‘ডেভিল হান্টে’ বিরামপুরের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খায়রুল গ্রেপ্তার
Published: 20th, February 2025 GMT
দিনাজপুরের বিরামপুরে ‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ আওয়ামী লীগের সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুল ইসলাম ওরফে রাজুকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। গতকাল বুধবার রাত সোয়া একটার দিকে বিরামপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব জগন্নাথপুর মহল্লার নিজ বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
খায়রুল ইসলাম বিরামপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের উপজেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক। গত বছরের ২৫ অক্টোবর রশিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগে বিরামপুর থানায় একটি মামলা করেন বিপ্লব আলম ওরফে বিলু (৪৭)। মামলার বাদী একই উপজেলার ২ নম্বর কাটলা ইউনিয়নের উত্তর দাউদপুর গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় বিএনপি কর্মী।
ওই হত্যা মামলায় আসামি হিসেবে দিনাজপুর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ১১৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ২৫০ থেকে ৩০০ জন অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।
বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমতাজুল হক বলেন, তদন্তের পর ওই হত্যা মামলায় সংশ্লিষ্টতা আসায় খায়রুল আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে দিনাজপুর আদালতে পাঠানোর কথা আছে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তারদিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের ওপর হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও পেট্রলবোমা হামলার মামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের শাহাজাহান আলী ওরফে শ্যাম (৪০) নামের সাবেক এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে পৌর শহরের আজাদ মোড় এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শাহাজাহান আলী ঘোড়াঘাট পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নয়াপাড়া মহল্লার বাসিন্দা ও ছাত্রলীগের ঘোড়াঘাট উপজেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তাঁকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হক। আজ তাঁকে আদালতে পাঠানোর কথা আছে।
গত বছর ২৪ আগস্ট ঘোড়াঘাট পৌর ছাত্রদলের সদস্য সহিদ শেখ বাদী হয়ে ঘোড়াঘাট থানায় এ মামলা করেন। এতে উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, পৌর কাউন্সিলর, ইউপি চেয়ারম্যান, ২ সাংবাদিকসহ ৪০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৭০-৮০ জনকে আসামি করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর আওয় ম উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
দেশবাসী দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণ চায়: আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের মানুষ ২০ বছর ধরে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি এবং নতুন প্রজন্মও ভোট দিতে পারেনি। তাই, তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণ চায়।
সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে লন্ডন থেকে দেশে ফিরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক পথেই এগিয়ে যাবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামে জনগণের যে ত্যাগ, সে পথেই দেশ অগ্রসর হবে।
প্রধান উপদেষ্টার মতো বিএনপিও রোজার আগে বিচার ও সংস্কারের অগ্রগতি চায় কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সংস্কারের বিষয়টি ঐকমত্যের ওপর নির্ভরশীল। এ বিষয়ে ড. ইউনূস, তারেক রহমান এবং বিএনপির সকল নেতৃবৃন্দ আগেই বলেছেন।
তিনি মনে করেন, ঐকমত্য হতে এক থেকে দেড় মাসের বেশি সময় লাগার কথা নয়।
বিচার প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটি চলমান প্রক্রিয়া এবং বিচার বিভাগের ওপর নির্ভর করে। বিচার বিভাগ বিচার করবে এবং বিচারের আওতায় আনারও বিষয় আছে। যারা বিচারের আওতায় আসবে, তার জন্য আরো প্রায় ছয় মাস সময় আছে। আর যারা এর মধ্যে আসবে না, তাদের জন্য তো আগামী সরকার আছে।
সরকারের কি এখন নির্বাচনমুখী কর্মকাণ্ডের দিকে এগিয়ে যাওয়া দরকার আছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন ছাড়া গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক এবং জনগণের সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আর কোনো পথ নেই। এ বিষয়ে সবাই ঐকমত্য পোষণ করছেন।
জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির অভিযোগ, একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকার বিশেষ সম্পর্ক করছে, বিএনপি বিষয়টি কীভাবে দেখছে? এ প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, “আমি একটা জিনিস মনে করি, আমরা যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, তাহলে এখানে সবার মতামত নেওয়ার সুযোগ আছে। সুতরাং, সবাই তাদের মতামত দিতে পারে। আমার মনে হয়, এটাই আমাদের গণতন্ত্রের বড় পাওয়া, সবাই নিজেদের মতামত দেবে। এর মধ্যে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।”
বিএনপি এত দিন ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বললেও এখন কেন ফেব্রুয়ারিতে গেল? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনেক সময়। এবং এত সময়ও লাগার কোনো কারণ নেই। বিএনপি আগে ডিসেম্বরের মধ্যেই এসব সমস্যার সমাধান করে নির্বাচনের কথা বলেছে। সুতরাং, ফেব্রুয়ারি আরো দীর্ঘ সময়। তবে, যদি ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হয়, তাতেও কোনো সমস্যা নেই।
আমীর খসরু বলেন, “আমি আগেও বলেছি, যত বেশি ঐকমত্যের মাধ্যমে আমরা নিজেদের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে পারব, সেটা জাতির জন্য তত ভালো। আমরা যে ঐকমত্যের মধ্যে এসেছি, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিষয়।”
তিনি আরো বলেন, “ঐকমত্য থাকার ফলেই আমরা স্বৈরাচারকে বিদায় করতে পেরেছি। সুতরাং, আমরা চেষ্টা করব, যেখানেই সম্ভব ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেব।”
তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ওয়ান-টু-ওয়ান বৈঠকে নির্বাচনে নিরপেক্ষতার বিষয়ে কোনো আলোচনা বা বার্তা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, যখনই নির্বাচন শুরু হবে, তখনই সরকার নিরপেক্ষতার বিষয়টি নিশ্চিত করবে। কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টের ধারণা হলো— একটি নিরপেক্ষ সরকার। সুতরাং, নির্বাচনে সেই নিরপেক্ষতা সরকার নিশ্চিত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
বৈঠকে সংস্কারের বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমান বলেছেন, এখানে যতটুকু ঐকমত্য হবে, সংস্কারও ততটুকুই হবে। বাকি অংশটা নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির কাছে নিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, সংস্কার তো চলমান প্রক্রিয়া। এটি এখানেই শেষ হয়ে যাচ্ছে না, নির্বাচনের পরেও এটি চলমান থাকবে।
ঢাকা/রায়হান/রফিক