নির্বাচন হলে দেশে স্থিতিশীলতা আসবে: তারেক রহমান
Published: 23rd, February 2025 GMT
জাতীয় নির্বাচন হলে দেশে স্থিতিশীলতা আসবে বলে মনে করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, অনেকে বলেন নির্বাচন হলেই কি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? নির্বাচন হলে একটি স্থিতি অবস্থা আসবে এবং ধীরে ধীরে সংস্কারের কাজগুলো শুরু হবে। সমস্যাগুলোর তীব্রতা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে না পারলে যে যত সংস্কারই ঘোষণা করি না কেন, যে যত নীতি গ্রহণ করি না কেন, কোনোটিই সফল হবে না। রাজনীতি অস্থির হলে প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে এবং অর্থনীতি প্রভাব ফেলবে সবকিছুতে।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন। এই কর্মশালার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঢাকা বার ইউনিট।
অনুষ্ঠানে তারেক রহমান বলেন, কোন নির্বাচন আগে হবে, কোনটি পরে হবে—এ নিয়ে বিভিন্ন দাবি থাকতেই পারে। তবে এ নিয়ে বাস্তবতা বিবেচনা করতে হবে। চারদিকে অস্থিরতা ও অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের মূল দায়িত্বের বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দেশের মানুষ যে সিদ্ধান্ত নিতে চায়, তার সঙ্গে একমত পোষণ করা। দেশের মানুষকে সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করা। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহযোগিতা করা। কিন্তু সরকারের ভেতরকার ও বাইরের বিভিন্ন ব্যক্তির আলোচনা শুনে মনে হচ্ছে সম্ভবত তারা ক্ষেত্রবিশেষে তাদের লক্ষ্য থেকে কিছুটা হলেও বিচ্যুত হচ্ছেন। বিভিন্ন ব্যক্তির বিভিন্ন বিবৃতি থেকে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। রাজনীতিতে যখন দ্বিধা থাকবে, তখন অস্থিরতা দেখা দেবে।
সংসদকে কার্যকর করতে যত দেরি হবে, তত বেশি চারদিকে এই অস্থিরতা, তর্ক-বিতর্ক ছড়াতে থাকবে বলেও মনে করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, এ কারণে সামগ্রিকভাবে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি মনে করে, যত দ্রুত দেশে একটি স্থিতি অবস্থা আনা যাবে, তত দ্রুত দেশকে ধ্বংসের কিনারা থেকে ধীরে ধীরে সরিয়ে নিয়ে আসা সম্ভব হবে।
কর্মশালায় আরও বক্তব্যে দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান, বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর প্রমুখ।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঢাকা বার ইউনিটের সদস্যসচিব মো.                
      
				
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন ব এনপ র র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারির পাশাপাশি বেসরকারি প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরাও বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে: হাইকোর্ট
শুধু সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ দিতে পারবে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নেওয়া সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি রেজাউল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রায় দেন।
একই সঙ্গে ২০০৮ সালের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নীতিমালার আলোকে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে পরীক্ষার আয়োজন করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০২৫ সালের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বৃত্তি পরীক্ষা আগামী ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
আইনজীবীদের তথ্যমতে, শুধু সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গত ১৭ জুলাই এক স্মারকে জানায়। এই সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কেরানীগঞ্জ পাবলিক ল্যাবরেটরি স্কুলের পরিচালক মো. ফারুক হোসেন, শিক্ষক ও অভিভাবক প্রতিনিধিসহ ৪২ জন চলতি বছর রিটটি করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল দিয়ে ওই স্মারকের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য স্থগিত করেন। শুধু সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতিসংক্রান্ত ১৭ জুলাইয়ের ওই স্মারক (ম্যামো) কেন আইনগত কর্তৃত্ব–বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে ২০০৮ সালের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নীতিমালার আলোকে বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়। চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে রায় দেওয়া হয়।
আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী নিয়াজ মোর্শেদ। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষে আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সৈয়দ ইজাজ কবির।
পরে আইনজীবী নিয়াজ মোর্শেদ প্রথম আলোকে বলেন, শুধু সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ দিতে পারবে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গত ১৭ জুলাইয়ে স্মারক অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। ২০০৮ সালের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নীতিমালা অনুসারে সব বেসরকারি অর্থাৎ বেসরকারি নিম্নমাধ্যমিক, রেজিস্ট্রার্ড কিন্ডারগার্টেন, কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং রেজিস্টার্ড/অস্থায়ী রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত/স্থাপনা ও প্রাথমিক অনুমতিপ্রাপ্ত চালু বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। এ জন্য ১৫ দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। হাইকোর্টের রায়ের ফলে শুধু সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাই নয়, এসব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।
প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ১৯৮১ সালে প্রবর্তন করা হয় বলে জানান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ২০০৫ সালে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পায়। ২০০৮ সাল পর্যন্ত এটি চলে। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত নতুন নীতিমালার আলোকে পিএসসি পরীক্ষা হয়। এতে যারা ভালো করত, তাদের বৃত্তি দেওয়া হতো। তবে করোনার সময় ২০২০ ও ২০২১ সালে তা বন্ধ ছিল। ২০২২ সালে আবার বৃত্তি পরীক্ষা শুরু হয়, তবে তা প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার নীতিমালার (সংশোধিত–২০১৬) আলোকে। বিভিন্ন কারণে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে এটি বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি বিবেচনায় ২০২৫ সালে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শুধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেবে। বেসরকারি শিক্ষার্থীরাও প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে—এমন নির্দেশনা দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। তারা যাতে পরীক্ষা দিতে পারে সে জন্য ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে।