শিশুদের অতিরিক্ত লালা নিঃসরণ কি খারাপ? কারণ ও সমাধান কী?
Published: 2nd, March 2025 GMT
লালা, থুতু বা স্যালাইভা মুখের ভেতর নিঃসৃত অতিজরুরি তরল, যা মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অন্যতম ভূমিকা রাখে। তবে কিছু শিশুর ক্ষেত্রে এ লালা নিঃসরণের মাত্রা বেশি দেখা যায়। কথা বলার সময়, ঘুমের মধ্যে বা এমনিতেই তাদের লালা গড়িয়ে পড়ে। এটা কি খারাপ? সাধারণত বয়স দুই বছর হওয়ার পরও লালা পড়াটা অস্বাভাবিক হতে পারে, প্রয়োজন পড়তে পারে চিকিৎসকের পরামর্শের।
সম্ভাব্য কারণশিশুদের সাধারণত ছয় মাস বয়সের পর দাঁত ওঠা শুরু হয়। তখন তারা হাতের কাছে যা পায়, তা–ই কামড়াতে চায়। এ সময় তারা শূলশূল বা অস্বস্তি অনুভব করে, জ্বর আসতে পারে। হয়ে থাকে অতিরিক্ত লালা নিঃসরণও।
শিশুরা সহজেই ঠান্ডা–সর্দিতে আক্রান্ত হয়। এ সময় নাক দিয়ে পানি পড়ে, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, অ্যালার্জি হতে পারে। এসব অবস্থায় অতিরিক্ত লালা নিঃসরণ হতে পারে।
স্নায়ুর সমস্যা বিশেষ করে ফেসিয়াল নার্ভ, সেরিব্রাল পালসি, ট্রাইজেমিনাল নার্ভের সমস্যায় এমন হতে পারে।
মুখের মধ্যে কোনো ক্ষত, সাইনাস বা টনসিলে প্রদাহসহ কিছু সংক্রমণ থেকে অতিরিক্ত লালা পড়তে পারে।
লোভনীয় বা টকজাতীয় খাবারেও লালা বেশি পড়ে।
জিবের অস্বাভাবিকতা, ঠোঁট বন্ধ না হওয়া, ঠোঁট ও তালুকাটা, বদভ্যাস, কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, দাঁতের নতুন ফিলিং করানো, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু, এলোমেলো ও ফাঁকা দাঁতের কারণেও লালা পড়ে বেশি।
আরও পড়ুনঘুমের মধ্যে দাঁত কিড়মিড় করার কারণ কী১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪কী হতে পারেসামাজিকভাবে বিব্রত হওয়া, মানসিক চাপ অনুভব করা, সহপাঠী বা বন্ধুদের দ্বারা এড়িয়ে চলার শিকার হওয়া।
ঠোঁটের চারদিকে বিশেষ করে দুই কোনায় ভেজা থাকায় নানা প্রদাহ, সংক্রমণ হতে পারে।
মুখ ও কাপড়ে দুর্গন্ধ ও দাগ লেগে থাকা।
কথা বলা, হাসি, উচ্চারণ করে পড়ার সময় লালা বেরিয়ে আসা।
খাবার গ্রহণকালে লালা বেরিয়ে আসা, গিলতে সমস্যা হওয়া ও অপুষ্টি।
লালা অনেক সময় শ্বাসতন্ত্রে ঢুকে কাশি হয়, ইনফেকশন থেকে নিউমোনিয়াও হতে পারে।
গলার কাছে লালা জমে শ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া।
আরও পড়ুননাক ডাকা বন্ধের ৯ উপায়০১ জুলাই ২০১৪করণীয়ডেন্টাল চিকিৎসকের পরামর্শে সঠিক কারণ খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।
অতিরিক্ত লালা নিঃসরণ হয় এমন খাবার থেকে বিরত থাকা।
যে পজিশনে থাকলে বেশি লালা নিঃসৃত হয়, শিশুকে সেভাবে না রেখে মাথা ও ঘাড় ঠিকভাবে রাখার অভ্যাস করানো।
মুখের পরিচর্যায় কোনো অবহেলা নয়। নরম টুথব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজা ও ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করা।
চুষনি, আঙুল চোষা, অত্যধিক টিভি/ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
ডিহাইড্রেশন রোধে অল্প অল্প করে পানি পান, আদা চিবানো, পেঁপের জুস পান করানো।
এ ছাড়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতামতে স্পিচ থেরাপি ও ক্ষেত্রবিশেষে মেডিকেশন দরকার হতে পারে।
ডা.
মো. আসাফুজ্জোহা রাজ, রাজ ডেন্টাল সেন্টার, কলাবাগান, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’