Samakal:
2025-06-16@19:54:18 GMT

ভাইরালদেরও সময়

Published: 20th, February 2025 GMT

ভাইরালদেরও সময়

নিয়মিত লেখকদের বই বিক্রি হচ্ছে বেশি। তবে নতুনভাবে হাইপে থাকা লেখক বা ভাইরাল লেখকদেরও বই প্রকাশ হচ্ছে। এটাকে আমি ভালো দিক হিসেবে দেখছি। কেননা মুদ্রণের সময় তাদের লেখাগুলো আরও পরিশীলিতভাবে প্রকাশিত হয় বই রূপে। তখন মানের দিক থেকে সেগুলো আরও উন্নত হয়। যে পাঠক তার পকেটের টাকা খরচ করে সেই বইটা কিনছে, এটাও বড় একটা মাত্রা যুক্ত করে। আর ব্যবসায়িক দিক থেকেও এই লেখকরা আমাদের কাছে অনেক বেশি ইতিবাচক।

অমর একুশে বইমেলায় গতকাল বুধবার অন্যধারা প্রকাশনীর নির্বাহী পরিচালক ফারুক হোসেন এভাবেই বর্তমান সময়ের ভাইরাল বা হাইপে থাকা লেখকদের সম্পর্কে নিজের অভিমত ব্যক্ত করেন। মেলা ঘুরে অন্যান্য প্রকাশনী থেকেও জানা গেছে, খ্যাতনামাদের পাশাপাশি এবারও প্রচুর তরুণ লেখকের বই প্রকাশ হয়েছে। এর মধ্যে অনেক বই-ই সাহিত্য মানসম্পন্ন। পরিণত পাঠক খুঁজে খুঁজে এসব লেখকের বই সংগ্রহ করছেন।

গতকাল অন্যধারা প্রকাশনীর স্টলে গিয়ে দেখা যায়, সাদাত হোসাইনের বই অনেক বেশি বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া গত বছর প্রকাশিত ইলমা বেহরোজের ‘পদ্মজা’ বইটির বিক্রি বেশ ভালো। স্টলটিতে কয়েকজন তরুণ-তরুণীকে পদ্মজা বইটির দুই খণ্ড কিনতে দেখা যায়। বইটি সম্পর্কে তারা বলেন, খুব সহজেই এর কাহিনি সংক্ষেপের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরেছি, তাই কিনছি। তা ছাড়া বইটির অনেক উক্তি ফেসবুকেও ভাইরাল হওয়ায় পড়ার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে।

তাম্রলিপি প্রকাশনীতে মেলার শুরুর দিন থেকেই কার্টুনিস্ট অন্তিক মাহমুদের বই ও কমিকস কিনতে ভিড় করছেন তরুণরা। গতকাল ওই স্টলে আসা একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষার্থী জিনিয়া বলেন, অন্তিক মাহমুদের অ্যানিমেশনগুলো খুব বেশি ভালো লাগে। আলাদা একটা স্টাইলে কাজ করেন তিনি। তাই তাঁর বই কিনতে আসা। 

শব্দশৈলীর প্রকাশক ইফতেখার আমিন বলেন, আসলে লেখক ভাইরাল হয় বই প্রকাশ হওয়ার পর। আগে যারা ভাইরাল ও পরে লেখক হওয়ার চেষ্টা করেন, দুটো জিনিস ভিন্ন। সমানুপাতিক হারে যে উনারা সফল হবেন, এটা গত পাঁচ বছরে আমরা দেখি নাই। যেমন– ফেসবুক সেলিব্রিটিদের বই প্রকাশ হচ্ছে, তেমনিভাবে তারা দীর্ঘদিন টিকে থেকেছে– এটাও সত্য নয়। তারা আবার হারিয়েও গেছেন। সাহিত্যের জায়গা একেবারেই ভিন্ন। এখানে পাঠকের মন জয় করার সবচেয়ে বড় উপায় লেখনীর মান ও ধরন। 
নানা কারণে আলোচিত ডা.

সাবরিনার ‘বন্দিনী’ বইটির প্রথম খণ্ডের মতো দ্বিতীয় খণ্ডও প্রকাশ করেছে শব্দশৈলী। বইটির পাঠক ও ভাইরাল বিষয়ে ইফতেখার আমিন বলেন, ভাইরালের দিক থেকে গত বছর ডা. সাবরিনার বইয়ের যেমন চাহিদা ছিল, এ বছর দ্বিতীয় খণ্ডে সেটার কিছুটা ভাটা পড়েছে। তারপরও মানুষের আকর্ষণ তাঁর প্রতি রয়েছে। পাঠক আসছেন, বই দেখে ছবি তুলছেন।

জুলাই আন্দোলনে ফেসবুকে ও মাঠে সরব থাকা আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির আলোর ঠিকানা স্টলেও বেশ ভিড় দেখা যায়। কাফির সঙ্গে ছবি তোলা থেকে শুরু করে তাঁর বই কিনতেও দেখা যায় তরুণদের।

অনন্যা প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন) প্রীতম আদনান বলেন, আমরা ভাইরাল লেখকদের বই খুব বেশি না করলেও উদীয়মানদের বই নিয়ে কাজ করি। কারণ, এই লেখকদের একটা নির্দিষ্ট পাঠক রয়েছে। তবে এটা হাইপ তোলার মতো কিছু নয়। এবার নতুন লেখকদের ২০টি বই প্রকাশ হয়েছে। অনন্যার স্টলে তরুণদের মধ্যে সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার উপন্যাস ‘ডেকেছিল তাহারা যখন’ বইটির চাহিদা বেশি দেখা গেছে। এ ছাড়া মহিউদ্দিন আহমেদের দুটো রাজনৈতিক বইও বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে বলে জানা যায়।

এদিকে গতকাল মেলার ১৯তম দিনে নতুন বই এসেছে ৭০টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো স্বপ্নজয়ী প্রকাশনী থেকে সারমিন সেলিম তুলির ‘বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির সাধক’, গতিধারা থেকে ইব্রাহিম খানের ‘বসন্তে মন রাঙে’, সাহিত্যদেশ থেকে জাহাঙ্গীর আলমের ‘রাজহাঁসের ডানায় মৃত্যুর আর্তনাদ’, গ্রন্থকুটির থেকে ড. বি কে চক্রবর্তীর ‘রবীন্দ্রনাথ: আলো-আঁধার’, শৈশব প্রকাশ থেকে রিদওয়ান আক্রামের ‘ম্যাওয়ের কত সাহস’ ইত্যাদি।

গতকাল মেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘শিশুসাহিত্যের মহীরুহ রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদের সভাপতিত্বে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জুলফিকার শাহাদাৎ এবং আলোচনায় অংশ নেন শাহাবুদ্দীন নাগরী। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি মজিদ মাহমুদ, কবি কামরুজ্জামান ও কবি শফিকুল ইসলাম। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী সিনথিয়া, জেরিন তাবাসসুম হক, কোহিনুর আক্তার গোলাপী, রবিউল হক, অর্পণা মজুমদারসহ অনেকেই। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় মেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘জন্মশতবর্ষ: রশীদ করীম’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বইম ল ল খকদ র দ র বই অন ষ ঠ বইট র গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইসির ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠন করার নির্দেশ

বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শেষে এমন নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ।

এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফররাজ হোসেন ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যে অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত করা এবং তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন।

জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদ

বৈঠকে কমিশন সদস্যরা জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’

‘প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাঁদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তাঁরা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তাঁরা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে তাঁর (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে আলোচনা করেছেন, মতামত দিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেখানেই গিয়েছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?” আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে, সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ