ফজলুল কাদেরের নামে প্রস্তাবিত ছাত্র হলের নামকরণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি
Published: 26th, February 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জন্য প্রস্তাবিত হলের নামকরণ একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডিত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরী নামে করার প্রতিবাদ জানিয়েছেন চবি ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা। আগামী এক মাসের মধ্যে তাঁরা এই সিদ্ধান্ত বাতিলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সময় বেঁধে দিয়েছেন। পাশাপাশি প্রস্তাবিত হলটি বিজ্ঞানী জামাল নজরুল ইসলামের নামে নামকরণ করার দাবিও জানিয়েছেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতা–কর্মীরা।
আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান তাঁরা। নগরের ষোলশহর রেলওয়ে স্টেশনে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ইফাজ উদ্দিন আহমদ। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ফজলুল কাদের চৌধুরীর গুডস হিলের বাড়ি চট্টগ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের নির্যাতনের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর নৌযানে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় আনোয়ারা উপজেলায় গহীরা উপকূলে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ধরা পড়েন তিনি। মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠনের অভিযোগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী ছিলেন তিনি।’
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, যিনি সরাসরি মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাঁর নামে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন আবাসিক হলের নামকরণের সিদ্ধান্ত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। অবিলম্বে স্বাধীনতাবিরোধী ফজলুল কাদের চৌধুরীর নাম বাতিল করতে হবে। এই হলের নাম বিজ্ঞানী জামাল নজরুল ইসলাম ঘোষণা করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি সুদীপ্ত চাকমা, সাংগঠনিক সম্পাদক নয়ন কৃষ্ণ সাহা, শিক্ষা ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক সোহেল রানা, প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক অমৃতা চাকমা, সদস্য জেস চাকমা ও চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক শুভ দেবনাথ প্রমুখ।
এক প্রশ্নের উত্তরে সুদীপ্ত চাকমা বলেন, গতকাল তাঁরা প্রস্তাবিত হলের নাম পরিবর্তনের জন্য প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছেন। তাঁরা প্রশাসনকে এক মাসের সময় দিচ্ছেন। এর মধ্যে দাবি না মানা হলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে তাঁরা কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি দেবেন।
এর আগে গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সিন্ডিকেট সভায় ছাত্রদের জন্য নতুন একটি হল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। উত্তর ক্যাম্পাস এলাকায় পুরোনো শামসুননাহার হলের জায়গায় প্রস্তাবিত হলের নামকরণ করা হয়েছিল ফজলুল কাদের চৌধুরী হল। পাশাপাশি এই সভায় আরও ছয়টি স্থাপনার নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফজল ল ক দ র চ ধ র হল র ন ম র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত
ভোলায় গ্যাস ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবিতে চলমান ছয় দফা আন্দোলন স্থগিত করেছে ‘আমরা ভোলাবাসী’। সরকারি আশ্বাসের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন নেতারা।
সংগঠনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও আমরা ভোলাবাসীর জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সদস্য রাইসুল আলম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. এনামুল হক, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মোতাসিন বিল্লাহ, ভোলা জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী, ভোলা আলিয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম, ইসলামী আন্দোলনের ভোলা উত্তর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তরিকুল ইসলাম, ভোলা সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. কামাল হোসেন ও আমরা ভোলাবাসীর সদস্যসচিব মীর মোশাররফ হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভোলার গ্যাস স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের দাবিসহ ছয় দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে দাবি আদায়ে অগ্রগতি হয়েছে।
আমরা ভোলাবাসীর দাবির মধ্যে রয়েছে, ভোলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন, বিদ্যমান ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার সুবিধা নিশ্চিত করা, ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণ, ঘরে ঘরে গ্যাস সরবরাহ, গ্যাসভিত্তিক শিল্পকারখানা স্থাপন ও নদীভাঙন প্রতিরোধ।
সংগঠনটি জানায়, আন্দোলনের আগে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে মাত্র আট চিকিৎসক কর্মরত ছিলেন, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ জন। আরও চিকিৎসক, নার্স ও যন্ত্রপাতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। মেডিকেল কলেজ স্থাপনের বিষয়ে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে নতুন মেডিকেল কলেজ হলে, সেটি ভোলায় হবে। ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রেও ফিজিবিলিটি স্টাডি ও নকশা সম্পন্ন হয়েছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সার কারখানা ও ইপিজেড স্থাপনের জন্য জমি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানিয়েছেন নেতারা। গ্যাস–সংযোগের বিষয়ে জানানো হয়, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানিকে ডিমান্ড নোট জমা দেওয়া ২ হাজার ১৪৫ গ্রাহককে গ্যাস–সংযোগ দেওয়া হবে এবং ন্যায্যমূল্যে ২০ হাজার সিলিন্ডার বিতরণ করা হবে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আবার কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।