইরাল হয় বই প্রকাশ হওয়ার পর। আগে যারা ভাইরাল ও পরে লেখক হওয়ার চেষ্টা করেন, দুটো জিনিস ভিন্ন। সমানুপাতিক হারে যে উনারা সফল হবেন, এটা গত পাঁচ বছরে আমরা দেখি নাই। যেমন– ফেসবুক সেলিব্রিটিদের বই প্রকাশ হচ্ছে, তেমনিভাবে তারা দীর্ঘদিন টিকে থেকেছে– এটাও সত্য নয়। তারা আবার হারিয়েও গেছেন। সাহিত্যের জায়গা একেবারেই ভিন্ন। এখানে পাঠকের মন জয় করার সবচেয়ে বড় উপায় লেখনীর মান ও ধরন। 
নানা কারণে আলোচিত ডা.

সাবরিনার ‘বন্দিনী’ বইটির প্রথম খণ্ডের মতো দ্বিতীয় খণ্ডও প্রকাশ করেছে শব্দশৈলী। বইটির পাঠক ও ভাইরাল বিষয়ে ইফতেখার আমিন বলেন, ভাইরালের দিক থেকে গত বছর ডা. সাবরিনার বইয়ের যেমন চাহিদা ছিল, এ বছর দ্বিতীয় খণ্ডে সেটার কিছুটা ভাটা পড়েছে। তারপরও মানুষের আকর্ষণ তাঁর প্রতি রয়েছে। পাঠক আসছেন, বই দেখে ছবি তুলছেন।

জুলাই আন্দোলনে ফেসবুকে ও মাঠে সরব থাকা আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির আলোর ঠিকানা স্টলেও বেশ ভিড় দেখা যায়। কাফির সঙ্গে ছবি তোলা থেকে শুরু করে তাঁর বই কিনতেও দেখা যায় তরুণদের।

অনন্যা প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন) প্রীতম আদনান বলেন, আমরা ভাইরাল লেখকদের বই খুব বেশি না করলেও উদীয়মানদের বই নিয়ে কাজ করি। কারণ, এই লেখকদের একটা নির্দিষ্ট পাঠক রয়েছে। তবে এটা হাইপ তোলার মতো কিছু নয়। এবার নতুন লেখকদের ২০টি বই প্রকাশ হয়েছে। অনন্যার স্টলে তরুণদের মধ্যে সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার উপন্যাস ‘ডেকেছিল তাহারা যখন’ বইটির চাহিদা বেশি দেখা গেছে। এ ছাড়া মহিউদ্দিন আহমেদের দুটো রাজনৈতিক বইও বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে বলে জানা যায়।

এদিকে গতকাল মেলার ১৯তম দিনে নতুন বই এসেছে ৭০টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো স্বপ্নজয়ী প্রকাশনী থেকে সারমিন সেলিম তুলির ‘বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির সাধক’, গতিধারা থেকে ইব্রাহিম খানের ‘বসন্তে মন রাঙে’, সাহিত্যদেশ থেকে জাহাঙ্গীর আলমের ‘রাজহাঁসের ডানায় মৃত্যুর আর্তনাদ’, গ্রন্থকুটির থেকে ড. বি কে চক্রবর্তীর ‘রবীন্দ্রনাথ: আলো-আঁধার’, শৈশব প্রকাশ থেকে রিদওয়ান আক্রামের ‘ম্যাওয়ের কত সাহস’ ইত্যাদি।

গতকাল মেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘শিশুসাহিত্যের মহীরুহ রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদের সভাপতিত্বে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জুলফিকার শাহাদাৎ এবং আলোচনায় অংশ নেন শাহাবুদ্দীন নাগরী। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি মজিদ মাহমুদ, কবি কামরুজ্জামান ও কবি শফিকুল ইসলাম। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী সিনথিয়া, জেরিন তাবাসসুম হক, কোহিনুর আক্তার গোলাপী, রবিউল হক, অর্পণা মজুমদারসহ অনেকেই। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় মেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘জন্মশতবর্ষ: রশীদ করীম’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বইম ল ল খকদ র দ র বই অন ষ ঠ বইট র গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

মায়ের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল কিশোরী, সাপের কামড়ে মৃত্যু

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় সাপের কামড়ে এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের সরেঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরিবারের সদস্যরা জানান, রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় ওই কিশোরীকে একটি বিষধর সাপ ছোবল দেয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয় তার।

নিহত কিশোরীর নাম নাঈমা আকতার (১৩)। সে আনোয়ারার রায়পুর ইউনিয়নের সরেঙ্গা গ্রামের বক্সি মিয়াজিবাড়ির মোহাম্মদ হাসানের মেয়ে। স্থানীয় একটি মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল সে।

পরিবারের সদস্যরা জানান, রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে মা ও ছোট বোনের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল নাঈমা। রাত তিনটার দিকে সাপের ছোবলে তার ঘুম ভাঙে। বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানালে তাকে উদ্ধার করে রাতেই আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। তবে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক নাঈমাকে মৃত ঘোষণা করেন। জানতে চাইলে নাঈমার চাচা কফিল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন বলেন, ‘সাপে কামড় দিয়েছে জানার পর আমরা নাঈমাকে হাসপাতালে নিয়েছিলাম। কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি।’

আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সাপে কামড় দেওয়া এক কিশোরীকে হাসপাতালে আনা হয়ছিল। তবে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ