আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত ও অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে দুদক। এই তালিকায় রয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক হুইপ শামসুল হক চৌধুরী, সাবেক এমপি মাহফুজুল হক মিতা ও আবু রেজা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভীও। আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলরও আটকেছেন দুদকের জালে। এর বাইরে আওয়ামী লীগ শীর্ষ নেতা, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগপন্থি পেশাজীবীসহ দুর্নীতি করে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক বনে যাওয়া দুই ডজন প্রভাবশালী দুদকের রাডারের মধ্যে রয়েছে। দুদক চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের বাইরেও ঢাকা থেকে সরাসরি আওয়ামী লীগ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ২৬ ব্যক্তির বিরুদ্ধে পৃথকভাবে তদন্ত চলছে।
দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এর উপপরিচালক মো.

নাজমুচ্ছায়াদাত এ ব্যাপারে বলেন, ‘সাবেক সিটি মেয়র, সাবেক এমপিসহ বেশ কয়েকজনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অনুসন্ধান করছি আমরা। এ ছাড়া অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাচ্ছি। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এমপি-মন্ত্রীর বাইরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের  দুর্নীতিতে জড়িতের বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান চলছে। কমিশন যেভাবে নির্দেশনা দিচ্ছে সেই অনুযায়ী কাজ চলছে।’
চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২-এর উপপরিচালক আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘পটিয়ার সাবেক এমপি, হুইপ শামসুল হক চৌধুরী ও সন্দ্বীপ আসনের সাবেক এমপি মাহফুজুর রহমান মিতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। এ দুজন ছাড়া আওয়ামী লীগের বড় আর কোনো নেতার বিরুদ্ধে আমরা অনুসন্ধান করছি না। কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করছি আমরা।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নতুন কমিশন গঠনের পর দুদক প্রধান কার্যালয় থেকেই সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও তাঁর পরিবার, মহিবুল হাছান চৌধুরী নওফেল, সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের বিরুদ্ধে সরাসরি তদন্ত চলছে। চট্টগ্রাম অফিস থেকে তথ্যগত সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। চট্টগ্রামে থাকা দুদকের দুটি কার্যালয় থেকে পটিয়ার সাবেক এমপি ও হুইপ শামসুল হক চৌধুরী, সন্দ্বীপ আসনের সাবেক এমপি মাহফুজুর রহমান মিতা, সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সাবেক এমপি আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুউদ্দিন নদভী, সাবেক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা, পটিয়া উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ডা. তিমির বরণ চৌধুরী, চসিক কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন, কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, কাউন্সিলর আবুল ফজল কবির আহমেদ মানিকের অবৈধ সর্ম্পদ অর্জনের অনুসন্ধান করছে দুদক। 
এর বাইরে পোর্টল্যান্ড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মজুমদারের বিরুদ্ধে অবৈধ সর্ম্পদ অর্জন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন উপাচার্য ড. আনোয়ারুল আজিম আরিফ, ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী ও ড. শিরীণ আখতারের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫৪০ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান করছে দুদক।
‘অকল্পনীয় অবৈধ সম্পদ অর্জন’ হাছান মাহমুদের : আওয়ামী লীগ সরকারের খুবই প্রভাবশালী তিনবারের মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের দুর্নীতি অনুসন্ধানে ৫ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের কমিটি মাঠে নেমেছে। দুদকের এক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিগত সরকারের মন্ত্রী হাছান মাহমুদের ‘অকল্পনীয় অবৈধ সম্পদ অর্জন’ এর অভিযোগ অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। কমিটি আরও সেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে তারা হলেন, সাবেক মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের স্ত্রী নুরান ফাতেমা, মেয়ে নাফিসা জুনাইনা মাহমুদ, ভাই এরশাদ মাহমুদ, খালেদ মাহমুদ, মোরশেদ মাহমুদ, রাসেল মাহমুদ, ড. হাছান মাহমুদের তিন ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) এমরুল করিম রাশেদ, মো. কায়সার ও গিয়াস উদ্দিন স্বপন, ড. হাছান মাহমুদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিস লিমিটেড, একাডেমি অব মেরিন এডুকেশন অ্যান্ড টেকনোলজি লি., বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিস জেএএস লিমিটেড, মেসার্স বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড হোল্ডিংস, অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ সোলার পাওয়ার লিমিটেড ও সুখী বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন। দুদক তাদের সম্পদ ও আর্থিক তথ্য চেয়ে ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। 
অনুসন্ধান দলের নেতা দুদকের উপপরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘হাছান মাহমুদসহ তার সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের সর্ম্পকে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। এছাড়া যেখানে যেখানে তাদের সর্ম্পকে দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যেতে পারে সেখানে কাজ করছি। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ান বাজার এলাকায় ১৮ তলা ভবন ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নগদ অর্থের সন্ধান পেয়েছি।’
তদন্ত দলের এক কর্মকতা জানান, হাছান মাহমুদের ছোট ভাই মোরশেদ মাহমুদ বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। হাছান মাহমুদ দেশ থেকে তার কাছে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন। সেসব সম্পদ তার ভাই দেখভাল করছেন। দেশে ভাই খালেদ মাহমুদ ও এরশাদ মাহমুদের নামে সম্পদ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন।’
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র স ব ক এমপ র রহম ন মন ত র তদন ত ব যবস আওয় ম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিনা মূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের সুযোগ, সারা দেশে ৮টি কেন্দ্রে

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ প্রশিক্ষণের মেয়াদ দুই মাস। প্রশিক্ষণটি আগামী ১২ অক্টোবর শুরু হবে, চলবে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রশিক্ষণ শেষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সরকারি সনদ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীদের ৯ অক্টোবরের মধ্যে ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে আবেদন করতে হবে।

প্রশিক্ষণের বিষয়

১. বেসিক কম্পিউটার,

২. অফিস অ্যাপ্লিকেশন ও ইউনিকোড বাংলা,

৩. ইন্টারনেট,

৪. গ্রাফিক ডিজাইন,

৫. ফ্রিল্যান্সিং,

৬. মার্কেটপ্লেস ও কনসালটিং।

আরও পড়ুনহার্ভার্ড এনভায়রনমেন্টাল ফেলোশিপ, দুই বছরে ১ লাখ ৮৫ হাজার ডলার১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫আবেদনের যোগ্যতা

১. ন্যূনতম দাখিল বা সমমানের পরীক্ষায় পাস হতে হবে,

২. হাফেজদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা হবে,

৩. উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে,

৪. প্রার্থীকে কম্পিউটার চালনায় বেসিক জ্ঞান থাকতে হবে,

৫. যাঁদের নিজস্ব কম্পিউটার আছে, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে।যে ৮টি কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে

১. ঢাকা,

২. চট্টগ্রাম,

৩. রাজশাহী,

৪. খুলনা,

৫. বরিশাল,

৬. সিলেট,

৭. দিনাজপুর,

৮. গোপালগঞ্জ।

আরও পড়ুনবিনা মূল্যে ২ লাখ টাকার প্রশিক্ষণ, নন-আইটি স্নাতক শিক্ষার্থীদের সুযোগ ৭ ঘণ্টা আগেদরকারি কাগজপত্র

১. শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদের সত্যায়িত ফটোকপি,

২. জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি,

৩. এক কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি জমা দিতে হবে,

৪. ইমামদের ক্ষেত্রে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অথবা ওয়ার্ড কমিশনারের কাছ থেকে নেওয়া ইমামতির প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে,

৫. মাদ্রাসাছাত্রদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছ থেকে ছাত্রত্ব প্রমাণের কপি জমা দিতে হবে।

নিবন্ধন ফি

মনোনীত প্রার্থীদের নিবন্ধন ফি হিসেবে ৫০০ টাকা দিতে হবে।

দেশের ৮টি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে

সম্পর্কিত নিবন্ধ