প্রথমবারের মতো নতুন ধরনের উড়ন্ত গাড়ির ভিডিও প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নির্মাতা সংস্থা আলেফ অ্যারোনটিকস। প্রতিষ্ঠানটির একটি বৈদ্যুতিক গাড়ি ক্যালিফোর্নিয়ায় উল্লম্বভাবে উড়ে যাওয়ার মাধ্যমে একটি বড় মাইলফলক অর্জন করেছে। চলন্ত অবস্থা থেকে উড়ন্ত গাড়িতে রূপান্তরিত হতে পারে এই গাড়ি। গাড়ির একটি প্রোটোটাইপ আলেফ মডেল এ প্রদর্শন করা হয়েছে। এ গাড়িটি সড়ক ও বিমান উভয় ভ্রমণের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। তিন লাখ ডলারের এই গাড়ির জন্য ইতিমধ্যে তিন হাজারের বেশি অগ্রিম চাহিদা (প্রি-অর্ডার) দেওয়া হয়েছে।
এমন গাড়ি ব্যাক টু দ্য ফিউচার নামের সাইফাই সিনেমা কিংবা বিভিন্ন বিজ্ঞান কল্পকাহিনিতে দেখা যায়। সেখানে যেমন একটি উড়ন্ত গাড়িকে আকাশে উড়তে দেখা যায়, তেমনি বাস্তবে এমন গাড়ি উড়তে দেখা যাচ্ছে। মার্কিন গাড়ি নির্মাতা আলেফ অ্যারোনটিকস রাস্তায় চলার উপযোগী এই বৈদ্যুতিক গাড়িকে উল্লম্বভাবে উড়ে যাওয়ার জন্য ডিজাইন করেছে। এই প্রোটোটাইপকে বিমান চলাচল ও মোটরগাড়ির ইতিহাসে একটি বড় মাইলফলক বলে অভিহিত করা হচ্ছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার একটি রাস্তায় পরীক্ষামূলক ফ্লাইটটি পরিচালনা করা হয়। সেখানে দেখা যায়, একটি কালো প্রোটোটাইপের গাড়ি সাধারণ গাড়ির মতোই রাস্তায় চলতে পারে। চলার পথেই হঠাৎ অন্য একটি গাড়ির ওপর দিয়ে বাতাসে উড়ে যায় এই উড়ন্ত গাড়ি। গেল কয়েক বছরে অনেক উড়ন্ত গাড়ি দেখা যায়, যাদের বেশির ভাগই রানওয়ে ব্যবহার করে আকাশে উড়ে। নতুন গাড়িটি প্রথমবারের মতো রাস্তা থেকে সরাসরি উড়ন্ত অবস্থায় চলে যেতে পারে। আলেফের সিইও জিম দুখোভনি বলেন, উড্ডয়নের সেই মুহূর্তটিকে রাইট ব্রাদার্সের ১৯০৩ সালের কিটি হক ফ্লাইটের সঙ্গে তুলনা করা যায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, গাড়ির প্রোটোটাইপটি আলেফের মডেল জিরোর একটি অতি হালকা সংস্করণ, যার বাণিজ্যিক মডেল এ অনুসরণ করবে। দুই আসনের গাড়িটি উড়ন্ত অবস্থায় ১১০ মাইল যেতে পারে। সর্বোচ্চ ড্রাইভিং রেঞ্জ ২০০ মাইল। অটোপাইলটিং ফ্লাইট ক্ষমতা আছে গাড়িটিতে। গাড়ির নকশায় আটটি স্বাধীনভাবে ঘূর্ণায়মান রোটরের কথা জানা যায়। রাস্তায় চলার জন্য চাকার ভেতরে চারটি ছোট ইঞ্জিন রয়েছে। যদিও এর সর্বোচ্চ গতি প্রতি ঘণ্টায় ২৫ মাইল। গ্রাহকেরা মাত্র ১৫০ ডলার জমা দিয়ে তাঁদের জন্য এই উড়ন্ত গাড়ি বুক করতে পারছেন। কোম্পানিটি ২০৩৫ সালের মধ্যে একটি বৃহত্তর মডেল জেড সেডান চালু করার পরিকল্পনা করছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথমবার বিগ ব্যাশে বাবর আজম
বিশ্ব ক্রিকেটে ব্যাট হাতে বহুবার তোলপাড় করা বাবর আজম এবার অস্ট্রেলিয়ার জমজমাট বিগ ব্যাশ লিগে (বিবিএল) পা রাখতে যাচ্ছেন। দীর্ঘদিন গুঞ্জনের পর অবশেষে এই পাকিস্তানি তারকাকে নিজেদের স্কোয়াডে টেনে নিয়েছে সিডনি সিক্সার্স। নতুন মৌসুমে (২০২৫) তাকে দেখা যাবে গোলাপি জার্সিতে।
এটাই বাবরের প্রথমবারের মতো বিগ ব্যাশে খেলার অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে। সিডনি সিক্সার্সের সঙ্গে তার এই চুক্তিটি হয়েছে প্রি-সাইনিং অপশনের মাধ্যমে, যেখানে প্রতিটি দল আন্তর্জাতিক ড্রাফট শুরুর আগেই একজন বিদেশি ক্রিকেটারকে দলে নিতে পারে। ১৯ জুন শুরু হতে যাওয়া আন্তর্জাতিক ড্রাফটের আগেই সিক্সার্স বাবরের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি সম্পন্ন করে।
দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাবরের মতো বিশ্বমানের অভিজ্ঞ একজন টপ অর্ডার ব্যাটারকে পাওয়ার অর্থই হলো দলে গভীরতা ও ভারসাম্য বাড়ানো। এই তারকার সঙ্গে একই দলে থাকছেন স্টিভ স্মিথ, শন অ্যাবটের মতো অভিজ্ঞ অজি খেলোয়াড়রা, যা দলের শক্তিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।
গত মৌসুমে একমাত্র সিডনি সিক্সার্সই ছিল এমন দল, যারা কোনো বিদেশি তারকাকে আগেভাগে দলে নেয়নি। এবার তারা সেই ঘাটতি পূরণ করল বাবরের মতো একজন ক্রিকেট সেনসেশনকে নিয়ে।
তবে বাবরের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অনেকবার। পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি দলে তার জায়গা এখন অনিশ্চিত, ব্যাটেও অনুজ্জ্বল সময় কাটছে। তবু, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে নতুন এই চ্যালেঞ্জ বাবরের জন্য এক নতুন দরজা খুলে দিতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।
চুক্তির পর নিজের প্রতিক্রিয়ায় বাবর জানান, “এটা আমার জন্য দারুণ এক সুযোগ। বিগ ব্যাশ বিশ্বের অন্যতম সেরা টি-টোয়েন্টি লিগ এবং সিডনি সিক্সার্স একটি সফল ফ্র্যাঞ্চাইজি। এই দলে খেলার সুযোগ পেয়ে আমি গর্বিত। আমি চাই দলের জয়ে অবদান রাখতে, ভক্তদের ভালোবাসা কুড়াতে এবং এই অভিজ্ঞতা আমার পরিবারের সঙ্গে ভাগ করে নিতে।”
অস্ট্রেলিয়ায় বাবরের প্রথম আগমনকে ঘিরে ইতোমধ্যেই পাকিস্তানি ভক্তদের মধ্যে উচ্ছ্বাসের জোয়ার বইছে। অনেকেই বলছেন, হয়তো এটাই সেই ‘নতুন শুরু’, যেটা বাবরের ক্যারিয়ার আবার উজ্জ্বল করে তুলতে পারে।
ঢাকা/আমিনুল