লালা, থুতু বা স্যালাইভা মুখের ভেতর নিঃসৃত অতিজরুরি তরল, যা মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অন্যতম ভূমিকা রাখে। তবে কিছু শিশুর ক্ষেত্রে এ লালা নিঃসরণের মাত্রা বেশি দেখা যায়। কথা বলার সময়, ঘুমের মধ্যে বা এমনিতেই তাদের লালা গড়িয়ে পড়ে। এটা কি খারাপ? সাধারণত বয়স দুই বছর হওয়ার পরও লালা পড়াটা অস্বাভাবিক হতে পারে, প্রয়োজন পড়তে পারে চিকিৎসকের পরামর্শের।

সম্ভাব্য কারণ

শিশুদের সাধারণত ছয় মাস বয়সের পর দাঁত ওঠা শুরু হয়। তখন তারা হাতের কাছে যা পায়, তা–ই কামড়াতে চায়। এ সময় তারা শূলশূল বা অস্বস্তি অনুভব করে, জ্বর আসতে পারে। হয়ে থাকে অতিরিক্ত লালা নিঃসরণও।

শিশুরা সহজেই ঠান্ডা–সর্দিতে আক্রান্ত হয়। এ সময় নাক দিয়ে পানি পড়ে, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, অ্যালার্জি হতে পারে। এসব অবস্থায় অতিরিক্ত লালা নিঃসরণ হতে পারে।

স্নায়ুর সমস্যা বিশেষ করে ফেসিয়াল নার্ভ, সেরিব্রাল পালসি, ট্রাইজেমিনাল নার্ভের সমস্যায় এমন হতে পারে।

মুখের মধ্যে কোনো ক্ষত, সাইনাস বা টনসিলে প্রদাহসহ কিছু সংক্রমণ থেকে অতিরিক্ত লালা পড়তে পারে।

লোভনীয় বা টকজাতীয় খাবারেও লালা বেশি পড়ে।

জিবের অস্বাভাবিকতা, ঠোঁট বন্ধ না হওয়া, ঠোঁট ও তালুকাটা, বদভ্যাস, কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, দাঁতের নতুন ফিলিং করানো, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু, এলোমেলো ও ফাঁকা দাঁতের কারণেও লালা পড়ে বেশি।

আরও পড়ুনঘুমের মধ্যে দাঁত কিড়মিড় করার কারণ কী১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪কী হতে পারে

সামাজিকভাবে বিব্রত হওয়া, মানসিক চাপ অনুভব করা, সহপাঠী বা বন্ধুদের দ্বারা এড়িয়ে চলার শিকার হওয়া।

ঠোঁটের চারদিকে বিশেষ করে দুই কোনায় ভেজা থাকায় নানা প্রদাহ, সংক্রমণ হতে পারে।

মুখ ও কাপড়ে দুর্গন্ধ ও দাগ লেগে থাকা।

কথা বলা, হাসি, উচ্চারণ করে পড়ার সময় লালা বেরিয়ে আসা।

খাবার গ্রহণকালে লালা বেরিয়ে আসা, গিলতে সমস্যা হওয়া ও অপুষ্টি।

লালা অনেক সময় শ্বাসতন্ত্রে ঢুকে কাশি হয়, ইনফেকশন থেকে নিউমোনিয়াও হতে পারে।

গলার কাছে লালা জমে শ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া।

আরও পড়ুননাক ডাকা বন্ধের ৯ উপায়০১ জুলাই ২০১৪করণীয়

ডেন্টাল চিকিৎসকের পরামর্শে সঠিক কারণ খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।

অতিরিক্ত লালা নিঃসরণ হয় এমন খাবার থেকে বিরত থাকা।

যে পজিশনে থাকলে বেশি লালা নিঃসৃত হয়, শিশুকে সেভাবে না রেখে মাথা ও ঘাড় ঠিকভাবে রাখার অভ্যাস করানো।

মুখের পরিচর্যায় কোনো অবহেলা নয়। নরম টুথব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজা ও ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করা।

চুষনি, আঙুল চোষা, অত্যধিক টিভি/ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

ডিহাইড্রেশন রোধে অল্প অল্প করে পানি পান, আদা চিবানো, পেঁপের জুস পান করানো।

এ ছাড়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতামতে স্পিচ থেরাপি ও ক্ষেত্রবিশেষে মেডিকেশন দরকার হতে পারে।

ডা.

মো. আসাফুজ্জোহা রাজ, রাজ ডেন্টাল সেন্টার, কলাবাগান, ঢাকা

আরও পড়ুনঘুমের সময় মুখে লালা জমে, সমাধান কী?০১ জানুয়ারি ২০২২

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিলোমিটারজুটে যানজট

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নিমশার থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটারজুড়ে যানজট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকেরা। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কাভার্ড ভ্যান উল্টে যাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এ যানজট দেখা দেয়। 

হাইওয়ে পুলিশ  জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে মহাসড়কে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নূরীতলা এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ফেনী থেকে রেকার এনে কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধারের কাজ শুরু করে পুলিশ। 

সকাল সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে। 

ঢাকাগামী রয়েল পরিবহনের চালক রমিজ উদ্দিন বলেন, সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা করে বুড়িচংয়ের নিমশার বাজারে যানজটে এক ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। ৫ মিনিট গাড়ি চললে ২০ মিনিট বসে থাকতে হয়। এভাবে ১০টা ৪০ মিনিটে চান্দিনায় পৌঁছেছি। এ সময়ে ঢাকার কাছাকাছি থাকার কথা ছিল। 

নিমশার বাজারে আটকে থাকা প্রাইভেট কারের যাত্রী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ভোর থেকে যানজট অথচ সড়কে হাইওয়ে পুলিশ দেখছি না। 

ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন বলেন, মহাসড়কের নূরীতলা এলাকায় উল্টে কাভার্ড ভ্যানটি আড়াআড়িভাবে পড়ে ছিল। পরে ঢাকামুখী লেনের বেশ কিছু গাড়ি উল্টো পথে ঢোকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফেনী থেকে ক্রেন এনে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। 

হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিওনের পুলিশ সুপার অতিরিক্ত ডিআইজি মো. খাইরুল আলম সমকালকে বলেন, দুর্ঘটনার কারণেই যানজট দেখা দিয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ