কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার একটি কলেজের শহীদ মিনার ভেঙে ফেলেছে সন্ত্রাসীরা। বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে উপজেলার গুণবতী ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে থাকা শহীদ মিনারটির তিনটি স্তম্ভের মধ্যে দুটি ভেঙে ফেলে তারা।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১ মিনিটে প্রথমে শিক্ষকরা এবং পরে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা কলেজ চত্বরে অবস্থিত শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। রাত সাড়ে ১২টার দিকে সবাই ক্যাম্পাস থেকে চলে যান। রাত ২টার দিকে বিকট শব্দ পেয়ে কলেজের নৈশপ্রহরী শহীদ মিনারের কাছে যান। তিনি দেখতে পান, শহীদ মিনারের তিনটি স্তম্ভের মধ্যে দুটি ভেঙে ফেলেছে সন্ত্রাসীরা।
আরো পড়ুন:
গোপালগঞ্জে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ ৩ জনের নামে মামলা
বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করায় জেলেকে সাগরে নিক্ষেপ, আটক ৬
শুক্রবার দুপুরে গুণবতী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল লতিফ বলেন, “শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার পর আমরা চলে যাই। গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা এ কাজ করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কারা ঘটনা ঘটিয়েছে তা বলতে পারছি না।”
চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি হিলাল উদ্দিন বলেন, “খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় এখনই কারা শহীদ মিনার ভেঙেছে তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। স্থানীয় লোকজন এ কাজের সঙ্গে জড়িত আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।”
ঢাকা/রুবেল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের
গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায্য মজুরি, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত ও শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। একই সঙ্গে তারা বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকনেতাদের মুক্তির দাবিও জানায়।
মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জুলফিকার আলী, আইনবিষয়ক সম্পাদক বিমল চন্দ্র সাহা, নির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন, নির্বাহী সদস্য ও বোম্বে সুইটস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রতন মিয়া প্রমুখ।
সমাবেশে নেতারা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে গার্মেন্টস উইংয়ের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ৭ জনকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে এবং রিকশা শ্রমিকদের রুটি–রুজির আন্দোলনে সংহতি জানানোর অপরাধে চট্টগ্রামে রিকশা সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি আল কাদেরি জয়, মিরাজ উদ্দিন ও রোকন উদ্দিনকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ সরকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তারা শ্রমক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়ন করবে।
এ সময় নেতারা শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, তা জানতে চান। তাঁরা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার চর্চায় বাধা দেওয়া বন্ধ না হলে, শ্রমিকের ওপর নিপীড়ন বন্ধ না হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র পরিচালনা বা বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি শ্রমজীবী মানুষের কাছে প্রতারণা হিসেবে পরিগণিত হবে।
মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে নেতারা আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শ্রম খাতের দুর্দশার যে ভয়ানক চিত্র ফুটে উঠেছে, তা প্রমাণ করে স্বাধীনতা–পরবতী প্রতিটি সরকার শ্রম শোষণকে তীব্র থেকে তীব্রতর করার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
এ সময় গ্রেপ্তার সব শ্রমিকের মুক্তি, শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধ এবং মে দিবসের প্রকৃত চেতনায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা।