দৈনিক ১৫ ঘণ্টা পড়াশোনা করে বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় যমজ দুই ভাই
Published: 27th, February 2025 GMT
দুই যমজ ভাই নাহিদুল ইসলাম ও মাহিদুল ইসলাম। দেখতে হুবহু এক রকম। দুজনকে আলাদা করে চেনা মুশকিল। কম্পিউটার প্রোগ্রামার হওয়ার ইচ্ছা তাঁদের। সে কারণে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর দৈনিক ১৫ ঘণ্টার মতো লেখাপড়া করেছেন তাঁরা। একসঙ্গে দুই ভাই প্রস্তুতি নিয়ে ফলও পেয়েছেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ভর্তি পরীক্ষায় নজরকাড়া সাফল্য তাঁদের। মেধাতালিকায় প্রথম দিকেই রয়েছে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের দুই ভাইয়ের নাম।
নাহিদুল ও মাহিদুল চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যম সোনাপাহাড় এলাকার জসিম উদ্দিনের ছেলে। বুয়েটের এবারের ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় নাহিদুল ইসলাম ৫২তম ও মাহিদুল ইসলাম ১০১তম স্থান অধিকার করেছেন।
দুই ভাইয়ের এই ফলাফলে ঘরে রীতিমতো ঈদের খুশি। তাঁদের বাবা জসিম উদ্দিন বলেন, পড়াশোনা আর ক্রিকেট দুটোতেই ছিল তাঁর যমজ দুই সন্তানের সমান আগ্রহ। ছেলেদের ক্রিকেট প্রতিভা দেখে উচ্চশিক্ষা না ক্রিকেট, কোন পথে এগিয়ে নেবেন, এমন দোটানায় পড়েছিলেন তিনি। জসিম নিজেও ক্রীড়া সংগঠক। তাই ছেলেদের খেলাধুলায় উৎসাহ দিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ দুই ছেলে প্রোগ্রামার হওয়ার স্বপ্ন দেখা শুরু করল। একসঙ্গে দুই ভাইয়ের পড়াশোনা চলতে লাগল। কঠোর পরিশ্রম আর রাতদিন পড়াশোনায় ধরা দিল সাফল্য।
জসিম উদ্দিন দুলাল জানান, নাহিদুল ও মাহিদুল ছাড়াও সাজনিন সোয়াত নামের তাঁর সাত বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। সন্তানদের মধ্যে নাহিদুল সবার বড়। ওদের মা ফারিয়া সুলতানার হাতেই সন্তানদের হাতেখড়ি। তাঁর দুই ছেলে ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় বেশ মনোযোগী। মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ জেবি শিশুকাননে ওদের লেখাপড়া শুরু। এরপর ওখানকারই জিবি উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পাস করে ওরা। এসএসসির পর নাহিদুল চট্টগ্রামের সরকারি সিটি কলেজ ও মাহিদুল সরকারি হাজী মোহাম্মদ মহসিন কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়। জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি সব পর্যায়েই ওরা দুজন এ প্লাস পেয়েছে। সরকারি, বেসরকারি শিক্ষা বৃত্তিও পেয়েছে দুজন।
জসিম উদ্দিন আরও বলেন, ‘ছোটবেলায় দুই ছেলে ছিল খুব ক্রিকেটপাগল। আমি নিজেও মিরসরাই স্পোর্টিং ক্লাব নামে এলাকায় একটি ফুটবল একাডেমি চালাতাম। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় ক্রিকেট প্রতিভা দেখে ভেবেছিলাম খেলাধুলায় থিতু করব ওদের। পরে পথ বদলে পড়াশোনায় মনোযোগী হয় ওরা। এসএসসির পর থেকেই প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন দানা বাঁধে ওদের মনে। সেই লক্ষ্যেই পড়াশোনা করে ওরা এবার বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকার প্রথম দিকে স্থান পেয়েছে। দুই ভাই বন্ধুর মতো। পড়াশোনাসহ সবকিছুতেই একে অন্যের সহযোগী।’
জসিম উদ্দিন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন বলে ব্যস্ত থাকতে হয় পেশাগত কাজে। তাই ছেলেদের সাফল্যের পেছনে স্ত্রী ফারিয়া সুলতানাকে কৃতিত্ব দিতে চান তিনি।
বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় ১ হাজার ৩০৫ জনের মধ্যে ৫২তম হয়েছেন এই যমজ দুই ভাইয়ের মধ্যে বড়জন নাহিদুল ইসলাম। এমন চমকপ্রদ ফলের বিষয়ে জানতে চাইলে নাহিদুল বলেন, ‘এসএসসি পাস করার পর থেকেই কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করে প্রোগ্রামার হওয়ার ইচ্ছা ছিল আমাদের দুই ভাইয়ের। আর এ বিষয়ে পড়াশোনার জন্য বুয়েট ছিল আমাদের প্রথম পছন্দ। সেই লক্ষ্যেই একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম বর্ষ থেকেই বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করি আমরা। এইচএসসি পরীক্ষার পর থেকে দৈনিক ১৫-১৬ ঘণ্টা পড়াশোনা করেছি আমরা। বাবা-মা আর শিক্ষকেরা পড়াশোনায় সব সময় সহযোগিতা করেছেন আমাদের। এখন স্বপ্ন বুয়েটের পাট চুকিয়ে প্রোগ্রামিংয়ে উচ্চতর পড়াশোনা করা।’
বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় ১০১তম স্থান অধিকার করা মাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বুয়েটে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়ার সুযোগ পেয়ে আমাদের বড় একটি স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমরা দুই ভাই একই বিষয়ে পড়াশোনা করায় ভর্তি পরীক্ষার জন্য নানাভাবে একজন আরেকজনের সহযোগিতা পেয়েছি। এখন সামনের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বুয়েটের পড়াশোনার পর্ব শেষ করা। এরপর বিদেশের কোনো ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রোগ্রামিং বিষয়ে উচ্চশিক্ষা নিতে চাই আমরা।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ দ ল ইসল ম পর ক ষ র পর ক ষ য ম রসর ই আম দ র প রথম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি প্রোগ্রাম, জেএসসি ছাড়াও ভর্তি
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন স্কুল পরিচালিত এসএসসি প্রোগ্রামের মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞান শাখায় ২০২৬-২০২৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভর্তির যোগ্যতা জেএসসি পাস হতে হবে। জেএসসি ছাড়াদের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
ভর্তির দরকারি তারিখ—১. অনলাইনে ভর্তি এবং আবেদনের তারিখ শেষ তারিখ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৬।
২. অষ্টম শ্রেণি বা সমমানের সনদবিহীন ভর্তি-ইচ্ছুকদের ভর্তি পরীক্ষা : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৬।
৩. ওরিয়েন্টেশন ও টিউটোরিয়াল ক্লাস শুরু : ১৫ মে ২০২৬।
ভর্তির যোগ্যতা—১. জেএসসি বা জেডিসি বা অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের পরীক্ষায় পাস বা উত্তীর্ণ হতে হবে। (ভর্তির তারিখ ০২/১১/২০২৫ থেকে ৩১/০১/২০২৬)।
২. সরাসরি অনলাইন ভর্তির জন্য: osapsnew.bou.ac.bd
ভর্তির যোগ্যতা(জেএসসি ছাড়া) —১. যেসব শিক্ষার্থীর জেএসসি বা জেডিসি বা অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের সনদপত্র নেই তারাও ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন, এ ক্ষেত্রে বয়স হতে হবে ন্যূনতম ১৪ বছর (৩১/১২/২০২৫ তারিখে)।
২. এসব আবেদনকারীকে যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য বাউবি কর্তৃক নির্ধারিত ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
৩. এ জন্য ভর্তির প্রাথমিক আবেদন ফরম ফি বাবদ ৩০০ টাকা দিতে হবে।
৪. ভর্তি পরীক্ষার বিষয়, মানবণ্টন, তারিখ ও পরীক্ষা কেন্দ্র এবং প্রক্রিয়ার বিস্তারিত তথ্য বাউবি’র ওয়েবসাইট, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্র এবং স্টাডি সেন্টার থেকে পাওয়া যাবে। (অনলাইনে আবেদনের তারিখ ০২/১১/২০২৫ থেকে ৩১/০১/২০২৬)।
প্রয়োজনীয় কাগজ যা লাগবে—১. দুই কপি ছবি।
২. জেএসসি বা জেডিসি বা অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের পরীক্ষায় পাস বা উত্তীর্ণের সনদ।
৩. জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদের সত্যায়িত ফটোকপি।
ভর্তি ও অন্যান্য ফি—অনলাইন আবেদন ফি: ১০০ টাকা,
রেজিস্ট্রেশন ফি : ১০০ টাকা,
কোর্স ফি (প্রতি কোর্স ৫২৫ টাকা): ৩৬৭৫ টাকা,
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আবশ্যিক) ব্যবহারিক ফি: ১০০ টাকা,
একাডেমিক ক্যালেন্ডার ফি:৫ টাকা,
ডিজিটাল আইডি কার্ড ফি: ২০০ টাকা,
পরীক্ষা ফি (প্রতি কোর্স ৫০ টাকা) : ৩৫০ টাকা,
প্রথম বর্ষ নম্বরপত্র ফি : ৭০ টাকা,
মোট আবেদন ফি: ৪৬৯৬ টাকা।
বিজ্ঞান শাখার জন্য দুটি ব্যবহারিক কোর্সের জন্য অতিরিক্ত ২০০ টাকা জমা দিতে হবে।
দরকারি তথ্য—১. অষ্টম শ্রেণি বা সমমান পাসের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর নাম, পিতা ও মাতার নাম এবং জন্ম তারিখ ইত্যাদি প্রদত্ত সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী একই রকম হতে হবে।
২. জেএসসি বা জেডিসি পাসের ক্ষেত্রে জেএসসি বা জেডিসি সনদ অনুযায়ী হতে হবে। ২০২০ সাল কিংবা তার পরবর্তীতে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অষ্টম শ্রেণি পাশ সনদে বা প্রমাণকে বোর্ড কর্তৃক ইস্যুকৃত রেজিস্ট্রেশন নম্বর উল্লেখ থাকতে হবে। সনদবিহীনদের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ অনুযায়ী হতে হবে।
৩. তৃতীয় লিঙ্গের শিক্ষার্থীরা কোর্স ফির শতকরা ৬০ ভাগ ছাড় পাবেন।
# বিস্তারিত তথ্যের জন্য ওয়েবসাইট