Samakal:
2025-08-02@05:06:34 GMT

কারখানার বর্জ্যে মরছে নদী-খাল

Published: 25th, February 2025 GMT

কারখানার বর্জ্যে মরছে নদী-খাল

মির্জাপুরে টেক্সটাইল কারখানার শিল্পবর্জ্যে দূষিত হচ্ছে পাকুল্যা খাল ও লৌহজং নদী। রাসায়নিকের দুর্গন্ধে বিপর্যয়ের মুখে পরিবেশ। মরে যাচ্ছে মাছ। রাসায়নিক মিশ্রিত পানি পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
জানা যায়, কয়েক বছর আগে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নের কদিমধল্যা-সংলগ্ন বানিয়ারা মৌজায় সাদিয়া টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড নামে একটি কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়। কারখানার দূষিত বর্জ্য খালে ফেলতে দুই বছর আগে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশ ঘেঁষে কংক্রিটের পাইপ স্থাপন করা হয়। ওই পাইপ দিয়ে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে পাকুল্যা খালে নিয়মিত কারখানার দূষিত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। খালের পানি প্রবাহিত হচ্ছে লৌহজং নদীতে। ফলে ক্রমেই দূষণে পাকুল্যা খাল ও লৌহজং নদীর পানি অসহনীয় দুর্গন্ধযুক্ত ও কালো কুচকুচে হয়ে পড়েছে। এতে খাল ও নদীর মাছ মরে যাচ্ছে। নদী ও খালের পানি ব্যবহারকারীরা পড়েছেন বিপাকে। স্থানীয়দের অভিযোগ, তারা নদী ও খাল থেকে মাছ ধরলেও সেই মাছ রান্নার পর দুর্গন্ধে খাওয়া যাচ্ছে না।
পাকুল্যা খাল ও লৌহজং নদী এ উপজেলার জামুর্কী, ভাতগ্রাম ও বানাইল ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষের গুরুত্বপূর্ণ পানির উৎস। এই খাল ও নদীতে স্থানীয় বাসিন্দারা মাছ ধরা ছাড়াও 
গোসল, গৃহস্থালির কাজ, আবাদি জমিতে সেচ ও গরু-মহিষ গোসল করানোর জন্য ব্যবহার করে থাকেন। সম্প্রতি খাল ও নদীর পানি কালো কুচকুচে হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। জন্ম নিচ্ছে পোকা। এ কারণে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে খাল ও নদীর পানি।
পাকুল্যা গ্রামের বাসিন্দা রফিক মিয়া বলেন, তাদের চাটাই তৈরির কাজের জন্য আনা বাঁশ পাকুল্যা খালে ভিজিয়ে রেখে কাজ করেন। গত দুই বছর ধরে সাদিয়া কারখানার দূষিত পানি খালে ফেলায় পানি দুর্গন্ধ ও কালো কুচকুচে হয়ে গেছে। পানিতে নামলে শরীর চুলকায় ও ঘা হয়।
শ্রমিক নেতা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পানি কালো হয়ে গেছে। নদীর মাছ প্রায়ই মরে ভেসে ওঠে। দুর্গন্ধে থাকা যায় না। এই খালের পানি লৌহজং নদীতে পড়ছে। লৌহজং নদীর মাছও মরে ভেসে ওঠে। বিষাক্ত পানি নদীতে আসায় এখন তারা গোসল করতে পারেন না, জমিতে সেচ দিতে পারেন না।
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশনের (বিএমবিএফ) পর্যবেক্ষণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আকিব আকবর খান চৌধুরী বলেন, সাদিয়া টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের শিল্পবর্জ্যের দূষণ চরম আকার ধারণ করেছে। যা ফসলের ক্ষতি, নিরাপদ পানির অভাবসহ পরিবেশের বিপর্যয় ডেকে এনেছে।
জামুর্কী ইউপি চেয়ারম্যান ডি এ মতিনের ভাষ্য, এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পাকুল্যা খালের সাটিয়াচড়া এলাকায় দুর্গন্ধযুক্ত কালো পানি দেখেছেন। পরে কয়েকটি গ্রামের কিছু সংখ্যক লোক নিয়ে সাদিয়া কারখানায় গিয়ে মালিকের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু এখনও সমস্যা রয়ে গেছে।
খালে দূষিত বর্জ্য মিশ্রিত পানি ফেলার খবর পেয়ে গতকাল মঙ্গলবার ওই এলাকা পরিদর্শন করে টাঙ্গাইল পরিবেশ অধিদপ্তর। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আরিফুল ইসলাম, পরিবেশ অধিদপ্তর টাঙ্গাইল অফিসের উপপরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক, পরিদর্শক বিপ্লব কুমার সুত্রধর প্রমুখ। এলাকা পরিদর্শন করে পরিবেশ অধিদপ্তর দূষিত বর্জ্য মিশ্রিত পানি সংগ্রহ করে। এই পানি পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।
সাদিয়া টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রহমানের দাবি, তাদের কারখানায় বায়োলজিক্যাল ইটিপি রয়েছে। ২৪ ঘণ্টা আমাদের ইটিপি চলে এবং সরকার নির্ধারিত রেঞ্জের মধ্যেই আছে। বায়োলজিক্যাল ইটিটি করলে পানির মূল রং থাকে না। এটা কোনো ক্ষতির কারণ নয়।
পরিবেশ অধিদপ্তর টাঙ্গাইল অফিসের উপপরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক বলেন, সাদিয়া টেক্সটাইল মিলের দূষিত বর্জ্য মিশ্রিত পানি খালে ফেলার খবর পেয়ে ওই এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। সেখান থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, যা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হবে বলে তিনি জানান।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র দ ষ ত বর জ য র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও দেড় শ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থার উপপরিচালক মো. আজিজুল হক বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া আসাদুজ্জামান নূরের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকা। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।

২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একে একে মামলা ও গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফারইস্ট লাইফ ইনস্যুরেন্সের সাবেক চেয়ারম্যানসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
  • জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা