যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন দেশটির ফেডারেল সরকারের কর্মীদের কাছে তাদের কাজের হিসাব চেয়ে আবারো ই-মেইল পাঠিয়েছে। গতবারের মতো এই মেইলেও এক সপ্তাহের কাজ ও অর্জনের সারসংক্ষেপ জানিয়ে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রবিবার (২ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন সরকারের মানবসম্পদ বিভাগ, মার্কিন কর্মী ব্যবস্থাপনা অফিসের (ওপিএম)  পক্ষ থেকে বিভিন্ন সংস্থায় পাঠানো এসব ই-মেইলে কর্মীদের গত সপ্তাহে তাদের অর্জন করা পাঁচটি কাজের তালিকা দিতে বলা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা বন্ধ করতে পারেন ট্রাম্প

ট্রাম্পের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা
জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউজ থেকে বের হয়ে যেতে বলা হয়েছিল

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই ফেডারেল সরকারের ব্যয় কমানো এবং কর্মী ছাঁটাইয়ের জন্য ইলন মাস্কের নেতৃত্বে নতুন দপ্তর ‘ডিওজিই’ চালু করেন ট্রাম্প।

মাস্কের এই দপ্তর বিগত সপ্তাহগুলোতে আইআরএস, এফএএ, পেন্টাগনসহ আরো কিছু সংস্থার হাজার হাজার কর্মী ছাঁচাই করেছে। 

শনিবার (১ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ ইলন মাস্ক লিখেছেন, “এই মেইলের জবাব দেওয়া নির্বাহী বিভাগে কর্মরত সবার জন্য বাধ্যতামূলক। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তো সেটা আগেই স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন। মেইল প্রাপ্ত কেউ যদি কোনো গোপনীয় বা সংবেদনশীল কাজে যুক্ত থাকে, তাহলে অন্তত সেটি জানিয়ে হলেও মেইলের জবাব দিতে হবে।”

গত সপ্তাহেও মাস্ক একই ধরনের কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। সেবার ইমেইলের জবাব দিতে ব্যর্থ হলে চাকরিচ্যুতির হুমকি দিয়েছিলেন। তবে পররাষ্ট্র ও বিচার বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের চেইন অব কমান্ড ভেঙে কোনও পদক্ষেপ নিতে নিষেধ করেন।

এরপর, ওই মেইলের জবাব দেওয়া সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাধীন বলে জানায় ওপিএম।

তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমর্থন পেয়ে কর্মীদের মেইলের মাধ্যমে চাপে রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মাস্ক। কর্মীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এটা প্রয়োজন বলে দাবি করেছেন তিনি। এবারের দফার মেইলে চাকরি চ্যুতির হুমকি নেই। তবে প্রতি সপ্তাহের শুরুতে একই ধরনের জবাব তারা আশা করছেন বলে মেইলে জানানো হয়েছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, এবারের দফার ই-মেইল অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগ, জাতীয় সমুদ্র ও পরিবেশ প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মীদের পাঠানো হয়েছে।

ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা, শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাসহ একাধিক সমালোচক বলেছেন, এই ব্যাপক কর্মী ছাঁটাই কর্মসূচি চালিয়ে গেলে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কাজ চালিয়ে নেওয়ায় কঠিন হয়ে পড়বে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর ম দ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

‘মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তির সাধক ছিলেন লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী’

লেখক, প্রাবন্ধিক ও চিন্তাবিদ মোতাহের হোসেন চৌধুরী সারা জীবন মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার চর্চা করে গেছেন। প্রকৃত মানবতাবাদী দার্শনিক ছিলেন তিনি। এ কারণে তাঁর লেখা, সৃষ্টিকর্ম ও চিন্তা এখনকার মানুষের জন্যও সমান প্রাসঙ্গিক।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরীর ৬৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় বক্তারা এ কথা বলেন। লেখকের নিজ জেলা লক্ষ্মীপুরে তাঁকে নিয়ে প্রথম স্মরণসভা ছিল এটি।

রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ। প্রধান অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার। বক্তব্য দেন প্রবন্ধিক, গবেষক ও শিক্ষক ড. কুদরত-ই-হুদা, যুগান্তরের সাহিত্য সম্পাদক কবি জুননু রাইন, লেখকপুত্র ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন, লক্ষ্মীপুর সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক গাজী গিয়াস উদ্দিন।

জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন বাংলার একজন উজ্জ্বল প্রাবন্ধিক, মুক্তচিন্তার আলোকবর্তিকা। তাঁর লেখায় যেমন মানবতার বোধ রয়েছে, তেমনি যুক্তি ও প্রগতিশীল চিন্তার শক্ত ভিত্তি রয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে তাঁর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

বাবার স্মৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন বলেন, ‘আমরা লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। অথচ দুঃখজনক হলো, এত দিন বাবাকে নিয়ে এ জেলায় আলোচনা বা স্মরণসভা হয়নি। তাঁর মতো মহান প্রাবন্ধিকের জীবন ও দর্শন নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা জরুরি।’

জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের গবেষক ড. কুদরত-ই-হুদা বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন চিন্তার দিক থেকে ব্যতিক্রমধর্মী এক ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন মুক্তবুদ্ধির সাধক, মানবতাবাদী দার্শনিক ও সাহিত্যপ্রেমী। তাঁর প্রবন্ধ আজও পাঠককে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে চলার প্রেরণা দেয়।

সাহিত্য, দর্শন ও সমাজচিন্তায় মোতাহের হোসেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বলে জানান কবি জুননু রাইন। তিনি বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরীর লেখনী আজও প্রজন্মকে চিন্তার খোরাক জোগান।

মোতাহের হোসেন চৌধুরী ১ এপ্রিল ১৯০৩ সালে তৎকালীন নোয়াখালী জেলা এবং বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল, আবদুল কাদিরের সঙ্গে যৌথভাবে বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন গড়ে তোলেন তিনি। বের করেন ‘শিখা’ নামের পত্রিকা। তাঁর রচিত প্রবন্ধ সংকলন ‘সংস্কৃতি কথা’ পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছে। ১৯৫৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ