‘গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ’ থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই প্রতিনিধির পদত্যাগ
Published: 27th, February 2025 GMT
নতুন ছাত্রসংগঠন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ’ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদ পাওয়া দুই প্রতিনিধি। আজ বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে তাঁরা এ ঘোষণা দেন। কমিটিতে ঢাকা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক আধিপত্যের প্রতিবাদে তাঁরা পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
পদত্যাগ করা দুই নেতা হলেন সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী সজীব এবং যুগ্ম সদস্যসচিব সালাহউদ্দিন আম্মার। তাঁরা দুজনই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ছিলেন।
গতকাল বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করে নতুন ছাত্রসংগঠন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ’। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদারকে আহ্বায়ক ও দপ্তর সম্পাদক জাহিদ আহসানকে সদস্যসচিব করে প্রাথমিকভাবে ছয় সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়। এরপর আজ বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলন করে ২০৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন সংগঠনটির আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার। এতে ৬ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে মেহেদী সজীব ও ১ নম্বর যুগ্ম সদস্যসচিব হিসেবে সালাহউদ্দিন আম্মারের নাম ঘোষণা করেন তিনি। নাম ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পদত্যাগের ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই দুই সমন্বয়ক।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে মেহেদী সজীব লেখেন, ‘আজ বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে আমার নাম বলা হয়েছে। গতকাল রাতেও এ নিয়ে আমি আমার স্ট্যান্ড ক্লিয়ার করেছি। এখনো বলছি, নতুন বন্দোবস্তের নামে ঢাকা ও ঢাবিকেন্দ্রিক নয়া ফ্যাসিবাদী মনোভাবের যে উত্থান লক্ষ করা যাচ্ছে, তার প্রতিবাদেই আমি এই প্ল্যাটফর্মে থাকতে রাজি নই।’
ইচ্ছার বাইরে তাঁকে সংগঠনে সম্পৃক্ত করার নিন্দা জানিয়ে মেহেদী সজীব আরও লেখেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্যই তিনি আজ মেহেদী সজীব হিসেবে গড়ে উঠতে পেরেছেন। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, ঢাকা ও ঢাবিকেন্দ্রিক ফ্যাসিবাদী মনোভাব থেকে যত দিন না এই দলের অংশীজনেরা বেরিয়ে আসতে পারবেন, বিকেন্দ্রীকরণের দিকে মনোনিবেশ করবেন, তত দিন পর্যন্ত তিনি তাঁদের সঙ্গে কোনো ধরনের রাজনৈতিক বোঝাপড়ায় যাবেন না। এ জন্য তিনি ওই পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে সালাহউদ্দিন আম্মার লিখেছেন, ‘আমাদের কাছে শিক্ষার্থীদের পালসটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রাবি শিক্ষার্থীরা চাচ্ছে না এই ঢাবি আধিপত্যের পক্ষে থাকতে, তাই আমরাও চাচ্ছি না। শিক্ষার্থীরা না চাইলে আমরা কিছুই নই।’
পদত্যাগের বিষয়ে সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, নতুন ছাত্রসংগঠনটি সর্বজনীন হতে পারত। কিন্তু তাঁদের বর্তমান অবস্থানের কারণে সংগঠনটির প্রতি শিক্ষার্থীরা বিশ্বাস রাখতে পারছেন না। জুলাই অভ্যুত্থানের সবচেয়ে বড় শক্তি ছিলেন শিক্ষার্থীরা। সেই শিক্ষার্থীদের অনুভূতির বাইরে গিয়ে তাঁর রাজনীতি করা সম্ভব নয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পদত য গ র স গঠনট স গঠন সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত
ভোলায় গ্যাস ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবিতে চলমান ছয় দফা আন্দোলন স্থগিত করেছে ‘আমরা ভোলাবাসী’। সরকারি আশ্বাসের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন নেতারা।
সংগঠনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও আমরা ভোলাবাসীর জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সদস্য রাইসুল আলম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. এনামুল হক, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মোতাসিন বিল্লাহ, ভোলা জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী, ভোলা আলিয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম, ইসলামী আন্দোলনের ভোলা উত্তর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তরিকুল ইসলাম, ভোলা সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. কামাল হোসেন ও আমরা ভোলাবাসীর সদস্যসচিব মীর মোশাররফ হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভোলার গ্যাস স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের দাবিসহ ছয় দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে দাবি আদায়ে অগ্রগতি হয়েছে।
আমরা ভোলাবাসীর দাবির মধ্যে রয়েছে, ভোলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন, বিদ্যমান ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার সুবিধা নিশ্চিত করা, ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণ, ঘরে ঘরে গ্যাস সরবরাহ, গ্যাসভিত্তিক শিল্পকারখানা স্থাপন ও নদীভাঙন প্রতিরোধ।
সংগঠনটি জানায়, আন্দোলনের আগে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে মাত্র আট চিকিৎসক কর্মরত ছিলেন, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ জন। আরও চিকিৎসক, নার্স ও যন্ত্রপাতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। মেডিকেল কলেজ স্থাপনের বিষয়ে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে নতুন মেডিকেল কলেজ হলে, সেটি ভোলায় হবে। ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রেও ফিজিবিলিটি স্টাডি ও নকশা সম্পন্ন হয়েছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সার কারখানা ও ইপিজেড স্থাপনের জন্য জমি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানিয়েছেন নেতারা। গ্যাস–সংযোগের বিষয়ে জানানো হয়, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানিকে ডিমান্ড নোট জমা দেওয়া ২ হাজার ১৪৫ গ্রাহককে গ্যাস–সংযোগ দেওয়া হবে এবং ন্যায্যমূল্যে ২০ হাজার সিলিন্ডার বিতরণ করা হবে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আবার কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।