প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, ‘ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করে, ভোট সন্ত্রাস করে আপাতদৃষ্টিতে জেতা যায়। কিন্তু আখেরে দেশের জন্য, দলের জন্যও ভালো হয় না। শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা দুনিয়ায় এ রকম ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়।’

আজ রোববার দুপুরে নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সিইসি এসব কথা বলেন। জাতীয় ভোটার দিবস উপলক্ষে নির্বাচন কমিশন এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভায় নির্বাচনে জয়ী হতে ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং’ ও ভোট সন্ত্রাসের চেষ্টা বা উদ্যোগ না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সিইসি।

মানুষ এতদিন  ভোট দিতে পারেনি বলেন সিইসি। এখন ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ এসে গেছে বলেন তিনি। সিইসি বলেন,  ‘আমি ভাবি.

.. যঐকমত্যমত কমিশন হয়েছে, উনারা যদি একটা কাজ করতেন যে যখন দলগুলোকে ডাকেন, তাদের যদি জিজ্ঞেস করত, আপনারা কি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চান? যদি চায় তাহলে তাদের কাছ থেকে সই নেওয়া উচিত যে নির্বাচন আচরণবিধি মানবেন, আপনার দলের প্রার্থী যদি কোনো গোলমাল করে তাহলে দলীয়ভাবে অ্যাকশন নেবেন এবং সুন্দর একটা নির্বাচনের জন্য সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করবেন।’

সিইসি মনে করেন যদি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে এভাবে লিখিত নেওয়া হয় তাহলে সেটা দলগুলোর ওপর চাপ হিসেবে কাজ করবে। নির্বাচন কমিশনের কাজও সহজ হয়ে যাবে।

মানুষ নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে বলেন সিইসি। তিনি বলেন, এ স্বপ্ন বাস্তবায়ন না হলে জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। ভোটকেন্দ্রে ভোট দেওয়া শুধু এখন আর অধিকার নয় এটা একটা দায়িত্বও বলেন তিনি।

নাসির উদ্দিন বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো যার যার দৃষ্টিকোণ থেকে বক্তব্য দেবে। এটা ভিন্ন ভিন্ন হবে এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। রাজনৈতিক দলগুলো যখন বিপরীতমুখী বক্তব্য দেয় তখন তিনি আশাহত হন না। তিনি বিশ্বাস করেন দলগুলো একপর্যায়ে একমত হবে।’

খোলা মাঠে ভোট চান তাহমিদা

আরেক নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদ স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের জন্য বদ্ধ ঘরের পরিবর্তে খোলা মাঠে ভোটের আয়োজন করার কথা বলেন।  তাহমিদা আহমদ বলেন, ‘ট্রান্সপারেন্ট (স্বচ্ছ) কথাটা আমার খুব মনে ধরেছে। আমিও চাই, আমাদের ভোটটা হোক ট্রান্সপারেন্ট। সেটা কীভাবে ট্রান্সপারেন্ট হবে যদি আমরা একটা বদ্ধ ঘরে সেই ভোট অনুষ্ঠান করি..? তাই আমি চাই, আমাদের নির্বাচনটা হোক খোলা মাঠে।’ তিনি বলেন, ‘সবাই সহযোগিতা করলে তিনি এই সংস্কার করতে চান, খোলা মাঠে নির্বাচন করতে চান।’

অনুষ্ঠানেই তাঁর এই বক্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে আরেক নির্বাচন কমিশনার  আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, ‘এটি বাস্তবসম্মত কি না তা ভাবতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘একটি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের শাসক নির্বাচন করে। ভোটারদের মতামত তখনই প্রতিফলন হবে যদি ভোটার সঠিকভাবে ভোট দিতে পারেন।’

কেউ দায় এড়াতে পারে না উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার মো.আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, তাঁরা কঠিন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁরা ভাঙবেন কিন্তু মচকাবেন না।

৩০ জুনের মধ্যে আরেকটি ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসি সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ।

এর আগে জাতীয় ভোটার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত শোভাযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার  (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন জানান এখন দেশে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৩৭ লাখ ৩২ হাজার।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য দলগ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সমবায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল দেশ গড়া সম্ভব 

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “সমবায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে একটি আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।”

তিনি বলেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সমবায় খাতকে আধুনিক ও গতিশীল করতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমি বিশ্বাস করি, কৃষি, মৎস্য, পশুপালন, সঞ্চয় ও ঋণদান এবং কুটিরশিল্প প্রভৃতি ক্ষেত্রে সমবায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে একটি আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।”

আরো পড়ুন:

মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী ও কার্যকর করতে নতুন অধ্যাদেশ অনুমোদন

নির্বাচন বানচালের যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা হবে: প্রধান উপদেষ্টা

শনিবার (১ নভেম্বর) ‘৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “সাম্য ও সমতায়, দেশ গড়বে সমবায়’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রতি বছরের মতো এবারো ১ নভেম্বর, ২০২৫ যথাযোগ্য মর্যাদায় দেশব্যাপী ‘৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস’ উদ্যাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি সকল সমবায়ী ও দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।”

তিনি বলেন, “দেশ ও জনগণের উন্নয়নে গৃহীত যেকোনো কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নে সামাজিক সম্পৃক্ততা নিশ্চিত অপরিহার্য। সমবায়ের অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এ কাজ আমরা অনায়াসে করতে পারি। সমবায় সমিতিগুলো শুধু আর্থিক প্রতিষ্ঠানই নয় বরং সমাজের নানাবিধ সমস্যা দূর করতে বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে সমবায় আন্দোলনের বিকল্প নেই। অন্তর্বর্তী সরকার একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়ভিত্তিক ও টেকসই সমাজ প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে যেতে চায়। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সমবায়ের ভূমিকা অপরিসীম।”

তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আসুন, সমবায়ের চেতনাকে ধারণ করে সাম্য ও সমতায় আমরা সকলে মিলে গড়ে তুলি নতুন বাংলাদেশ।”

প্রধান উপদেষ্টা ‘৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস, ২০২৫’ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। খবর বাসসের। 

ঢাকা/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বর্ণিল আয়োজনে ১৯তম সিকৃবি দিবস উদযাপন
  • জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির 
  • মিথ্যা প্রচার দিয়ে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রক্রিয়া চলছে: মির্জা ফখরুল
  • বাংলাদেশের শত্রুতারা আবার মাথা মাথাচারা দিয়ে উঠতে শুরু করেছে: মির্জা ফখরুল
  • বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড পেলেন রাইজিংবিডির রুমন চক্রবর্তী
  • ৭ নভেম্বর উপলক্ষে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা
  • ইসমাইল হোসেন (মুরুব্বী) এর মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া 
  • যুবদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে সিদ্ধিরগঞ্জে বর্ণাঢ্য র‌্যালি
  • সরকারে এলে ৫০ লাখ নারীকে ফ্যামিলি কার্ড দিবে বিএনপি : সজল
  • সমবায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল দেশ গড়া সম্ভব