ঢাকার দোহার উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদ্য ঘোষিত কমিটি অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে সংবাদ সম্মেলন করেছে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। আজ রোববার দুপুরে দোহার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা ওই কমিটি বাতিলের দাবি জানান।

এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্যসচিব আরিফ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে মো.

রনি দেওয়ানকে আহ্বায়ক ও শহিদুল ইসলামকে সদস্যসচিব করে ২২৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। আগামী ছয় মাসের জন্য ওই কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্র।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দোহারে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে ‘সক্রিয়’ শিক্ষার্থী আবুল কালাম। এ সময় সদ্য ঘোষিত কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব পায়েল নুর, পদবঞ্চিত শিক্ষার্থী নুরুল ইসলাম রিজভী, সিনহা, মুসা, অমি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দোহারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বৈষম্যমূলক একটি কমিটি করা হয়েছে, যেখানে হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া যাঁরা রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামের ভিত্তি তৈরি করেছিলেন, তাঁদের রাখা হয়নি। ঢাকাসহ বড় শহরগুলোর বাইরে সবচেয়ে বেশি সর্বাত্মক আন্দোলন হয় দোহারে। তাঁরা ১৮-১৯ জুলাই ও ৪ আগস্ট দোহারে যে আন্দোলন গড়ে তোলেন, সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

সংবাদ সম্মেলনে পদবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, আন্দোলনের সময় দোহারে কোনো সমন্বয়ক ছিল না। কিন্তু কতিপয় ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য বৈষম্যবিরোধী ব্যানারে পকেট কমিটি করেছেন। এর সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম সম্পর্ক নেই। কমিটির বেশির ভাগ সদস্য আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন না। তাঁরা কমিটি বাতিলে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চান।

এ বিষয়ে সদ্য ঘোষিত কমিটির আহ্বায়ক রনি দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁর বাড়ি দোহারের কুসুমহাটি এলাকার মাহতাবপুরে। তিনি তেজগাঁও কলেজের শিক্ষার্থী। কোটাবিরোধী আন্দোলনের সবাইকে নিয়েই কমিটি করা হয়েছে। তবে যাঁরা সংবাদ সম্মেলন করেছেন, তাঁরাও আন্দোলনে ছিলেন। পায়েল নুর কমিটিতে যুগ্ম সদস্যসচিব হিসেবে আছেন। অন্যরা কিছু রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত থাকায় কমিটিতে নেওয়া হয়নি।’

দোহারের জয়পাড়া কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী পায়েল নুর আরও বলেন, ‘কমিটিতে আমাদের সঙ্গে যাঁরা আন্দোলনে ছিলেন, তাঁদের রাখা হয়নি। তাই আমি এ কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছি।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সদস যসচ ব কম ট র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

৮ বছরেও শুরু হয়নি কুবির ২ বিভাগের কার্যক্রম

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) দীর্ঘ ৮ বছর আগে অনুমোদন পাওয়া দুটি বিভাগ এখনো চালু হয়নি। অনুমোদন সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ, অবকাঠামোগত প্রস্তুতি এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের ধীরগতির কারণে বিভাগ দুটি কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীনে ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকেই বিভাগ দুটি চালু হওয়ার কথা থাকলেও, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত ও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের পরে বিভাগ দুটি চালুর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি।

আরো পড়ুন:

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় কুবি প্রক্টরের জরুরি নির্দেশনা 

সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে কুবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

এছাড়া, তৎকালীন অর্গানোগ্রামে ৩১টি বিভাগের মধ্যে এই দুইটি বিভাগ অন্তর্ভুক্ত ছিল না, যা পরবর্তীতে চালু করা নিয়ে জটিলতা তৈরি করে।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে বৈঠক করে এই বিষয়ে পুনরায় আলোচনা করে। ইউজিসি নির্দেশনা অনুযায়ী, নতুন অর্গানোগ্রামে বিভাগের অন্তর্ভুক্তি ও নতুন বিভাগের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

সে অনুযায়ি ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কুবির ৮৯তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে পূর্বের ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ এর পরিবর্তে ‘লজিস্টিক্স ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ’ এবং ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’-এর পরিবর্তে ‘পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ নামে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও অর্গানোগ্রামে নতুন আরও ১৮টি বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

তৎকালীন বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রস্তাবক রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান বলেন, “২০১৭ সালে অনুমোদন থাকলেও জায়গা সংকটের কারণে বিভাগ চালু করা সম্ভব হয়নি। পরে প্রশাসন পাল্টালেও কেউ উদ্যোগ নেয়নি।”

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “অর্গানোগ্রামে অন্তর্ভুক্তি মানে এখনই চালু হবে না। অনুমোদন থাকলেও তৎকালীন সময়ে চালু করা সম্ভব হয়নি। এখন ইউজিসি নির্দেশনায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “তৎকালীন প্রশাসন বলতে পারবে কেন বিভাগ চালু হয়নি। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা মাধ্যমে নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী ২ বছরের মধ্যে আশা করি বিভাগ চালু করা সম্ভব হবে, তখন নতুন ক্যাম্পাসও প্রস্তুত থাকবে।”

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ