প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘অনার্য পাবলিকশন্স লিমিটেড’ ৩১ টি বই প্রকাশের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে ২০১১ সালে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা সবমিলিয়ে ছয়শো ছাড়িয়ে গিয়েছে। ইতিহাস, দর্শন, সাহিত্য ও সংস্কৃতি নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রত্যয় নিয়ে যাত্রা শুরু করে এই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। এ লক্ষ্য অর্জনে প্রতিষ্ঠানটি কীভাবে কাজ করছে সে বিষয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেছেন অনার্য’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিক রহমান। সাক্ষাৎকার গ্রহণে স্বরলিপি।


রাইজিংবিডি: আমরা জানি যে অনার্যের উদ্দেশ্য ইতিহাস, দর্শন, সাহিত্য, সংস্কৃতি নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া। চলতি বইমেলায় অনার্য ইতিহাস, দর্শন, সাহিত্য ক্যাটাগরিতে কতগুলো বই প্রকাশ করেছে?

সফিক রহমান: ধন্যবাদ রাইজিং বিডিকে। ২০১১ সালের বইমেলা দিয়ে অনার্যের আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরু হলেও আমরা ২০০৮ সাল থেকে স্বল্প পরিসরে প্রকাশনার কাজ শুরু করি। শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ড.

আব্দুল জলিল স্যারের বাংলাদেশের ফোকলোর চর্চার ইতিবৃত্ত অনার্যের প্রথম প্রকাশনা। বাঙালির ইতিহাস ঐতিহ্য সাহিত্য সংস্কৃতি দর্শন এবং মূল্যবোধের প্রতি অনার্য শ্রদ্ধাশীল। ফলে আমরা আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য দর্শন সাহিত্য সংস্কৃতি পাঠকের হাতে তুলে দিতে সব সময়ই বদ্ধপরিকর। অনার্য বছরজুড়ে কাজ করে থাকে। ২৪ এর বইমেলার পর আজ পর্যন্ত অনার্যের প্রকাশনা ৫৪। তার মধ্যে ইতিহাস, দর্শন, সাহিত্য ক্যাটাগরিতে প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ১৭টি।

আরো পড়ুন:

নতুন ভাষা দ্রুত শেখার উপায়

বইমেলায় মাহমুদুল আলম দিপুর ‘২৯৩ মিলিয়ন ডলার এবং আমি’

রাইজিংবিডি: ‘সেরা লেখকের লেখা নয়, লেখকের সেরা লেখাই নিয়েই অনার্যের পথচলা’ লেখকের সেরা লেখা পাণ্ডুলিপি সংগ্রহে এবং প্রকাশে অনার্য কীভাবে কাজ করে?
সফিক রহমান:
দৃশ্যত, অনার্যের স্টিয়ারিং হুইল আমার হাতে থাকলেও অনার্যের পরিকল্পনা এবং কর্মযজ্ঞে আছে আমার শিক্ষাগুরুগণ এবং বন্ধু-সজনরা। ‘সেরা লেখকের লেখা নয়, লেখকের সেরা লেখাই নিয়েই অনার্যের পথচলা’- এই স্লোগানটি আমার বন্ধু লেখক-সাংবাদিক তাপস রায়ের দেয়া। তিনি শুধু আমার বন্ধু নন তিনি অনার্যের একজন পরামর্শক এবং নীতিনির্ধারক। তিনিই আমাকে বলেন, সেরা লেখকের সব লেখা মানসম্পন্ন হবে এমন নাও হতে পারে। আমরা লেখকের সেরা লেখা নিয়ে কাজ করব। 
অনার্যের পাণ্ডুলিপি নির্বাচনের জন্য পরামর্শক মন্ডলী এবং পাণ্ডুলিপি সম্পাদনার জন্য সম্পাদনা পরিষদ আছে। তাদের পরামর্শ নিয়ে অনার্য কাজ করে। তাছাড়া আমরা লেখক নির্বাচন করে লেখকের সঙ্গে বইয়ের বিষয় নিয়ে আলোচনা করি এবং সময় নিয়ে পাণ্ডলিপি প্রস্তুত করি।

রাইজিংবিডি: শিশুদের বইও প্রকাশ করছে অনার্য, শিশুসাহিত্যের পাঠকদের কাছে কোন ঘরানার বইয়ের চাহিদা বেশি দেখতে পাচ্ছেন। 
সফিক রহমান:
অনার্য শুরু থেকেই শিশু-কিশোরদের জন্য অধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে চলছে। শিশুদের কাছে চাঁদ আর চান্দামাছের গুরুত্ব একই রকম। বিষয়টা হলো- শিশুমন আকৃষ্ট করে এমন বই চাই। বইয়ের বিষয় বা ধরণ যেমনই হোক। অনার্য শিশু পাঠকের জন্য শিশুর পছন্দসই লেখা এবং ছবি দিয়ে বই প্রস্তুত করে। তারপরেও কোন ঘরানার বইয়ের চাহিদা বেশি এই প্রশ্নে বলতে হয়- শিশুরা ছবি আঁকার বই পছন্দ করে। ছবি আঁকার বই হলেই হবে না, তা ওই ক্ষুদে পণ্ডিতের মন মতো হতে হবে। শিশুরা ভূতের গল্প পছন্দ করে তবে তা যেমন তেমন ভূত হলে চলবে না; ওই ভূতের গল্প এবং ছবিতে ভয় পাওয়া চাই। 
আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য, আমাদের বাংলাদেশ বিষয়ক বইও শিশুর ভালো লাগে; এই বিষয়ক বই কেনার বায়না করে। যেমন- গত বছরের মেলায় দেখেছি ‘সুন্দরবনে টম এন্ড জেরি’ নামে একটা বই বাচ্চারা আগ্রহ নিয়ে কিনছে। বইটি শিশুদের আঁকিয়ে হিসেবে বিখ্যাত মামুন হোসাইনের আঁকা আরেক কিশোর লেখক অনন্ত সাহেদের লেখা। বইটি সু্ন্দরবন নিয়ে চমৎকার বই। গল্পের চরিত্র টম আর জেরি এবং মামুন হোসাইনের আঁকার কল্যাণে আমাদের শিশুরা পছন্দ করেছে বলেই আমার ধারণা। বস্তুত, ভূতপ্রেত, রাক্ষস-খোক্কস, দেও-দানবের গল্পের বই পছন্দ করে শিশুরা। তবে তা অবশ্যই উপস্থাপনা এবং ছবিতে নান্দনিক হতে হয়। আর ছবি আঁকার বইয়ের প্রতি শিশুদের আগ্রহ আছে।

রাইজিংবিডি: শিশুসাহিত্যের পাঠক বাড়ানোর জন্য রাষ্ট্র কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন?
সফিক রহমান:
পাঠ্যাভ্যাস নিয়ে কাজ করার কোনো বিকল্প নেই। পাঠ্যবইয়ের সাথে সৃজনশীল বই আবশ্যিক করতে হবে। দেশে ৬৫ হাজারের অধিক সংখ্যক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাইরেও আছে- রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়, এবতেদায়ি মাদ্রাসা,কিন্ডারগার্টেন। এই প্রতিষ্ঠানগলোতে পাঠ্য বইয়ের বাইরে নয়, পাঠ্যবইয়ের সাথে সৃজনশীল বই পড়াতে হবে। এটা হতে পারে সপ্তাহের যেকোনো একটা দিন ছেড়ে দিতে হবে শিশুদের সৃজনশীলতার উন্মেষ ঘটাতেই। বাংলা ক্লাসে শ্রেণি উপযুক্ত গল্প বা ছড়ার বই নিয়ে শিশুরা এক্টিভিটিস করবে। তা গল্প বলা, আবৃত্তি করা, গল্পের সাথে অভিনয় করা এবং এক সময় নিজের মতো করে নিজের গল্প বলা, নিজের স্কুল, নিজ গ্রাম নিয়ে শিশুরা নিজেদের গল্প বানাবে। তাতে ওরা ভাবতে শিখবে, নিজেকে জানতে শিখবে। ইংরেজি ক্লাসে একই ধরণ। গণিতে হতে পারে গণিত অলিম্পিয়াড ধরনের কিছু। বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় তো বিস্তৃত অধ্যায়। নিজ দেশ কে পাঠ্য বইয়ের বাইরে গিয়ে জানবে গল্পে গল্পে। আসলে এইচর্চাটা সকল বিষয়েই সম্ভব।

রাইজিংবিডি: লেখকের রয়্যালিটি প্রদান অনার্য কীভাবে নিশ্চিত করে?
সফিক রহমান: 
লেখকগণ সম্মানিত সৃষ্টিশীল মানুষ, তারা গুণিজন। লেখকের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ আর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের অর্থ এবং ব্যবস্থাপনায় একটা বই প্রকাশিত হয়। ফলে প্রতি জন সম্মানিত লেখকের সাথে সম্পর্ক হয় আলাদা আলাদা। ফলে লেখকের রয়্যালিটি প্রদানের বিষয়টা লেখক-প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের সম্পর্কের ওপর নির্ভশীল এবং এটা আমরা প্রকাশ করি না। 

রাইজিংবিডি: অনার্য কতগুলো বই নিয়ে প্রকাশনা শুরু করেছিলো, এখন পর্যন্ত প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা কত?
সফিক রহমান:
বই প্রকাশের পুর্বেই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়ে যায়। এটা বলতে পারি- ২০১১ সালের বইমেলা সম্পন্ন করে ছিলাম আমরা যতদূর মনে পড়ে ৩১টা বই দিয়ে। আজ পযর্ন্ত অনার্য থেকে প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৬১৯টি।

রাইজিংবিডি: প্রকাশিত বইয়ের প্রচারে অনার্য কীভাবে কাজ করছে, প্রচারে আরও কি কি পদক্ষেপ নিতে চায়?
সফিক রহমান:
বইয়ের সংবাদ প্রচারের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। পাঠকের প্রয়োজন এবং রুচি বুঝে বইয়ের খবর পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়। এর বাইরে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়া যায়। তবে আমরা নতুন একটা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। শিক্ষা বিষয়ক গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান ‘ফাউন্ডেশন অব এডুকেশনাল ট্রান্সপারেন্সি’র মাধ্যমে দেশব্যাপী তারুণ্যের শিক্ষামেলার উদ্যোগ নিয়েছি। এরই মাঝে আমরা পঞ্চাশোর্ধ্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেলা করেছি। যদিও সেখানে অনার্যের বইয়ের বাইরে আরও ৩২টা প্রতিষ্ঠানের বই প্রদর্শন করা হয়। এই মেলাগুলোতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অবিভাবকগণ থাকেন। পাঠ্যাভ্যাস উন্নয়নে এই মেলা থেকে আমরা ভালো সাড়া পাচ্ছি।

রাইজিংবিডি: অনার্য অনুবাদ গ্রন্থও প্রকাশ করে থাকে। সেক্ষেত্রে অনুবাদ সাহিত্য প্রকাশের সঠিক প্রক্রিয়াটা আসলে কী?
সফিক রহমান:
অনুবাদ সাহিত্য প্রকাশের সঠিক প্রক্রিয়া হলো- ক্লাসিক হলে অনুমতি লাগবে না। অন্যথায় মূল লেখক বা লেখকের এজেন্টের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে অনুবাদ করতে হয়। সেক্ষেত্রে লেখক এবং প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বেশ কিছু নিয়ম মেনে চুক্তিবদ্ধ হতে হয়।অনার্যের অনুবাদের বইয়ের সংখ্যা খুব বেশি না। অনুবাদ আমার বিবেচনায় একটা জটিল প্রক্রিয়া। প্রথমত, আমাদের দেশে ইংরেজি থেকে অনুবাদ করা হয়। কারণ অপরাপর ভাষা জানা অনুাদক খুবই কম। ফলে চাইলেই মূলানুগ অনুবাদ প্রায় অসম্ভব। দ্বিতীয়ত, অনুমতি নিতে হয়। অনুমতি নেওয়া জটিল এবং ব্যয়সাপেক্ষ। অনেক পরিশ্রম করেও যে সংখ্যক বিক্রি করা যায়, তার লভ্যাংশ দিয়ে মূল লেখকের রয়্যালিটি ব্যয় মেটানো প্রায় অম্ভব। তৃতীয়ত,  ক্লাসিক বা চিরায়ত বই অনুবাদ করতে অনুমতি লাগে না। সেই ক্লাসিকও হয় ইরেজি ভাষার, নয় ইরেজিতে অনূদিত। ক্লাসিক ইরেজি অনুবাদ করা তো সহজসাধ্য নয়।

ঢাকা/লিপি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন র য র প অন র য ক র বইয় র বইয় র ব ক জ কর র জন য ক র বই আম দ র বইম ল

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যয় বাড়ল ১৪৪ কোটি টাকা

‘খুলনা জেলা কারাগার নির্মাণ’ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হয় ২০১১ সালে। ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। এর পর আটবার প্রকল্পের সময় বেড়েছে, দুই দফা সংশোধনের পর ব্যয় বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। এ অবস্থায় প্রকল্পটি শেষ হওয়া নিয়ে হতাশা দেখা দেয়। 
আশার কথা, নতুন জেলা কারাগারের কাজ শেষ হয়েছে। গত ২৫ মে গণপূর্ত বিভাগের কাছ থেকে নতুন কারাগারটি বুঝে নেওয়ার কথা ছিল কারা কর্তৃপক্ষের। কিছু কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় হস্তান্তর হয়নি। চলতি জুন মাসে যে কোনো সময় নতুন কারাগার হস্তান্তরের কথা রয়েছে। জনবল পদায়ন হলেই নতুন কারাগারে বন্দি স্থানান্তর শুরু হবে।
১৯১২ সালে নগরীর ভৈরব নদীতীরে নির্মাণ করা হয় খুলনার প্রথম কারাগার। সেখানে বন্দি ধারণক্ষমতা ৬৭৮ জনের। রয়েছেন ১ হাজার ৪শর বেশি বন্দি। ১১৩ বছরের পুরোনো জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে থাকতে হয় তাদের। এসব বিবেচনায় নিয়েই নতুন কারাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
খুলনার সিটি (রূপসা সেতু) বাইপাস সড়কের জয় বাংলা মোড়ের অদূরে প্রায় ৩০ একর জমির ওপর নতুন কারাগার নির্মাণ হচ্ছে। মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী নতুন কারাগারে ৪ হাজার বন্দি থাকতে পারবেন। প্রকল্পের আওতায় আপাতত ২ হাজার বন্দি রাখার অবকাঠামো তৈরি হয়েছে। পরে প্রয়োজন পড়লে পৃথক প্রকল্প নিয়ে অন্য অবকাঠামো নির্মাণ হবে।
নতুন কারাগার হবে সংশোধনাগার
কারাগার ঘুরে দেখা গেছে, ভেতরে সাজানো-গোছানো অভিজাত আবাসিক এলাকার মতো পরিবেশ। রং দেওয়া নতুন ভবন, পথের ধারে 
ফুল, দামি পার্কিং টাইলস দেওয়া ফুটপাত ধরে হাঁটলে এটি কারাগারই মনে হয় না। নতুন এ কারাগার নির্মাণ হচ্ছে সংশোধনাগার হিসেবে। এখানে বিচারাধীন ও সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের পৃথক স্থানে রাখা হবে। কিশোর ও কিশোরী বন্দিদের জন্য রয়েছে পৃথক ব্যারাক। নারীদের জন্য পৃথক হাসপাতাল, মোটিভেশন সেন্টার ও ওয়ার্কশেড আছে। একইভাবে বন্দিদের জন্য ৫০ শয্যার হাসপাতাল থাকবে। 
আরও থাকবে কারারক্ষীদের সন্তানদের জন্য স্কুল, বিশাল লাইব্রেরি, ডাইনিং রুম, আধুনিক স্যালুন ও লন্ড্রি। কারাগারে শিশুসন্তানসহ নারী বন্দিদের জন্য থাকবে পৃথক ওয়ার্ড ও ডে-কেয়ার সেন্টার। এ ওয়ার্ডটিতে সাধারণ নারী বন্দি থাকতে পারবেন না। সেখানে শিশুদের জন্য লেখাপড়া, খেলাধুলা, বিনোদন ও সংস্কৃতি চর্চার ব্যবস্থা থাকবে। কারাগারে পুরুষ ও নারী বন্দিদের হস্তশিল্পের কাজের জন্য আলাদা আলাদা ওয়ার্কশেড, বিনোদন কেন্দ্র ও নামাজের ঘর রয়েছে। মোট ৫২টি স্থাপনা রয়েছে এ কারাগারে। 
গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রাশিদুল ইসলাম জানান, বন্দিদের প্রতিটি ব্যারাকের চারপাশে পৃথক সীমানাপ্রাচীর রয়েছে। এক শ্রেণির বন্দিদের অন্য শ্রেণির বন্দিদের সঙ্গে মেশার 
সুযোগ নেই। কারাগারের ভেতরে শুধু সীমানাপ্রাচীরই রয়েছে প্রায় ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের। ভেতরে ড্রেন, ফুটপাত, নিজস্ব পয়োবর্জ্য শোধন কেন্দ্র, ওয়াকওয়ে, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা, দুটি পুকুর ও সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সবকিছুর কাজ শেষ।
সময় বেড়েছে আটবার, ব্যয় বেড়ে দ্বিগুণ
২০১১ সালের অনুমোদিত খুলনা জেলা কারাগার নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ছিল ১৪৪ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের ৬ জুন প্রকল্পটি প্রথম দফা সংশোধন করা হয়। এতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ২৫১ কোটি টাকা। নতুন লক্ষ্য নেওয়া হয় ২০১৯ সালের ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার। এর পর পাঁচ দফায় পাঁচ বছর সময় বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু কাজ আর শেষ হয়নি। ২০২৩ সালের মে মাসে দ্বিতীয় দফায় প্রকল্প সংশোধন করা হয়েছে। এতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮৮ কোটি টাকায়।
হস্তান্তর ও চালু কবে
খুলনা গণপূর্ত বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, নতুন কারাগারের সব কাজ শেষ। কয়েকটি স্থাপনায় রঙের শেষ প্রলেপসহ টুকটাক কাজ বাকি রয়েছে। আগে করলে এসব নষ্ট হয়ে যাবে। এ কারণে হস্তান্তর তারিখ নির্ধারণ হলেই এসব কাজ করা হবে। 
খুলনার জেল সুপার নাসির উদ্দিন প্রধান বলেন, কিছু কাজ বাকি ছিল, সেগুলো শেষ করতে বলা হয়েছে। সব ঠিক থাকলে চলতি জুন মাসেই আমরা কারাগার বুঝে নেব। তিনি আরও বলেন, কারাগার পরিচালনার জন্য ৬০০ জনবলের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পুরোনো কারাগারে প্রায় ২০০ জনবল রয়েছে। স্থাপনা বুঝে নেওয়ার পর কারাগার চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্যয় বাড়ল ১৪৪ কোটি টাকা
  • সারোগেসির মাধ্যমে বাবা হয়েছেন যেসব অভিনেতা