১৮ বছর আগে চাকরিচ্যুত উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা পদে ফিরতে পারবেন কি না, জানা যাবে ২৫ মার্চ
Published: 20th, February 2025 GMT
১৮ বছর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে চাকরিচ্যুত ৮৫ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা চাকরিতে পুনর্বহাল হবেন কি না, তা আগামী ২৫ মার্চ জানা যেতে পারে।
এ-সংক্রান্ত আপিল ও পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) আবেদনের ওপর আগামী ২৫ মার্চ রায়ের জন্য তারিখ ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।
পৃথক আবেদনের শুনানি শেষে আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ রায়ের এই তারিখ ধার্য করেন।
প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত বাতিল করে ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের দেওয়া রায়কে কেন্দ্র করে চাকরিচ্যুত ব্যক্তিরা একটি আপিল ও চারটি পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন, যার ওপর আজ শুনানি শেষ হলো। এর আগে ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল ৮৫ কর্মকর্তার আপিল মঞ্জুর করে চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে রায় দিয়েছিলেন।
আদালতে আপিলকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। পুনর্বিবেচনার আবেদনের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও মো.
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন প্রথম আলোকে বলেন, আপিল ও রিভিউ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আপিল বিভাগ আগামী ২৫ মার্চ রায়ের জন্য তারিখ ধার্য করেছেন। চাকরিচ্যুত উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা চাকরিতে পুনর্বহাল হবেন কি না, তা সেদিন জানা যাবে।
মামলার পূর্বাপরআইনজীবীদের তথ্যমতে, ২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ৩২৭ জনকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে অস্থায়ীভাবে নির্বাচিত করা হয়।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ের এই নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক ওঠে। ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ৩২৭ জনের মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ৮৫ জনকে একই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর চাকরিচ্যুত করা হয়। এর বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত প্রার্থীরা মামলা করলে ২০০৯ সালের ২৩ মার্চ তা খারিজ করে রায় দেন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল। এর বিরুদ্ধে তাঁরা আপিল করেন। ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল ৮৫ কর্মকর্তার আপিল মঞ্জুর করে চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে রায় দেন।
প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক চারটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেন, বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে সরকারপক্ষ পৃথক আপিল করে। সরকারপক্ষের করা আপিলগুলো মঞ্জুর করে ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর রায় দেন আপিল বিভাগ। এই রায়ে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল দেওয়া রায় (৮৫ কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে) বাতিল করা হয়।
আপিল বিভাগের ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে ২০২৩ সালে পৃথক পাঁচটি আবেদন করেন চাকরিচ্যুত ব্যক্তিরা। শুনানি নিয়ে একটি রিভিউ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ গত বছরের ৬ নভেম্বর লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি) মঞ্জুর করে আদেশ দেন। একই সঙ্গে এই আপিলের (রিভিউ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত) সারসংক্ষেপ চার সপ্তাহের মধ্যে দায়ের করতে আবেদনকারীপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এই আপিলের সঙ্গে অপর চারটি রিভিউ আবেদন শুনানিতে থাকবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় শুনানি হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ২০১০ স ল র স প ট ম বর চ কর চ য ত ২৫ ম র চ আইনজ ব চ কর ত উপজ ল সরক র রপক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
মাওলানা রইস হত্যার বিচার দাবি জানিয়ে ১০২ নাগরিকের বিবৃতি
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় সদস্য ও ঢাকা নগরীর সাবেক সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ রইস উদ্দিনকে নির্যাতন ও পরে হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন দেশের ১০২ জন নাগরিক। আজ বুধবার এক বিবৃতিতে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। বিবৃতিদাতাদের মধ্যে শিক্ষক, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, কথাসাহিত্যিক, লেখক, কবি, সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মীরা রয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, স্বৈরাচার পতনের পর থেকে দেশবাসী ‘মব ভায়োলেন্সে’র একটি উল্লম্ফন দেখেছে। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৭ এপ্রিল গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড হায়দারাবাদ এলাকার আখলাদুল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা রইস উদ্দিনকে দুই মাস আগের একটি অভিযোগের ভিত্তিতে মব ভায়োলেন্সের মাধ্যমে অকথ্য নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের পর সকাল ১০টায় পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হলে তাঁকে মৌলিক অধিকার হিসেবে খাদ্য ও চিকিৎসা কিছুই সরবরাহ করা হয়নি। ভোর চারটায় কারাগারেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
বিবৃতিতে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এই মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি এ মামলার তদন্ত ও বিচারের মাধ্যমে মব ভায়োলেন্স নামে রাহাজানি এবং নির্মম পুলিশি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশাবাদ জানানো হয়।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে রয়েছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, কথাসাহিত্যিক রাখাল রাহা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আর রাজী, রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান, লেখক ও অ্যাকটিভিস্ট পারভেজ আলম, কবি ও অধিকারকর্মী ফেরদৌস আরা রুমী, শিল্পী ও লেখক দেবাশিস চক্রবর্তী, অনুবাদক ও শিক্ষক জি এইচ হাবীব, লেখক ও রাজনৈতিক কর্মী বাকী বিল্লাহ, চলচ্চিত্রকার রাফসান আহমেদ, কবি ও সাংবাদিক সৈকত আমীন, রাজনৈতিক সংগঠক হাসান মারুফ রুমি, মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ মহিউদ্দিন প্রমুখ।