লোহার শিকলে বন্দি হয়ে দুঃসহ জীবন কাটছে মাসুদ রানার (৩৫)। মানসিক ভারসাম্যহীন এই যুবকের দিন আর রাত কাটে একটি ঝুপড়ি ঘরের নড়বড়ে কাঠের বিছানায়। কেউ তার অসহায়ত্ব বোঝে না। অথচ একসময় মাসুদও ভালো স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে জীবনযাপন করেছেন। ২০০৪ সালে তিনি এসএসসি পাস করেন। 

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার তারাবাড়িয়া গ্রামের মৃত শফিকুল ইসলামের ছেলে মাসুদ রানা। জন্মগতভাবে তিনি স্বাভাবিক ছিলেন। উপজেলার সোনতলা তফছীর মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করার পর উল্লাপাড়া আরএস ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হন তিনি। হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন মাসুদ। পরিবার থেকে যথেষ্ট চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু কাজ হয়নি। আস্তে আস্তে মানসিক ভারসাম্য হারাতে থাকেন। এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়, যে বাড়ির বাইরে গেলেই যেকোন কাউকে পেলে তাকে ধরে পেটাতেন। ধাওয়া দিতেন। পরে গ্রামের লোকজনের অভিযোগ অনুযোগের প্রেক্ষিতে নিরুপায় হয়ে পরিবারের লোকজন তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে ঘরে আটকে রাখছেন। আর এ অবস্থা চলছে প্রায় ৭ বছর ধরে। 

মাসুদ রানা’র মাও মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। তার আছে শুধু এখন দুই ভাই দুই বোন। ভাইরা তার প্রতিপালন ও দেখাশোনা করে থাকেন। মাসুদের বড় ভাই সোহেল রানা জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে ২০০৯ সালের দিকে মাসুদ অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসা করানোর পরও ধীরে ধীরে তার মানসিক ভারসাম্য হারাতে থাকে। অবশেষে এমন পাগলামি শুরু করেন যে তাকে আর শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা ছাড়া তাদের আর দ্বিতীয় কোনো পথ ছিল না। এটা অত্যন্ত অমানবিক কাজ নিঃসন্দেহে। কিন্তু তারা গরীব মানুষ। তাদের যা সহায় সম্পদ ছিল সবই বিক্রি করে মাসুদের চিকিৎসা করিয়েছেন। কাজ হয়নি কিছুই। মাঝে মাঝে মাসুদ তার স্মৃতি ফিরে পান। তখন স্বাভাবিক মানুষের মতো জীবনের ফেলে আসা অনেক ঘটনার কথা ঠিকঠাক মতো বলতে পারেন। কিন্তু এই স্বাভাবিকতা বেশিক্ষণ স্থায়ী থাকে না। বর্তমানে মাসুদকে অমানবিক ও দুঃসহ জীবন কাটাতে হচ্ছে। পরিবারের আর কিছুই করার নেই। তারা এজন্য নিজেরাও খুবই কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করছেন। মাসুদকে ওই ঘরের মধ্যেই প্রসাব পায়খানা করানোর ব্যবস্থা করা হয়। মাসুদ রানার দুই ভাই কেউই এখন সচ্ছল নন। তাই এ অবস্থায় অন্তত মাসুদ রানার একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান সোহেল। সেই সঙ্গে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তারও অনুরোধ জানান তিনি। 

এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো.

রফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, বিষয়টি তিনি আগে জানতেন না। তারপরেও কোনো মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষকে অমানবিকভাবে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার কোনো নিয়ম নেই। তিনি দ্রুত তদন্ত করে মাসুদ রানাকে শিকল মুক্ত ও তার প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেওয়ার ব্যবস্থা নেবেন বলে উল্লেখ করেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি প্রোগ্রাম, জেএসসি ছাড়াও ভর্তি

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন স্কুল পরিচালিত এসএসসি প্রোগ্রামের মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞান শাখায় ২০২৬-২০২৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভর্তির যোগ্যতা জেএসসি পাস হতে হবে। জেএসসি ছাড়াদের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

ভর্তির দরকারি তারিখ—

১. অনলাইনে ভর্তি এবং আবেদনের তারিখ শেষ তারিখ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৬।

২. অষ্টম শ্রেণি বা সমমানের সনদবিহীন ভর্তি-ইচ্ছুকদের ভর্তি পরীক্ষা : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৬।

৩. ওরিয়েন্টেশন ও টিউটোরিয়াল ক্লাস শুরু : ১৫ মে ২০২৬।

ভর্তির যোগ্যতা—

১. জেএসসি বা জেডিসি বা অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের পরীক্ষায় পাস বা উত্তীর্ণ হতে হবে। (ভর্তির তারিখ ০২/১১/২০২৫ থেকে ৩১/০১/২০২৬)।

২. সরাসরি অনলাইন ভর্তির জন্য: osapsnew.bou.ac.bd

ভর্তির যোগ্যতা(জেএসসি ছাড়া) —

১. যেসব শিক্ষার্থীর জেএসসি বা জেডিসি বা অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের সনদপত্র নেই তারাও ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন, এ ক্ষেত্রে বয়স হতে হবে ন্যূনতম ১৪ বছর (৩১/১২/২০২৫ তারিখে)।

২. এসব আবেদনকারীকে যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য বাউবি কর্তৃক নির্ধারিত ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

৩. এ জন্য ভর্তির প্রাথমিক আবেদন ফরম ফি বাবদ ৩০০ টাকা দিতে হবে।

৪. ভর্তি পরীক্ষার বিষয়, মানবণ্টন, তারিখ ও পরীক্ষা কেন্দ্র এবং প্রক্রিয়ার বিস্তারিত তথ্য বাউবি’র ওয়েবসাইট, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্র এবং স্টাডি সেন্টার থেকে পাওয়া যাবে। (অনলাইনে আবেদনের তারিখ ০২/১১/২০২৫ থেকে ৩১/০১/২০২৬)।

প্রয়োজনীয় কাগজ যা লাগবে—

১. দুই কপি ছবি।

২. জেএসসি বা জেডিসি বা অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের পরীক্ষায় পাস বা উত্তীর্ণের সনদ।

৩. জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদের সত্যায়িত ফটোকপি।

ভর্তি ও অন্যান্য ফি—

অনলাইন আবেদন ফি: ১০০ টাকা,

রেজিস্ট্রেশন ফি : ১০০ টাকা,

কোর্স ফি (প্রতি কোর্স ৫২৫ টাকা): ৩৬৭৫ টাকা,

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আবশ্যিক) ব্যবহারিক ফি: ১০০ টাকা,

একাডেমিক ক্যালেন্ডার ফি:৫ টাকা,

ডিজিটাল আইডি কার্ড ফি: ২০০ টাকা,

পরীক্ষা ফি (প্রতি কোর্স ৫০ টাকা) : ৩৫০ টাকা,

প্রথম বর্ষ নম্বরপত্র ফি : ৭০ টাকা,

মোট আবেদন ফি: ৪৬৯৬ টাকা।

বিজ্ঞান শাখার জন্য দুটি ব্যবহারিক কোর্সের জন্য অতিরিক্ত ২০০ টাকা জমা দিতে হবে।

দরকারি তথ্য—

১. অষ্টম শ্রেণি বা সমমান পাসের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর নাম, পিতা ও মাতার নাম এবং জন্ম তারিখ ইত্যাদি প্রদত্ত সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী একই রকম হতে হবে।

২. জেএসসি বা জেডিসি পাসের ক্ষেত্রে জেএসসি বা জেডিসি সনদ অনুযায়ী হতে হবে। ২০২০ সাল কিংবা তার পরবর্তীতে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অষ্টম শ্রেণি পাশ সনদে বা প্রমাণকে বোর্ড কর্তৃক ইস্যুকৃত রেজিস্ট্রেশন নম্বর উল্লেখ থাকতে হবে। সনদবিহীনদের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ অনুযায়ী হতে হবে।

৩. তৃতীয় লিঙ্গের শিক্ষার্থীরা কোর্স ফির শতকরা ৬০ ভাগ ছাড় পাবেন।

# বিস্তারিত তথ্যের জন্য ওয়েবসাইট

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি প্রোগ্রাম, জেএসসি ছাড়াও ভর্তি