আগে স্থানীয় নির্বাচনের পক্ষে গণ অধিকার পরিষদ
Published: 20th, February 2025 GMT
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেছেন, নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে এই মুহূর্তে জাতীয় নির্বাচন করা সম্ভব নয়। ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে পরিস্থিতির কতটা উন্নতি হয় সেটা দেখার বিষয়। এই বিবেচনায় প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ও সক্ষমতা দেখা এবং তৃণমূল পর্যায়ে নির্বাচন নিয়ে ‘ভাইব’ (আবহ) তৈরির জন্য পুরোপুরি না হলেও স্থানীয় সরকারের কিছু নির্বাচন করে দেখা যেতে পারে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে গণ অধিকার পরিষদের ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নুরুল হক এসব কথা বলেন।
আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন না কি, স্থানীয় সরকারের নির্বাচন—এই প্রশ্নে বেশ কিছুদিন ধরে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক চলছে। বিএনপি, বাম গণতান্ত্রিক জোটসহ কিছু রাজনৈতিক দল আগে জাতীয় নির্বাচনের পক্ষে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি আগে স্থানীয় নির্বাচনের পক্ষে।
নুরুল হক বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে নির্বাচন কমিশনও (ইসি) তাদের ঘাটতি কোথায় আছে তা বুঝতে পারবে। এই ‘এক্সপেরিমন্ট’ (পরীক্ষা) না করে সরাসরি জাতীয় নির্বাচনে গেলে তা কতটুকু ফলপ্রসূ হবে সেটা বিবেচনার বিষয়।
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে বলেছে, তাদের অগ্রাধিকার ও সাংবিধানিক দায়িত্ব জাতীয় নির্বাচন এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা। তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনও ইসি পরিচালনা করে। সে ক্ষেত্রে ইসি রাজনৈতিক ঐকমত্যের ওপর জোর দিয়েছে। তারা (গণ অধিকার পরিষদ) মনে করেন, অন্তত কিছু স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য হওয়া জরুরি। ছয় মাস ধরে স্থানীয় সরকারে জনপ্রতিনিধি না থাকায় মানুষ সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন।
যেসব রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের শর্ত প্রতিপালন করছে না, হালনাগাদ তথ্য নিয়ে তাদের নিবন্ধন স্থগিত করা উচিত বলে মতামত দেন নুরুল হক। তিনি বলেন, এতে নামস্বর্বস্ব বা কিংস পার্টির নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে। আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন একা নিতে পারবে না। এ জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্য লাগবে। সরকারেরও এখানে ভূমিকা নিতে হবে। ইতিমধ্যে সেই ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলো আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা যেন নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, সে বিষয়ে একমত হয়েছে।
নুরুল হক বলেন, তারা ইসিকে বলেছেন, যারা নির্বাচনে রিটার্নিং, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ অন্যান্য দায়িত্বে থাকবেন তারা যেন কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হন, সেটা কমিশনকে আগেভাগেই নিশ্চিত করতে হবে। তাঁরা প্রবাসীদের ভোটাধিকারের কথা বলেছেন। ইসি বলেছে, এটি নিয়ে কমিশন কাজ করছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স থ ন য় সরক র ন র ল হক ঐকমত য
এছাড়াও পড়ুন:
কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে: জাপা মহাসচিব
কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তবে কারা, সেটা স্পষ্ট করেননি তিনি।
আজ শনিবার বিকেলে রংপুর নগরের সেন্ট্রাল রোডে জাপা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শামীম হায়দার পাটোয়ারী এ মন্তব্য করেন।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু দল ইতিমধ্যে ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে বা স্বাক্ষর করে একধরনের ফাঁদে পড়ে গেছে। কিছু রাজনৈতিক দল বলছে, ঐকমত্য কমিশন প্রতারণা করেছে। এখানে প্রতারক ও প্রতারণা শব্দটি উচ্চারিত হচ্ছে। কিন্তু আমরা তো এ রকম সংস্কার চাইনি।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ঐকমত্য তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে জাপা মহাসচিব বলেন, কমিশন ৫৬টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি দলকে বাদ দিয়েছে। যে দলগুলো সেখানে গেছে, তাদের মধ্যে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে মতবিরোধ আছে। এক ভাগকে ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ অংশগ্রহণ করেছে। অন্য আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে পরে সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করেছে।
বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামো বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির বলে দাবি করেছেন শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। কারণ, নির্বাচিত সরকার সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট করেছে ও নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে। এই মুহূর্তে দেশে যে প্রশাসনিক কাঠামো আছে, তার ব্যাপারে তথ্য উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন, তাঁরা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কথামতো প্রশাসন সাজিয়েছে, তার সঙ্গে এনসিপি আছে। এই তিন দলের বাইরে অন্য কোনো দল যদি ভোটে আসে, এই প্রশাসনিক কাঠামো সেই দলকে সুষ্ঠু ভোট হতে দেবে না।
গণভোটের দাবি নজিরবিহীন উল্লেখ করে শামামী হায়দার পাটোয়ারী বলেন, সংবিধানে এই মুহূর্তে গণভোট কোনো প্রভিশনে নেই। বর্তমানে গণভোটের যে দাবি উঠেছে, সংসদে পাস হওয়ার আগে এই দাবি বাস্তবায়ন হলে ঐকমত্য কমিশনকে সংসদের মর্যাদা দেওয়া হবে। ঐকমত্য কমিশন সার্বভৌম নয়, নির্বাচিত নয় ও সংসদ নয়। সংসদকে এড়িয়ে গিয়ে কোনো আইন পাস করা হলে তা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে।
এ সময় জাপার কো–চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসির, রংপুর জেলার আহ্বায়ক আজমল হোসেন, সদস্যসচিব হাজী আবদুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামানসহ জাপা ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।