ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করে আখেরে ভালো হয় না: সিইসি
Published: 2nd, March 2025 GMT
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, ‘ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করে, ভোট সন্ত্রাস করে আপাতদৃষ্টিতে জেতা যায়। কিন্তু আখেরে দেশের জন্য, দলের জন্যও ভালো হয় না। শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা দুনিয়ায় এ রকম ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়।’
আজ রোববার দুপুরে নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সিইসি এসব কথা বলেন। জাতীয় ভোটার দিবস উপলক্ষে নির্বাচন কমিশন এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভায় নির্বাচনে জয়ী হতে ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং’ ও ভোট সন্ত্রাসের চেষ্টা বা উদ্যোগ না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সিইসি।
মানুষ এতদিন ভোট দিতে পারেনি বলেন সিইসি। এখন ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ এসে গেছে বলেন তিনি। সিইসি বলেন, ‘আমি ভাবি.
সিইসি মনে করেন যদি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে এভাবে লিখিত নেওয়া হয় তাহলে সেটা দলগুলোর ওপর চাপ হিসেবে কাজ করবে। নির্বাচন কমিশনের কাজও সহজ হয়ে যাবে।
মানুষ নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে বলেন সিইসি। তিনি বলেন, এ স্বপ্ন বাস্তবায়ন না হলে জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। ভোটকেন্দ্রে ভোট দেওয়া শুধু এখন আর অধিকার নয় এটা একটা দায়িত্বও বলেন তিনি।
নাসির উদ্দিন বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো যার যার দৃষ্টিকোণ থেকে বক্তব্য দেবে। এটা ভিন্ন ভিন্ন হবে এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। রাজনৈতিক দলগুলো যখন বিপরীতমুখী বক্তব্য দেয় তখন তিনি আশাহত হন না। তিনি বিশ্বাস করেন দলগুলো একপর্যায়ে একমত হবে।’
খোলা মাঠে ভোট চান তাহমিদা
আরেক নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদ স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের জন্য বদ্ধ ঘরের পরিবর্তে খোলা মাঠে ভোটের আয়োজন করার কথা বলেন। তাহমিদা আহমদ বলেন, ‘ট্রান্সপারেন্ট (স্বচ্ছ) কথাটা আমার খুব মনে ধরেছে। আমিও চাই, আমাদের ভোটটা হোক ট্রান্সপারেন্ট। সেটা কীভাবে ট্রান্সপারেন্ট হবে যদি আমরা একটা বদ্ধ ঘরে সেই ভোট অনুষ্ঠান করি..? তাই আমি চাই, আমাদের নির্বাচনটা হোক খোলা মাঠে।’ তিনি বলেন, ‘সবাই সহযোগিতা করলে তিনি এই সংস্কার করতে চান, খোলা মাঠে নির্বাচন করতে চান।’
অনুষ্ঠানেই তাঁর এই বক্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে আরেক নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, ‘এটি বাস্তবসম্মত কি না তা ভাবতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘একটি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের শাসক নির্বাচন করে। ভোটারদের মতামত তখনই প্রতিফলন হবে যদি ভোটার সঠিকভাবে ভোট দিতে পারেন।’
কেউ দায় এড়াতে পারে না উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার মো.আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, তাঁরা কঠিন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁরা ভাঙবেন কিন্তু মচকাবেন না।
৩০ জুনের মধ্যে আরেকটি ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসি সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ।
এর আগে জাতীয় ভোটার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত শোভাযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন জানান এখন দেশে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৩৭ লাখ ৩২ হাজার।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট সময়কালে ফ্যাসিবাদী শক্তি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে, এসবির প্রতিবেদন
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কর্মসূচি পালনকালে ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইন-অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে সারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)।
গতকাল সোমবার এসবির এক প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনটি পুলিশের সব বিভাগকে পাঠিয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছে এসবি। এসবির একটি সূত্র প্রথম আলোকে এই প্রতিবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সামাজিক সংগঠনগুলো ১ জুলাই থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। এই ধারাবাহিকতায় ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত কর্মসূচি পালনের সময়কাল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে বিতাড়িত ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইন-অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে দেশব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টি, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির কর্মসূচিতে বাধা প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা চালাতে পারে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ও জানমাল রক্ষায় পুলিশের বিভিন্ন বিভাগকে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে এসবি।
নির্দেশনাগুলো হলো ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা। ৮ আগস্ট পর্যন্ত নিয়মিত সন্দেহজনক ব্যক্তিসহ মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও অন্যান্য যানবাহন তল্লাশি করা। বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশন ও বিমানবন্দরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল অভিযান পরিচালনা করা। মোবাইল প্যাট্রোল জোরদার করা। গুজব রোধে সাইবার পেট্রোলিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখাসহ গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা।
এ ছাড়া কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকলে তা তাৎক্ষণিকভাবে এসবিকে অবহিত করার কথাও বলা হয়েছে।